ঢাকা, রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ই-পেপার

অর্থনীতির নতুন দিগন্ত: চট্টগ্রাম পটিয়ায় দেশের প্রথম হাইড্রোলিক এলিভেটেড ড্যাম,

আবদুল মতিন চৌধুরী রিপন
  • আপডেট সময়ঃ ০৬:১৭:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৬৬ বার পড়া হয়েছে

আবদুল মতিন চৌধুরী রিপন বিশেষ প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের পটিয়ার শ্রীমাই খালে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্মাণ করতে যাচ্ছে দেশের প্রথম আধুনিক হাইড্রোলিক এলিভেটেড ড্যাম। ১৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত এ প্রকল্প কৃষি, শিল্প, মৎস্য ও পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে। একে ঘিরে স্থানীয়দের প্রত্যাশা এখন আকাশছোঁয়া। পটিয়া পাউবোর মেগাপ্রকল্পে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের ১১৫৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকার এ প্রকল্পের কাজ ৭ টি ভাগে ভাগ করে চলমান রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ফুট ওভার ব্রীজ নির্মাণ, সেচ অবকাঠামো, খাল পুন:খনন, বাঁধ নির্মাণ, নদী তীর সংরক্ষণ, ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ ও বাঁধ নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ। তাছাড়া, অন্য আরেক প্রকল্পের অধীনে শ্রীমাই খালের উপর নির্মিত হচ্ছে হাইড্রোলিক এলিভেটেড ড্যাম। এটি নির্মিত হলে জলরাশি সংরক্ষণের মাধ্যমে প্রায় ১১০৮ হেক্টর জমি সেচ সুবিধার আওতায় আসবে।এ কাজের জন্য প্রকল্প বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১৩৩ কোটি টাকা। শ্রীমাই খালের ৬০ মিটার দৈর্ঘ্য এ ইলেক্ট্রো-মেকানিকাল ড্যাম নির্মাণের মাধ্যমে বর্ষা মৌসুমে বিপুল পরিমাণ পানি সংরক্ষণ সম্ভব যা পরে শুষ্ক মৌসুমে ব্যবহার করা যাবে। প্রতি বছরে বর্ষা মৌসুমে শ্রীমাই খাল দিয়ে পাহাড়ী ঢল নেমে খালের ভাঙ্গনে বাড়ী ঘর বিলীন সহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়। বর্তমানে খালের দু’পাশে আরসিসি ব্লক দ্বারা তীর প্রতিরক্ষা করা হচ্ছে। ভাটিখাইন, ছনহরা,হাইদগাঁও ইউনিয়নে ৪.৪০ কিলোমিটার তীর প্রতিরক্ষা করা হচ্ছে, ইতোমধ্যে প্রায় ৩.৫০ কিলোমিটার কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ব্লক স্থাপনের ফলে শ্রীমাই খালের ভাঙ্গন রোধ হবে আর ড্যাম নির্মাণের ফলে কৃষি, মৎস্য চাষ, যোগাযোগ ও ইকো ট্যুরিজুম অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে। হাইড্রোলিক ড্যামের ৪০% শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ২০২৬ জুনে নাগাদ প্রকল্প শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। পটিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের ৮টি রেগুলেটর নির্মাণ, ৩০.১০ কিলোমিটার খাল পুন:খননের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এছাড়াও ১.৮০ কিলোমিটার নদীতীর প্রতিরক্ষা, ২.৭০ কিলোমিটার ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। ড্যামটি নির্মাণ হলে প্রায় ৫,০০০ একর জমি সেচ সুবিধার আওতায় আসবে। ফলে শুকনো মৌসুমেও তিন ফসল ফলানো সম্ভব হবে। কৃষি উৎপাদন বাড়বে অন্তত ৩০–৪০ শতাংশ।

