• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ
‘মুজিবনগর দিবস’ বাঙালির পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্তির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী শ্রম আইনের মামলায় ড. ইউনূসের জামিনের মেয়াদ বাড়ল জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় গুরুত্ব থাকবে জনস্বাস্থ্যেও: পরিবেশ মন্ত্রী অনিবন্ধিত অনলাইনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ: তথ্য প্রতিমন্ত্রী মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনায় বিকল্পভাবে পণ্য আমদানির চেষ্টা করছি: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী স্বাস্থ্যসেবায় অভূতপূর্ব অর্জন বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে: রাষ্ট্রপতি শান্তি আলোচনায় কেএনএফকে বিশ্বাস করেছিলাম, তারা ষড়যন্ত্র করেছে: সেনাপ্রধান বন কর্মকর্তার খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে কাজ করছে মন্ত্রণালয়: পরিবেশমন্ত্রী পুরান ঢাকার রাসায়নিক গুদাম: ১৪ বছর ধরে সরানোর অপেক্ষা ভাসানটেক বস্তিতে ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপন করা হবে : মেয়র আতিক

১০ বছরের বিশ্বস্ত কর্মীর হাতেই খুন হন গৃহকর্ত্রী আফরোজা বেগম

Reporter Name / ২০১ Time View
Update : বুধবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর ধানমন্ডিতে জোড়া খুনের নেপথ্যে ছিলেন দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বাসার দেখভাল করা মো. বাচ্চু মিয়া (৩৪)। স্বর্ণালঙ্কার ও অর্থ লুটের পরিকল্পনা থেকেই গৃহকর্ত্রী আফরোজা বেগম ও গৃহপরিচালিকা দিতিকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর ২৮ নম্বর রোডে অবস্থিত ২১ নম্বর বাসার ই-৫ ফ্ল্যাট থেকে আফরোজা বেগম ও গৃহপরিচারিকা দিতির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নতুন গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে বাসায় আনা সুরভী আক্তার নাহিদার যোগসাজশে তাদের হত্যা করেন বাচ্চু মিয়া। এরই মধ্যে চাঞ্চল্যকর এই জোড়াখুনের ঘটনায় বাচ্চু মিয়া ও সুরভী আক্তারকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট তৈরি করেছে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। খুব দ্রুতই আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করবে তারা। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থার অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের পুলিশ সুপার (এসপি) আহসান হাবীব পলাশ। তিনি বলেন, খুনের ঘটনায় ৩ নভেম্বর প্রয়াত আফরোজা বেগমের মেয়ে অ্যাডভোকেট দিলরুবা সুলতানা রুবা ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন। ওই ঘটনায় ধানমন্ডি থানা ও ডিবি পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ২৬ দিন তদন্ত করে মূল দুই আসামি বাচ্চু ও সুরভীসহ সন্দেহভাজন ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে। সুরভী দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তবে মামলার বাদীর নারাজি ও পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে পিবিআই ওই বছরের ১ ডিসেম্বর মামলাটির তদন্ত শুরু করে। পিবিআই পুনরায় গ্রেপ্তার সুরভী ও বাচ্চুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেয়। রিমান্ডে এসে সুরভীর দেওয়া তথ্য মতে তার আগারগাঁওয়ের বাসার মাটি খুঁড়ে স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। পরে সুরভী দোষ স্বীকার করে পুনরায় বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। হত্যাকা-ের মোটিভ সম্পর্কে আহসান হাবীব পলাশ বলেন, বাচ্চু মিয়া দীর্ঘ ১০ বছর ধরে নিহত আফরোজা বেগমের বাসায় বিশ্বস্ততার সঙ্গে কাজ করে আসছিলেন। তবে শেষের দিকে বাচ্চু মিয়ার মধ্যে বিলাসী জীবন-যাপনের আকাক্সক্ষা জাগে। সেই আকাক্সক্ষা থেকে অর্থ-স্বর্ণালঙ্কার লুটের চিন্তা করেন তিনি। ঠিক সেই সময় আরও একজন গৃহকর্মীকে খুঁজছিলেন মামলার বাদী দিলরুবা। ওই সুযোগটিই কাজে লাগান বাচ্চু। নতুন গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োগের কথা বলে সুরভীকে বাসায় এনে স্বর্ণালংকার লুটের পরিকল্পনা করেন। এই পিবিআই কর্মকর্তা আরও বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী সুরভী আক্তারকে দিয়ে আগারগাঁও মার্কেট হতে ছুরি কেনান বাচ্চু। ঘটনার দিন সুরভীকে নিয়ে ওই বাসায় গিয়ে কাজের জন্য কথাবার্তা বলেন। নাহিদা প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান ও কিছু কাজও করেন। এরপর বিকেল ৪টার দিকে বাচ্চু মিয়া বাসায় ঢুকে আলমারীর চাবি চায়। এ সময় সুরভীও ছুরি নিয়ে ভিকটিমের শয়ন কক্ষে যায়। চাবি দিতে না চাইলে বাচ্চু ও সুরভী ছুরি দিয়ে গৃহকর্ত্রী আফরোজার গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক আঘাত করলে মারা যান তিনি। এরপর চাবি নিয়ে আলমারি খুলে ১টি স্বর্ণের চেইন, ২টি স্বর্ণের চুড়ি, ১টি মোবাইল সেট হাতিয়ে নেন বাচ্চু। এ ঘটনা অপর কাজের মেয়ে দিতি পাশের কক্ষ থেকে দেখে ফেলায় তাকেও ছুরিকাঘাতে হত্যা করে পালিয়ে যান বাচ্চু ও সুরভী। এক প্রশ্নের জবাবে এসপি পলাশ বলেন, গৃহকর্ত্রীর বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে লোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন বাচ্চু। স্বর্ণালঙ্কার লুটে বাধা পাওয়ায় দু’জনকেই খুন করে বাচ্চু ও সুরভী। বাচ্চু স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি, শুধু সুরভীর কথায় কীভাবে তাকে পিবিআই দোষী মনে করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভবনের একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ, বাচ্চু ও সুরভীর মধ্যে সাক্ষাতের ভিডিও, তাদের মধ্যে মোবাইল ফোনে কথোপকথনের তথ্যপ্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে স্পষ্ট হয়েছে বাচ্চুই মূল পরিকল্পনাকারী। এই হত্যাকা-ে পিবিআই দু’জনের নামে শিগগিরই চূড়ান্ত প্রতিবেদন (চার্জশিট) দিচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নিহত গৃহকর্ত্রীর মেয়ে ও বাদী দিলরুবা বলেন, আস্থার জায়গা থেকে মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইতে পাঠানোর আবেদন করি। পিবিআই সেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছে। তারা লুট করা স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করেছে। সুরভী পুনরায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সবকিছু স্পষ্ট করেছে। আমি যতো দ্রুত সম্ভব জড়িত দুই জনের ফাঁসি দাবি করছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category