নিজস্ব প্রতিবেদক :
জাপানি দুই শিশুকে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাদের মা ডা. নাকানো এরিকোর কাছে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। তবে এ সময়ের মধ্যে তাদের বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফ চাইলে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে যে কোনও সময় শিশুদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন বলেও আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। আদালতে বাবার আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। এর আগে গত ২১ নভেম্বর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মামলাটি চলমান প্রক্রিয়াধীন রেখে রায় প্রদান করেন। হাইকোর্টের তার রায়ে জাপানি মা ডা. নাকানো ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত আমেরিকান নাগরিক বাবা ইমরান শরীফের কাছেই বড় দুই কন্যা শিশুকে রাখার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে আদালত বলেন, জাপানি মা বছরে তিনবার বাংলাদেশে এসে ১০ দিন করে দুই শিশুর সঙ্গে থাকতে পারবেন। এছাড়াও প্রতি মাসের দুই সপ্তাহ পর ভিডিও কলে শিশুরা মায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। দেশে থাকাবস্থায় মায়ের খরচ বাবাকেই বহন করতে বলেছেন আদালত। পাশাপাশি এরিকো নাকানোকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে ইমরান শরীফকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ছোট আরেকটি কন্যা শিশুকে নিয়ে করা বাবার রিট খারিজ করে দিয়েছিলেন আদালত। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে গত ৫ ডিসেম্বর আপিল দায়ের করেন শিশুদের মা ডা. এরিকো নাকানো। প্রসঙ্গত, দুই মেয়েকে হাইকোর্টে হাজির করাতে রিট করেছিলেন জাপান থেকে আসা ডা. এরিকো নাকানো। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ আগস্ট শরীফ ইমরানের জিম্মায় থাকা দুই শিশু সন্তানকে ৩১ আগস্ট হাজির করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাদের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন আদালত। পরে দুই শিশুকে নির্যাতনের অভিযোগে তাদের মা পৃথক মামলা দায়ের করলে শিশুদের উদ্ধার করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি। এরপর তাদেরকে তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছিলো। এরপর শরীফ ইমরানের জিম্মা থেকে দুই শিশু সন্তানকে সিআইডি কর্তৃক উদ্ধারের পর গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে উন্নত পরিবেশে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ৩১ আগস্ট শিশুদেরকে হাইকোর্ট হাজির করতে এবং এ সময়ের মধ্যে আদালত উভয়পক্ষের আইনজীবীদের বিষয়টি সমাধান করতে ভূমিকা রাখার প্রচেষ্টা চালাতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। পরে গত ৩১ আগস্ট বাংলাদেশি বাবা ও জাপানি মায়ের দুই শিশুকে তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের পরিবর্তে গুলশানস্থ বাসায় একসঙ্গে বসবাস করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ঢাকার সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পদের একজনকে বিষয়টি তদারকির নির্দেশ দেন। পাশাপাশি ডিএমপি কমিশনারকে তাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিলো। উক্ত সময়ের মধ্যে তাদেরকে বিষয়টির সুরাহা করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন আদালত। পরবর্তীতে কয়েক দফায় দুইপক্ষের আইনজীবীদের আলোচনায় বসার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এ বিষয়ে কোন সুরাহা না হওয়ায় মামলাটি পুনরায় শুনানিতে ওঠে। এদিকে জাপানে থাকা তার তৃতীয় ছোট কন্যা শিশুকে হাজির করানোর ও দেখা করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে পৃথক আরেকটি রিট দায়ের করেন শিশুদের বাবা ইমরান শরীফ।
সর্বশেষঃ
৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জাপানি দুই শিশু মায়ের কাছেই থাকবে: আপিল বিভাগ
-
দৈনিক আইন বার্তা
- আপডেট সময়ঃ ০৭:৫৮:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২২
- ৪৩৫ বার পড়া হয়েছে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