ড্যামের মাধ্যমে পানি সংরক্ষণ ও সরবরাহ সম্ভব হলে স্থানীয় শিল্পাঞ্চলে নতুন কারখানা গড়ে উঠবে। এতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হাজারো কর্মসংস্থান তৈরি হবে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এটি পটিয়ার অর্থনীতিকে চট্টগ্রামের বর্ধিত শিল্পকেন্দ্রে রূপ দেবে। চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নেওয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে অনাবাদি জমি চাষের আওতায় আনা হচ্ছে।১১৫৮ কোটির বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আওতাধীন উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পটি ১১৫৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকার। এ মেগা প্রকল্পের চলমান কাজের আওতায় রয়েছে ২৫.৫১ কিলোমিটার বাঁধ, ২৬টি রেগুলেটর নির্মাণ, ২.৯৫ কি:মি: প্রতিরক্ষা কাজ, ১টি ফুটওভার ব্রীজ নির্মাণ, ৩০.৫০ কি:মি: খাল খনন ইত্যাদি। প্রকল্পের ভৌত কাজের প্রায় ৭০ শতাংশ শেষ করা হয়েছে। ৩০ কি.মি খাল পুনঃখননের কাজ ১০০ শতাংশ শেষ করা হয়েছে, গরুলুডা খালের ১০ কি.মি, শ্রীমাই খালের ৫ কি.মি, চানখালি খালের ৩.৫ কি.মি, আলম খাল, কাজির খালসহ আরও অন্যান্য খালের ১০ কি.মি খনন কাজ শেষ করা হয়েছে।নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ ২.৯৫ কিলোমিটার ৭০ শতাংশ শেষ হয়েছে।
নাইখাইন গ্রামে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণকাজ ৩৫ শতাংশ শেষ হয়েছে এবং কাজ চলমান রয়েছে। ৪.১০ কিলোমিটার ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ কাজ ৮০ শতাংশ শেষ করা হয়েছে। বাকি কাজ চলমান রয়েছে।সেচ রেগুলেটর নির্মাণ (স্লুইস গেট) ২৬টির মধ্যে ইতোমধ্যে কাজ ৬০ শতাংশ শেষ করা হয়েছে।কাজের অগ্রগতি দেখেই স্থানীয় লোকজন অত্যন্ত খুশি।এলাকাবাসীরা জানান, আমাদের পুরো এলাকায় জলাবদ্ধতা ও বন্যায় ধান নষ্ট হতো। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ১৭ ইউনিয়নের মানুষের সুফল আসবে, ৬.১ কিলোমিটার বাঁধ নদীভাঙন রোধ করবে এবং মৌসুমি বন্যা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ফলে গ্রামীণ অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসবে। কৃষক আবদুল খালেক: “ড্যাম হলে জমিতে পানির অভাব থাকবে না। সারা বছর চাষাবাদ করা যাবে।” জেলে দেলোয়ার হোসেন: “এখানে মাছ চাষ করলে আমাদের জীবন বদলে যাবে। ” ব্যবসায়ী রহিম উদ্দিন: “শিল্পে পানি সরবরাহ নিশ্চিত হলে নতুন বিনিয়োগ হবে ড্যামের সংরক্ষিত পানিতে মৎস্যচাষের জন্য আলাদা জোন তৈরি করা যাবে। এতে স্থানীয় জেলেদের আয়ে নতুন ধারা যুক্ত হবে। অন্যদিকে প্রকল্প এলাকায় দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ গড়ে উঠলে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। চীন ও ভিয়েতনামে এ ধরনের ড্যাম কৃষি ও শিল্পে উন্নয়ন এনেছে। তবে সেখানেও পরিবেশগত প্রভাব মোকাবিলা করতে হয়েছে। বাংলাদেশও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে টেকসই সমাধান খুঁজতে পারবে। এদিকে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ২০ শতাংশ।

চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-১পওর নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ বলেন,প্রকল্পের বন্যা নিয়ন্ত্রণ দেয়াল নির্মাণ, বেড়িবাঁধ ও সিসি ব্লকের বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজসহ ভৌত কাজের ৭০ শতাংশ শেষ করা হয়েছে,সব ধরনের কাজ দৃশ্যমান হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন,পটিয়ায় অনেক কৃষিজমি অনাবাদি পড়ে আছে। এ প্রকল্পের কারণে অনাবাদি জমিগুলো চাষাবাদের আওতায় আনা সম্ভব হবে। পটিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে উপজেলার আশিয়া, হাবিলাসদ্বীপ, ধলঘাট, বড়লিয়া, দক্ষিণ ভূর্ষি, জঙ্গলখাইন, নাইখাইন, ভাটিখাইন, ছনহরা, কচুয়াই, হাইদগাঁও, কেলিশহর ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষ উপকৃত হবে।পটিয়ায় ২ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য শস্য উৎপাদনসহ যোগাযোগ ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে।পাশাপাশি নদী ও খালের ভাঙন থেকে সুরক্ষা পাবে। লবণ পানির প্রবেশ রোধ হবে। বর্ষায় থাকবে না জলাবদ্ধতা, হবে না কৃষিজমির ধান নষ্ট। বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পটি ২০২১ একনেক সভায় পাস হয় এবং ব্যয় ধরা হয়েছিল ১১শ কোটি ৫৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। দেশের প্রথম হাইড্রোলিক এলিভেটেড ড্যাম প্রকল্প শুধু পটিয়ার নয়, পুরো চট্টগ্রাম অঞ্চলের অর্থনীতিকে নতুন দিশা দেখাতে পারে। তবে এর সফলতা নির্ভর করবে সময়মতো বাস্তবায়ন, টেকসই রক্ষণাবেক্ষণ এর পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাপনার

