আওয়ামী লীগ শুধুমাত্র দেশের জনগণের কাছে দায়বদ্ধ: শেখ হাসিনা

- আপডেট সময়ঃ ০৮:৩৫:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ অগাস্ট ২০২৩
- / ১৩৬ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগ শুধুমাত্র দেশের জনগণের কাছে দায়বদ্ধ মন্তব্য করে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগের কোনো প্রভু নেই। রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের ‘বিশেষ বর্ধিত সভায়’ সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের শক্তি হচ্ছে আওয়ামী লীগের শক্তি। আওয়ামী লীগের কোনো প্রভু নেই। জনগণই হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রভু। জনগণের কাছে আমরা দায়বদ্ধ। তিনি বলেন, জনগণের কল্যাণে কাজ করি। নির্বাচনের সময় জনগণের কাছেই আমরা আমাদের দায়বদ্ধতা দেই- কতটুকু করতে পেরেছি, ভবিষ্যতে আমরা কী করবো। আগামীতে জনগণকে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের মানুষকে আমি আহ্বান করবো- তারা কী চান বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে চলুক? বাংলাদেশের জনগণ ভোটের মালিক, তারা যদি চায় উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, প্রতিষ্ঠিত হবে, তাহলে নৌকা মার্কায় আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে হবে। আর আওয়ামী লীগ ভোট পেলেই এটা সম্ভব হবে। শেখ হাসিনা বলেন, সবার জন্য আমরা কাজ করবো এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলবো। আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের কথা জনগণের কাছে তুলে ধরতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য আওয়ামী লীগই কাজ করেছে। আগে অন্য কেউ কোনোদিন মানুষের কথা ভাবেওনি, কিছু করেওনি। সেই কথাগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। আমরা যে উন্নয়ন করেছি, পরিবর্তন এনেছি সেই তথ্যগুলো মানুষের কাছে দেবো, সেগুলো আপনারা মানুষের কাছে পৌঁছে দেবেন। জনগণের কাছে উন্নয়ন তুলে ধরার পাশাপাশি আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল এ সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশে একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলে, সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়েছে বলে আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আজকের বাংলাদেশ বিশ্বে সম্মান পেয়েছে। দেশে দারিদ্র্য বিমোচনে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, দারিদ্র্যের হার যেখানে ৪১ শতাংশে ছিল, সেখান থেকে নামিয়ে ১৮ শতাংশে এনেছি। আগামীতে ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে পারলে দেশে দারিদ্র্যের হার আরও কমিয়ে আনার ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা। ড. ইউনুসের প্রতিষ্ঠানকে ইঙ্গিত করে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক অর্থনীতিবিদ লিখেছেন কোনো এক বিশেষ এনজিওর ক্ষুদ্র ঋণে দেশে দারিদ্র্য কমেছে। আওয়ামী লীগ ২০০৯ এ সরকার গঠন করে ২০২৩ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনা করেই তো আজ আমরা দারিদ্র্যের হার ১৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। কোনো বিশেষ এনজিওর ক্ষুদ্র ঋণে যদি দারিদ্র্য কমে তবে এ ১৮ শতাংশ আগে কেন হয়নি। শেখ হাসিনা বলেন, যারা বলে এনজিওর ক্ষুদ্র ঋণে দারিদ্র্য কমেছে তারা কোন অংকে হিসাব করেন। দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে কারণ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। আওয়ামী লীগের প্রতিটি কর্মসূচি গণমুখী তিনি বলেন, জনগণকে দারিদ্র্যমুক্ত করা, জনগণের শিক্ষার হার বাড়ানো, স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দৌরগৌড়ায় পৌঁছে দেওয়া, কর্মসংস্থানের জন্য বেসরকারি খাত উন্মুক্ত করে দেওয়া, তৃণমূল পর্যন্ত মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলেই এ দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়েছে। কোনো এনজিওর ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে দারিদ্র্য হ্রাস পায়নি। শেখ হাসিনা বলেন, উচ্চ সুদে যারা কাজ করবে তারা দারিদ্র্যমুক্ত হতে পারে না বরং তারা ঋণগ্রস্ত হয়ে ঋণের ওপরই জীবনযাপন করতে হয়। কখনো তাদের আত্মহত্যা করতে হয়েছে, কখনো জমিজমা সব বেচতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র, মানুষের ভোটের অধিকারে বিশ্বাস করে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ২০০১ সালে সর্বপ্রথম বাংলাদেশের ইতিহাসে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল আওয়ামী লীগ। তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আসি। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, আওয়ামী লীগ মানুষের ভোটের অধিকারে বিশ্বাস করে, সে কারণে আওয়ামী লীগ সুষ্ঠুভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের এ ‘বিশেষ বর্ধিত সভায়’ সারাদেশ থেকে কয়েক হাজার তৃণমূল ও কেন্দ্রীয় নেতা গণভবনে আসেন। আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারাও এ সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম। সভায় শোক প্রস্তাব পাঠ করেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
আ. লীগ দারিদ্র্য বিমোচন ১৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
অর্থনীতিবিদদের কাছে প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনা করেই দারিদ্র্য বিমোচন ১৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। আগে কেন ১৮ শতাংশে দারিদ্র্যের হার আসেনি? আমি অর্থনীতিবিদদের কাছে জিজ্ঞাসা করবো, তারা কোন অংকে এসব করেন? ২০০৯ সালের আগে কি এনজিও ঋণের কারণে দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে? হয়নি। আওয়ামী লীগের প্রতিটি পদক্ষেপেই কর্মমুখী। রোববার সকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় সভাপতির প্রারম্ভিক বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, দারিদ্র্যতার হার ৪১ শতাংশ ছিল। সেখান থেকে আমরা কমিয়ে ১৮ তে নিয়ে এসেছি। একটি পত্রিকায় অর্থনীতিবিদদের আর্টিকেল পরলাম। তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশের দারিদ্র্যতার হার কমেছে- শুধু নাকি দুটি ক্ষুদ্রঋণের প্রতিষ্ঠানের কারণে। সে ভদ্রলোকের নাম আমি বলবো না, আমি জিজ্ঞাসা করতে চাই যে, যদি এনজিওদের ক্ষুদ্রঋণে দারিদ্র্য বিমোচন হয়ে থাকে তাহলে আগে কেন হলো না? সরকারপ্রধান বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা ১৪ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারণে দেশের ধারাবাহিক উন্নয়ন হয়েছে। আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ, আজকের বাংলাদেশ বিশ্বের সম্মানের বাংলাদেশ। আমার যখন স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি তখন জাতিসংঘ আমাদের উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা দিয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকার দীর্ঘ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করার ফলে আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশে মর্যাদা পেয়েছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের যাত্রা শুরু হবে ২০২৬ সাল থেকে। বাংলাদেশের মানুষ কি চান উন্নয়নশীল মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে চলুক? বাংলাদেশের জনগণকে প্রশ্ন করবেন, কারণ জনগণের হচ্ছে ভোটের মালিক। তারা যদি চায় বাংলাদেশ উন্নয়নশীল মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে যাবে, প্রতিষ্ঠিত হবে, তাহলে নৌকা মার্কা আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে হবে। আওয়ামী লীগ ভোট পেলেই এটা সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনাস্থা সৃষ্টি হওয়ার প্রেক্ষাপটে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। যা বাংলাদেশে ‘ওয়ান ইলেভেন’ নামে পরিচিত। রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সেদিন বিকেলে জরুরি অবস্থা জারির পর বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন তৎকালীন গভর্নর ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয়। আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় ওয়ান-ইলেভেন প্রসঙ্গটি এনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির দুর্নীতি ও দুঃশাসনের কারণেই ওয়ান ইলেভেন হয়েছিল। খালেদা জিয়া ভোটচোর হিসেবে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল। ২০০১ সালের নির্বাচনে ষড়যন্ত্রের কারণে আওয়ামী লীগ হেরেছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, গ্যাস বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় এবং দেশি-বিদেশি নানা চক্রান্তের কারণে ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারেনি আওয়ামী লীগ। ভোটচুরি করলে দেশের মানুষ মেনে নেয় না বলেই খালেদা জিয়াকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। জনগণই ভোটের মালিক। আওয়ামী লীগকে ভোট দিলেই উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে চলতে পারবে দেশের মানুষ। আওয়ামী লীগের কোনো প্রভু নেই। জনগণই আওয়ামী লীগের প্রভু। নির্বাচনের বিষয়ে জনগণের প্রতিই আওয়ামী লীগ দায়বদ্ধ। তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসে একমাত্র আওয়ামী লীগই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে। বিএনপির হাতে দেশ ও দেশের মানুষ নিরাপদ নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান- সবাই খুনি।