• বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:০২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ
আইনের অবস্থান থেকে সরকারের আর কিছু করার নেই: আইনমন্ত্রী তীব্র শিক্ষক সঙ্কট নিয়েই চলছে সরকারি মেডিকেল কলেজগুলো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সুইজারল্যান্ডের সহযোগিতা চেয়েছেন স্পিকার একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিসহ ৮ দাবি প্রাথমিকের শিক্ষকদের স্বামীর স্থায়ী ঠিকানায় বদলির আদেশ বহাল দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার রোধে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর রোয়াংছড়ি উপজেলার কুকি চীন সন্ত্রাসী বাহিনীরা রাস্তার ক্ষয়ক্ষতির গ্রস্তে সেনা পরিদর্শন করেন ১৬ আন্তঃনগর ট্রেনে যুক্ত হলো পণ্যবাহী নতুন লাগেজ ভ্যান জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বনেতাদের যৌথ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলকে আর ঢাকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না: মেয়র তাপস

৬০ বিঘার বেশি জমির মালিক হওয়া যাবে না: ভূমিমন্ত্রী

Reporter Name / ১২ Time View
Update : বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, উত্তরাধিকার সূত্রে হলেও একজন ব্যক্তি ৬০ বিঘার বেশি কৃষি জমির মালিক হতে পারবেন না। তিনি বলেন, তবে সমবায় সমিতি, কোম্পানি ও শিল্পকারখানাসহ কিছুকিছু ক্ষেত্রে এই আইন শিথিল করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। কেউ ৬০ বিঘার বেশি কৃষি জমির মালিক হতে পারবেন না বলে আইনে বলা আছে, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ভূমিমন্ত্রী বলেন, এ আইনে ব্যক্তিগতভাবে ষাট বিঘার বেশি কৃষি জমির মালিক কেউ হতে পারবেন না। বঙ্গবন্ধুর আমলে এটি ১০০ বিঘা ছিল। এরশাদ এসে ষাট বিঘা করেছেন। কিন্তু অনুমতি নিয়ে কোনো কোম্পানি ৫০০ কিংবা এক হাজার বিঘা জমিও নিতে পারবে। তিনি বলেন, আইনের পাঁচ নম্বর বলা আছে, উত্তরাধিকার সূত্রে অর্জিত জমি ৬০ বিঘার বেশি হলে ভূমির মালিক তার পছন্দ অনুসারে ৬০ বিঘা জমি রাখতে পারবেন। অবশিষ্ট জমি সরকারি বিধির মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে খাস করতে পারবেন। অথবা ষাট বিঘার বেশি কৃষি জমি থাকলে সেটি বিক্রি করেও দিতে পারেন। কার ষাট বিঘার বেশি জমি আছে, তা সরকার কীভাবে জানবে, প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের কাছে এ-সংক্রান্ত ডেটাবেজ আসছে। তখন সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। দেশের যে কোনো জায়গায় জমি থাক না কেন, তা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ডেটাবেজ দেখে বলা যাবে-আপনার নামে কতটুকু জমি আছে। এমন না যে, আপনি চট্টগ্রামে কিছু কিনলেন, আবার রংপুরে কিনলেন, এভাবে ফাঁকি দিলেন। তা পারবেন না, ডেটাবেজে সব চলে আসবে। ভূমিমন্ত্রী বলেন, আপনি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন। কিন্তু যখন এই ভূমি দান করতে যাবেন, তখন নতুন করে রেকর্ড করতে হবে। এখন কেউ যদি কাউকে জমি দান করেন, যাকে দান করা হচ্ছে, তার যদি এরইমধ্যে ষাট বিঘা জমি থাকে, সেই দান তিনি নিতে পারবেন না। যদি সেক্ষেত্রে ষাট বিঘার কম জমি থাকে, তাহলে যতটুকু কম, ততটুকু নিতে পারবেন। এ সময়ে ভূমি সচিব খলিলুর রহমান বলেন, অর্থাৎ ষাট বিঘা কৃষি জমি রাখা যাবে। কিন্তু শর্ত মেনে এর বেশিও রাখা যাবে। যেমন, সমবায় সমিতির অনুকূলে সবাই মিলে যদি আরও বেশি জমি রাখতে চান, তাহলে রাখা যাবে। কেউ যদি চা কিংবা কফির বাগান করতে চান, সেখানে তো ষাট বিঘা জমিতে হবে না। সেক্ষেত্রে শর্ত শিথিল করা হয়েছে। সচিব বলেন, এই আইনটা এসেছে ১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার আইন থেকে। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর আইন দিয়ে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ থেকে ১৯৮৬ সালের নভেম্বর সামরিক আইনে যেসব অধ্যাদেশ ছিল, সেগুলো বিলুপ্ত হওয়ায়। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ওই সময়ের আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে বলেছে যে, এগুলো ভাষান্তর ও যুগোপযোগী করতে হবে। অর্থাৎ ১৯৮৪ সালের ল্যান্ড রিফর্মস অর্ডিন্যান্সকে ভাষান্তর করে ভূমি সংস্কার আইন করা হয়েছে। শুধু ছোটোখাটো কিছু সংযোজন করা হয়েছে। সরকারিসহ রেলওয়ের জমি বেদখলে। তা উদ্ধারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সময় পরিবর্তন হয়ে গেছে। আমাদের নিয়মিত রেকর্ড হালনাগাদ হচ্ছে। প্রতিবছর জমি উদ্ধার হচ্ছে। সরকারি জমি সরকারিই থাকবে। ভাসমান কিছু লোক সরকারি জায়গায় বাস করেন। সেটা অস্থায়ী, স্থায়ী না। কারণ ওই জমি যতদিন সরকারের কাজে লাগবে না, ততদিন তারা থাকতে পারবেন। ভূমিমন্ত্রী বলেন, ভূমি বিষয়ক আইনে হাত দিলে নাকি হাত পুড়ে যাবে। এটা নাকি খুব ‘সেনসিটিভ’। কিন্তু এ বিষয়ে তিনটি বিল পাস হয়েছে। যা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। তিনি বলেন, আমাকে অনেকেই বলেছিল যে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনে হাত দেওয়াটা কি উচিত হবে কিনা। এতে হাত দিলে হাত পুড়েও যেতে পারে। কারণ এটা খুব সেনসিটিভ। কিন্তু আমরা আজকে অত্যন্ত আনন্দময় মুহূর্তে প্রেস কনফারেন্স করছি। এটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত ও ঐতিহাসিক দিন আমাদের জন্য। গতকালকে (গত মঙ্গলবার) যে তিনটি বিল মহান সংসদে পাস করলাম, তারমধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ যে বিলটি ছিল সেটি হলো ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন। যেটা অধিক আগ্রহের, দীর্ঘদিন ধরে দেশবাসী অধিক আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। অনেকে একটু হতাশ হয়ে গিয়েছিল মাঝখানে, এটা মনে হয় আর আলোর মুখ দেখবে না। আল্লাহর অশেষ রহমত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান, সাহসিকতার কারণে আমরা জাতিকে একটি সুন্দর বিল উপহার দিতে সক্ষম হয়েছি। এটা আসলে খুবই প্রয়োজন ছিল। তিনি বলেন, আমাকে প্রধানমন্ত্রী যখন পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন আমি আস্তে আস্তে উপলব্ধি করলাম, কীভাবে মানুষকে হয়রানি, প্রতারণা থেকে বাঁচানো যায়। ধীরে-ধীরে আমি অনেক চিন্তা-ভাবনা করে এগুলোর প্রক্রিয়া শুরু করি। এটার দীর্ঘ সময় লেগেছে। এটা একটা বিশাল ব্যাপার ও অনেক জটিল। এই জটিলে হাত দেওয়াটা একটা সাহসিকতার বিষয় ছিল। এখানে আইনের অনেক বিষয় আছে। আমার তো সিনসিয়ারিটি ছিল; প্রধানমন্ত্রীও চায় এদেশের মানুষকে সেবা দিতে। আমরা সেবক হিসেবে থাকতে চাই। সুতরাং ওঁর যেহেতু সাপোর্ট আছে, আমার মনে হয় আল্লাহর রহমতে আমি যদি চেষ্টা করি, সেটা সম্ভব হবে। ভূমিমন্ত্রী আরও বলেন, এটার পেছনে অনেক কাজ করতে হয়েছে। পেছনের চিত্র আপনারা অনেক কিছু দেখেননি? আমাদের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাই কিন্তু মোটামুটি সার্বিকভাবে কাজ করেছেন। ওঁদের আন্তরিকতার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। না হলে কিন্তু আমার একার পক্ষে এটা সম্ভব হতো না। কারণ, এখানে অনেকগুলো বিষয় আছে। উল্লেখ, দলিল যার, জমি তার অর্থাৎ দখলে থাকলেই হবে না, জমির দলিলসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও থাকতে হবে, এই বিধান রেখে গত মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিল-২০২৩’ পাস হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category