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

অর্থনীতির নতুন দিগন্ত: চট্টগ্রাম পটিয়ায় দেশের প্রথম হাইড্রোলিক এলিভেটেড ড্যাম,

আপডেট সময়ঃ ০৬:১৭:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আবদুল মতিন চৌধুরী রিপন বিশেষ প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের পটিয়ার শ্রীমাই খালে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্মাণ করতে যাচ্ছে দেশের প্রথম আধুনিক হাইড্রোলিক এলিভেটেড ড্যাম। ১৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত এ প্রকল্প কৃষি, শিল্প, মৎস্য ও পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে। একে ঘিরে স্থানীয়দের প্রত্যাশা এখন আকাশছোঁয়া। পটিয়া পাউবোর মেগাপ্রকল্পে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের ১১৫৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকার এ প্রকল্পের কাজ ৭ টি ভাগে ভাগ করে চলমান রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ফুট ওভার ব্রীজ নির্মাণ, সেচ অবকাঠামো, খাল পুন:খনন, বাঁধ নির্মাণ, নদী তীর সংরক্ষণ, ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ ও বাঁধ নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ। তাছাড়া, অন্য আরেক প্রকল্পের অধীনে শ্রীমাই খালের উপর নির্মিত হচ্ছে হাইড্রোলিক এলিভেটেড ড্যাম। এটি নির্মিত হলে জলরাশি সংরক্ষণের মাধ্যমে প্রায় ১১০৮ হেক্টর জমি সেচ সুবিধার আওতায় আসবে।এ কাজের জন্য প্রকল্প বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১৩৩ কোটি টাকা। শ্রীমাই খালের ৬০ মিটার দৈর্ঘ্য এ ইলেক্ট্রো-মেকানিকাল ড্যাম নির্মাণের মাধ্যমে বর্ষা মৌসুমে বিপুল পরিমাণ পানি সংরক্ষণ সম্ভব যা পরে শুষ্ক মৌসুমে ব্যবহার করা যাবে। প্রতি বছরে বর্ষা মৌসুমে শ্রীমাই খাল দিয়ে পাহাড়ী ঢল নেমে খালের ভাঙ্গনে বাড়ী ঘর বিলীন সহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়। বর্তমানে খালের দু’পাশে আরসিসি ব্লক দ্বারা তীর প্রতিরক্ষা করা হচ্ছে। ভাটিখাইন, ছনহরা,হাইদগাঁও ইউনিয়নে ৪.৪০ কিলোমিটার তীর প্রতিরক্ষা করা হচ্ছে, ইতোমধ্যে প্রায় ৩.৫০ কিলোমিটার কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ব্লক স্থাপনের ফলে শ্রীমাই খালের ভাঙ্গন রোধ হবে আর ড্যাম নির্মাণের ফলে কৃষি, মৎস্য চাষ, যোগাযোগ ও ইকো ট্যুরিজুম অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে। হাইড্রোলিক ড্যামের ৪০% শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ২০২৬ জুনে নাগাদ প্রকল্প শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। পটিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের ৮টি রেগুলেটর নির্মাণ, ৩০.১০ কিলোমিটার খাল পুন:খননের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এছাড়াও ১.৮০ কিলোমিটার নদীতীর প্রতিরক্ষা, ২.৭০ কিলোমিটার ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। ড্যামটি নির্মাণ হলে প্রায় ৫,০০০ একর জমি সেচ সুবিধার আওতায় আসবে। ফলে শুকনো মৌসুমেও তিন ফসল ফলানো সম্ভব হবে। কৃষি উৎপাদন বাড়বে অন্তত ৩০–৪০ শতাংশ।

