০৭:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫ | ই-পেপার

সড়কে মা-বাবা হারানো শিশুটিকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন প্রসূতিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় মা, বাবা ও বোন হারানো নবজাতককে পালাবদল করে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন ওই হাসপাতালে সন্তান প্রসব করা প্রসূতি মায়েরা। শিশুটি মহানগরীর চরপাড়া লাবিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লাবিব হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজাহান মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ট্রাকচাপায় মা, বাবা ও বোন হারানো নবজাতক আমার হাসপাতালে ভর্তি আছে। হাসপাতালের প্রসূতি মায়েরা বুকের দুধ পান করাচ্ছেন। এতে বাচ্চাটির বুকের দুধের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। আশা করছি বাচ্চাটি ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে। একই হাসপাতালে পাঁচদিন আগে কন্যাসন্তান প্রসব করেন সদর উপজেলার দাপুনিয়ার কানাপাড়ার আলমাসের স্ত্রী নাছিমা বেগম। তিনি বলেন, শুনেছি ওই শিশুটির জন্মের সময় সড়ক দুর্ঘটনায় মা, বাবা ও বোন মারা গেছেন। আমি একজন মা হিসেবে আমার বুকের দুধ দিয়েছি। লাবিব হাসপাতালের সেবিকা (নার্স) সুরাইয়া ইয়াসমিন বলেন, গত শনিবার রাতে এক প্রসূতি তার বুকের দুধ দিয়েছিলেন। তার ছুটি হয়ে গেছে। পরে নাছিমা বেগম নামে আরেক প্রসূতি তিনবার দুধ দিয়েছেন। তারও ছুটি হয়ে যাবে। তবে হাসপাতালে আরও প্রসূতি আছেন। তারা স্বেচ্ছায় ওই শিশুকে বুকের দুধ দেবেন বলেও জানান তিনি। গত শনিবার দুপুরের পর উপজেলার রাইমনি গ্রামের ফকির বাড়ির মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪০) তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রতœা বেগম (৩০) ও মেয়ে সানজিদাকে (৬) নিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করাতে ত্রিশালে যান। পৌর শহরের খান ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় ময়মনসিংহগামী একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই জাহাঙ্গীর আলম ও স্ত্রী রতœা বেগম মারা যান এবং মেয়ে সানজিদা আক্তার গুরুতর আহত হয়। এ সময় ট্রাকচাপায় রতœা বেগমের পেট ফেটে কন্যাশিশুর জন্ম হয়। পরে আহত সানজিদা ও নবজাতককে নিয়ে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সানজিদাকে মৃত ঘোষণা করে নবজাতকটি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। তবে অতিরিক্ত যানজটের কারণে নবজাতককে চুরখাই কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে চিকিৎসা দিয়ে ময়মনসিংহ মহনগরীর চরপাড়া এলাকায় লাবিব হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ট্যাগস :

রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা বন্ধ হলে চাকরি হারাবেন বাংলাদেশি শিক্ষকরাও

সড়কে মা-বাবা হারানো শিশুটিকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন প্রসূতিরা

আপডেট সময়ঃ ০৮:৩১:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ জুলাই ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় মা, বাবা ও বোন হারানো নবজাতককে পালাবদল করে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন ওই হাসপাতালে সন্তান প্রসব করা প্রসূতি মায়েরা। শিশুটি মহানগরীর চরপাড়া লাবিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লাবিব হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজাহান মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ট্রাকচাপায় মা, বাবা ও বোন হারানো নবজাতক আমার হাসপাতালে ভর্তি আছে। হাসপাতালের প্রসূতি মায়েরা বুকের দুধ পান করাচ্ছেন। এতে বাচ্চাটির বুকের দুধের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। আশা করছি বাচ্চাটি ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে। একই হাসপাতালে পাঁচদিন আগে কন্যাসন্তান প্রসব করেন সদর উপজেলার দাপুনিয়ার কানাপাড়ার আলমাসের স্ত্রী নাছিমা বেগম। তিনি বলেন, শুনেছি ওই শিশুটির জন্মের সময় সড়ক দুর্ঘটনায় মা, বাবা ও বোন মারা গেছেন। আমি একজন মা হিসেবে আমার বুকের দুধ দিয়েছি। লাবিব হাসপাতালের সেবিকা (নার্স) সুরাইয়া ইয়াসমিন বলেন, গত শনিবার রাতে এক প্রসূতি তার বুকের দুধ দিয়েছিলেন। তার ছুটি হয়ে গেছে। পরে নাছিমা বেগম নামে আরেক প্রসূতি তিনবার দুধ দিয়েছেন। তারও ছুটি হয়ে যাবে। তবে হাসপাতালে আরও প্রসূতি আছেন। তারা স্বেচ্ছায় ওই শিশুকে বুকের দুধ দেবেন বলেও জানান তিনি। গত শনিবার দুপুরের পর উপজেলার রাইমনি গ্রামের ফকির বাড়ির মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪০) তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রতœা বেগম (৩০) ও মেয়ে সানজিদাকে (৬) নিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করাতে ত্রিশালে যান। পৌর শহরের খান ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় ময়মনসিংহগামী একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই জাহাঙ্গীর আলম ও স্ত্রী রতœা বেগম মারা যান এবং মেয়ে সানজিদা আক্তার গুরুতর আহত হয়। এ সময় ট্রাকচাপায় রতœা বেগমের পেট ফেটে কন্যাশিশুর জন্ম হয়। পরে আহত সানজিদা ও নবজাতককে নিয়ে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সানজিদাকে মৃত ঘোষণা করে নবজাতকটি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। তবে অতিরিক্ত যানজটের কারণে নবজাতককে চুরখাই কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে চিকিৎসা দিয়ে ময়মনসিংহ মহনগরীর চরপাড়া এলাকায় লাবিব হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।