নিজস্ব প্রতিবেদক :
সুপেয় পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে দূষিত পানি রোধে ওয়াসা কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে বা নিচ্ছে এবং এ বিষয়ে তাদের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা কী তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। ওয়াসার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আগামী ২ নভেম্বরের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে। ওই দিন পরবর্তী শুনানিও হবে বলে জাগো নিউজকে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী তানভীর আহমেদ। গতকাল সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে গতকাল রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ। তিনি জানান, সুপেয় পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে দূষিত পানি রোধে ওয়াসা কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে বা নিচ্ছে, তাদের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা কী এমন আর্জি জানানোর পরে এ বিষয়ে ওয়াসার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, আমরা আগামী ২ নভেম্বর হাইকোর্টে জানাবো। তাই ওই দিন পরবর্তী শুনানির জন্য দিন রেখেছেন আদালত। আইনজীবী বলেন, এর আগে ওয়াসার পানি পরীক্ষা নিয়ে দুটি প্রতিবেদনের ওপর বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামত ২০১৯ সালের ৪ ডিসেম্বর বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে দাখিল করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে গত দুই বছর রিটের শুনানি হয়নি। তানভীর আহেমদ জানান, পরে মামলাটি শুনানির জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু করোনার কারণে সেটা আর হয়নি। দীর্ঘদিন পরে গতকাল শুনানির জন্য মামলাটি কার্যতালিকায় ওঠে। এরপর আমরা আদালতে বলেছি, দুই বছর ধরে তারা কি করেছে, দূষিত পানি রোধে ওয়াসা কী ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে-নিচ্ছে এবং তাদের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা কী? এসব বিষয় উপস্থাপনের পর ওয়াসা জানিয়েছে, তারা আগামী ২ নভেম্বরের মধ্যে বিষয়গুলো আদালতকে জানাবে। এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর হাইকোর্ট ঢাকা ওয়াসার পানি পরীক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠানের নাম-উল্লেখ করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করার আদেশ দেন। পরে ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। কমিটির সদস্যরা হলেন- আইসিডিডিআর,বির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী মনিরুল আলম, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এ বি এম বদরুজ্জামান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান সাবিতা রিজওয়ানা রহমান। পানি পরীক্ষায় আদালতের নির্দেশে গঠিত চার সদস্যের কমিটির প্রতিবেদন ২০১৯ সালের ৭ জুলাই আদালতে উপস্থাপন করা হয়। সেই প্রতিবেদনে ঢাকা ওয়াসার ১০টি বিতরণ জোনের ৩৪টি নমুনার মধ্যে আটটি পানির নমুনায় ব্যাকটেরিয়াজনিত দূষণ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। ওই সময় ওয়াসার আইনজীবী ব্যারিস্টার এএম মাসুম বলেছিলেন, সমন্বিত প্রতিবেদন আসার পর সেখানে জোন-১ ও জোন-৪- একটি মিরপুর অপরটি পাতলা খান লেনে পাওয়া ব্যাকটেরিয়া মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বলে উল্লেখ করেছেন। সেই ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া হলো ফেকেল ও ই-কোলাই। ওই প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুসারে আমরা ওয়ান বাই ওয়ান কারেক্টিফিকেশনে গিয়েছি।