ড্যামের মাধ্যমে পানি সংরক্ষণ ও সরবরাহ সম্ভব হলে স্থানীয় শিল্পাঞ্চলে নতুন কারখানা গড়ে উঠবে। এতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হাজারো কর্মসংস্থান তৈরি হবে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এটি পটিয়ার অর্থনীতিকে চট্টগ্রামের বর্ধিত শিল্পকেন্দ্রে রূপ দেবে। চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নেওয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে অনাবাদি জমি চাষের আওতায় আনা হচ্ছে।১১৫৮ কোটির বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আওতাধীন উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পটি ১১৫৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকার। এ মেগা প্রকল্পের চলমান কাজের আওতায় রয়েছে ২৫.৫১ কিলোমিটার বাঁধ, ২৬টি রেগুলেটর নির্মাণ, ২.৯৫ কি:মি: প্রতিরক্ষা কাজ, ১টি ফুটওভার ব্রীজ নির্মাণ, ৩০.৫০ কি:মি: খাল খনন ইত্যাদি। প্রকল্পের ভৌত কাজের প্রায় ৭০ শতাংশ শেষ করা হয়েছে। ৩০ কি.মি খাল পুনঃখননের কাজ ১০০ শতাংশ শেষ করা হয়েছে, গরুলুডা খালের ১০ কি.মি, শ্রীমাই খালের ৫ কি.মি, চানখালি খালের ৩.৫ কি.মি, আলম খাল, কাজির খালসহ আরও অন্যান্য খালের ১০ কি.মি খনন কাজ শেষ করা হয়েছে।নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ ২.৯৫ কিলোমিটার ৭০ শতাংশ শেষ হয়েছে।
নাইখাইন গ্রামে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণকাজ ৩৫ শতাংশ শেষ হয়েছে এবং কাজ চলমান রয়েছে। ৪.১০ কিলোমিটার ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ কাজ ৮০ শতাংশ শেষ করা হয়েছে। বাকি কাজ চলমান রয়েছে।সেচ রেগুলেটর নির্মাণ (স্লুইস গেট) ২৬টির মধ্যে ইতোমধ্যে কাজ ৬০ শতাংশ শেষ করা হয়েছে।কাজের অগ্রগতি দেখেই স্থানীয় লোকজন অত্যন্ত খুশি।এলাকাবাসীরা জানান, আমাদের পুরো এলাকায় জলাবদ্ধতা ও বন্যায় ধান নষ্ট হতো। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ১৭ ইউনিয়নের মানুষের সুফল আসবে, ৬.১ কিলোমিটার বাঁধ নদীভাঙন রোধ করবে এবং মৌসুমি বন্যা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ফলে গ্রামীণ অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসবে। কৃষক আবদুল খালেক: “ড্যাম হলে জমিতে পানির অভাব থাকবে না। সারা বছর চাষাবাদ করা যাবে।” জেলে দেলোয়ার হোসেন: “এখানে মাছ চাষ করলে আমাদের জীবন বদলে যাবে। ” ব্যবসায়ী রহিম উদ্দিন: “শিল্পে পানি সরবরাহ নিশ্চিত হলে নতুন বিনিয়োগ হবে ড্যামের সংরক্ষিত পানিতে মৎস্যচাষের জন্য আলাদা জোন তৈরি করা যাবে। এতে স্থানীয় জেলেদের আয়ে নতুন ধারা যুক্ত হবে। অন্যদিকে প্রকল্প এলাকায় দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ গড়ে উঠলে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। চীন ও ভিয়েতনামে এ ধরনের ড্যাম কৃষি ও শিল্পে উন্নয়ন এনেছে। তবে সেখানেও পরিবেশগত প্রভাব মোকাবিলা করতে হয়েছে। বাংলাদেশও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে টেকসই সমাধান খুঁজতে পারবে। এদিকে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ২০ শতাংশ।

চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-১পওর নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ বলেন,প্রকল্পের বন্যা নিয়ন্ত্রণ দেয়াল নির্মাণ, বেড়িবাঁধ ও সিসি ব্লকের বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজসহ ভৌত কাজের ৭০ শতাংশ শেষ করা হয়েছে,সব ধরনের কাজ দৃশ্যমান হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন,পটিয়ায় অনেক কৃষিজমি অনাবাদি পড়ে আছে। এ প্রকল্পের কারণে অনাবাদি জমিগুলো চাষাবাদের আওতায় আনা সম্ভব হবে। পটিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে উপজেলার আশিয়া, হাবিলাসদ্বীপ, ধলঘাট, বড়লিয়া, দক্ষিণ ভূর্ষি, জঙ্গলখাইন, নাইখাইন, ভাটিখাইন, ছনহরা, কচুয়াই, হাইদগাঁও, কেলিশহর ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষ উপকৃত হবে।পটিয়ায় ২ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য শস্য উৎপাদনসহ যোগাযোগ ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে।পাশাপাশি নদী ও খালের ভাঙন থেকে সুরক্ষা পাবে। লবণ পানির প্রবেশ রোধ হবে। বর্ষায় থাকবে না জলাবদ্ধতা, হবে না কৃষিজমির ধান নষ্ট। বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পটি ২০২১ একনেক সভায় পাস হয় এবং ব্যয় ধরা হয়েছিল ১১শ কোটি ৫৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। দেশের প্রথম হাইড্রোলিক এলিভেটেড ড্যাম প্রকল্প শুধু পটিয়ার নয়, পুরো চট্টগ্রাম অঞ্চলের অর্থনীতিকে নতুন দিশা দেখাতে পারে। তবে এর সফলতা নির্ভর করবে সময়মতো বাস্তবায়ন, টেকসই রক্ষণাবেক্ষণ এর পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাপনার