ঢাকা, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫ | ই-পেপার

আত্মসমর্পণকারী সেনা কর্মকর্তারা নির্দোষ, অপরাধীরা ভারতে পালিয়েছেন : আইনজীবী

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময়ঃ ০৬:০০:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৩৪ বার পড়া হয়েছে

মানবতাবিরোধী অপরাধের তিন মামলায় আত্মসমর্পণ করা ১৫ সেনা কর্মকর্তার পক্ষে তাদের আইনজীবী এম সরোয়ার হোসেন দাবি করেছেন, এই কর্মকর্তারা নির্দোষ। তিনি বলেছেন, প্রকৃত অপরাধীরা ইতোমধ্যে প্রতিবেশী দেশ ভারতে পালিয়ে গেছেন।

বুধবার (২২ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই ১৫ কর্মকর্তাকে হাজির করার পর শুনানি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন আইনজীবী সরোয়ার হোসেন। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়, এরপর তাদের ঢাকা সেনানিবাসের সাবজেলে নিয়ে যাওয়া হয়।

সরোয়ার হোসেন বলেন, ‌‘সেনা সদর থেকে নির্দেশ পেয়ে এই কর্মকর্তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছেন। তারা দীর্ঘদিন দেশের সেবা করেছেন এবং ন্যায়বিচারের ওপর আস্থা রেখেই আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন।’

তিনি প্রসিকিউশনের বক্তব্যের বিরোধিতা করে বলেন, ‘এই কর্মকর্তারা গ্রেপ্তার হননি, বরং স্বেচ্ছায় পুলিশের মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। কিন্তু প্রসিকিউশন সেটিকে গ্রেপ্তার হিসেবে উপস্থাপন করছে, যা সঠিক নয়।’

তার দাবি, ‘এই অফিসাররা নির্দোষ। যারা আসল অপরাধের সঙ্গে যুক্ত, তারা ভারতে পালিয়ে গেছেন। তাদের মধ্যে আছেন জেনারেল কবির, জেনারেল আকবর, জেনারেল তারিক সিদ্দিকী এবং জেনারেল মুজিব।’

এর আগে ট্রাইব্যুনাল বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সংঘটিত গুম, নির্যাতন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে মোট ২৫ সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৮ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। ওই দিনই প্রসিকিউশন আনুষ্ঠানিকভাবে তিন মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরবর্তীতে ১১ অক্টোবর সেনাবাহিনী জানায়, ১৫ কর্মকর্তা তাদের হেফাজতে আছেন।

এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনও আসামি। বর্তমানে আল মামুন কারাগারে রয়েছেন। সরোয়ার হোসেনের দাবি, ‘সাবেক আইজিপি মামুন ইতোমধ্যে স্বীকার করেছেন, এসব কর্মকাণ্ড শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের নির্দেশে হয়েছিল।’

আত্মসমর্পণকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, কামরুল হাসান, মাহাবুব আলম, মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী, কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মশিউর রহমান, সাইফুল ইসলাম সুমন, সারওয়ার বিন কাশেম, রেদোয়ানুল ইসলাম ও মেজর রাফাত-বিন-আলম।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আত্মসমর্পণকারী সেনা কর্মকর্তারা নির্দোষ, অপরাধীরা ভারতে পালিয়েছেন : আইনজীবী

আপডেট সময়ঃ ০৬:০০:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

মানবতাবিরোধী অপরাধের তিন মামলায় আত্মসমর্পণ করা ১৫ সেনা কর্মকর্তার পক্ষে তাদের আইনজীবী এম সরোয়ার হোসেন দাবি করেছেন, এই কর্মকর্তারা নির্দোষ। তিনি বলেছেন, প্রকৃত অপরাধীরা ইতোমধ্যে প্রতিবেশী দেশ ভারতে পালিয়ে গেছেন।

বুধবার (২২ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই ১৫ কর্মকর্তাকে হাজির করার পর শুনানি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন আইনজীবী সরোয়ার হোসেন। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়, এরপর তাদের ঢাকা সেনানিবাসের সাবজেলে নিয়ে যাওয়া হয়।

সরোয়ার হোসেন বলেন, ‌‘সেনা সদর থেকে নির্দেশ পেয়ে এই কর্মকর্তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছেন। তারা দীর্ঘদিন দেশের সেবা করেছেন এবং ন্যায়বিচারের ওপর আস্থা রেখেই আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন।’

তিনি প্রসিকিউশনের বক্তব্যের বিরোধিতা করে বলেন, ‘এই কর্মকর্তারা গ্রেপ্তার হননি, বরং স্বেচ্ছায় পুলিশের মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। কিন্তু প্রসিকিউশন সেটিকে গ্রেপ্তার হিসেবে উপস্থাপন করছে, যা সঠিক নয়।’

তার দাবি, ‘এই অফিসাররা নির্দোষ। যারা আসল অপরাধের সঙ্গে যুক্ত, তারা ভারতে পালিয়ে গেছেন। তাদের মধ্যে আছেন জেনারেল কবির, জেনারেল আকবর, জেনারেল তারিক সিদ্দিকী এবং জেনারেল মুজিব।’

এর আগে ট্রাইব্যুনাল বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সংঘটিত গুম, নির্যাতন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে মোট ২৫ সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৮ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। ওই দিনই প্রসিকিউশন আনুষ্ঠানিকভাবে তিন মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরবর্তীতে ১১ অক্টোবর সেনাবাহিনী জানায়, ১৫ কর্মকর্তা তাদের হেফাজতে আছেন।

এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনও আসামি। বর্তমানে আল মামুন কারাগারে রয়েছেন। সরোয়ার হোসেনের দাবি, ‘সাবেক আইজিপি মামুন ইতোমধ্যে স্বীকার করেছেন, এসব কর্মকাণ্ড শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের নির্দেশে হয়েছিল।’

আত্মসমর্পণকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, কামরুল হাসান, মাহাবুব আলম, মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী, কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মশিউর রহমান, সাইফুল ইসলাম সুমন, সারওয়ার বিন কাশেম, রেদোয়ানুল ইসলাম ও মেজর রাফাত-বিন-আলম।