• শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৫ পূর্বাহ্ন
  • ই-পেপার

হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ

Reporter Name / ৪৭৯ Time View
Update : শুক্রবার, ২২ অক্টোবর, ২০২১

নওগাঁ প্রতিনিধি :
নওগাঁর মান্দায় ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা জাবেদ আলীসহ ওই দপ্তরের কয়েক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। সহকারী শিক্ষকদের গ্রেড বাস্তবায়ন, স্লিপ ফান্ডের টাকা উত্তোলন, বকেয়া বেতন প্রাপ্তিসহ বিভিন্ন পাওনাদি পাওয়ার ক্ষেত্রে নানা অজুহাতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তাঁরা। সরকারি দপ্তরের বিল-ভাউচার পাস করতেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শিক্ষকদের অভিযোগ, ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই করেন না উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাসহ তাঁর দপ্তরের লোকজন। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে হিসাব মহানিয়ন্ত্রক বরাবর অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের উন্নীতস্কেল (১৩ তম গ্রেড) বাস্তবায়নের জন্য ৫০টি চাকরি বহি হিসাবরক্ষণ দপ্তরে প্রেরণ করে উপজেলা শিক্ষা অফিস। কিন্তু বিভিন্ন কাজের অজুহাত দেখিয়ে সেগুলো আবার ফেরত পাঠানো হয় শিক্ষা অফিসে।
নিরুপায় হয়ে শিক্ষকরা সরাসরি যোগাযোগ করেন হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা জাবেদ আলীসহ অডিটর সাইফুল ইসলাম কাজী ও জুনিয়র অডিটর শহিদুল ইসলামের সঙ্গে। পরে প্রত্যেক শিক্ষকের কাছ থেকে ১০০০ টাকা করে নিয়ে গ্রেড বাস্তবায়নের কাজ করে দেয় হিসাবরক্ষণ অফিস।
এছাড়া স্লিপ ফান্ড, রুটিন মেইনটেন্যান্স, ওয়াশ ব্লকসহ সরকারি বিভিন্ন বরাদ্দের টাকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও হয়নারীর শিকার হন শিক্ষকরা। ভাউচারসহ কাগজপত্রে বিভিন্ন ক্রটি ধরে দিনের পর দিন ঘোরানো হয়। অথচ ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দেওয়ার পর ওইসব কাগজপত্রে বিল পাশ করে দেন হিসাবরক্ষণ দপ্তরের ওইসব কর্মকর্তারা। সম্প্রতি সরকারি একটি দপ্তরের বিল-ভাউচার পাস করতেও ৪ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ওইসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
সংশ্লিস্ট সূত্র জানায়, উপজেলার ১৮০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আট শতাধিক শিক্ষকের কাছ থেকে গ্রেড বাস্তবায়ন কাজের জন্য অন্তত ৮ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা জাবেদ আলীসহ তাঁর দপ্তরের লোকজন। এ ছাড়া স্কেলপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বকেয়া টাকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে নিয়েছেন ওইসব কর্মকর্তারা।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুনুর রশিদসহ সমিতির একাধিক নেতা বলেন, উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিস ঘুষ-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ঘুষ ছাড়া এ দপ্তরে কোন কাজই হয় না। শিক্ষকরা দিনের পর দিন হয়রানীর শিকার হন। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস.এম রফিকুল ইসলাম বলেন, তাঁর দপ্তর থেকে শিক্ষকদের ৫০টি সার্ভিসবুক হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার দপ্তরে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু লোকবল সংকট ও বিভিন্ন কাজের কথা বলে সেগুলো আবার ফেরত পাঠানো হয়। পরবর্তীতে কাজটি করে দিয়েছেন তাঁরা। যেহেতু দপ্তরটি আমার নয়, তাই শিক্ষকরা এ কাজে ঘুষ দিয়েছেন কি-না সেটি আমি বলতে পারছি না।
উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা জাবেদ আলী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিক্ষকরা অযথাই আমার ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছেন। আমি ঘুষ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত নই।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ধরণের ঘটনা ঘটে থাকলে তা দুঃখজনক। শিক্ষকরা যেহেতু সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করেছেন তাঁরাই বিষয়টি তদন্ত করবেন। আমিও খোঁজখবর নেব।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category