১১:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ | ই-পেপার

আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে মুক্তিপণ দাবি, নারীসহ গ্রেপ্তার ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় ভুয়া আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে অপহরণের পর নগ্ন ভিডিও করে মুক্তিপণ দাবি করা সংঘবদ্ধ চক্রের মূলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র?্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে অপহৃত এক ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়। আজ বুধবার দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‌্যাব-৪ সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান। এর আগে, গত মঙ্গলবার আশুলিয়ার ধলপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন- ঝিনাইদহ জেলার বাসিন্দা মোছা. মায়া খাতুন (৩৭), শিমুল বিশ্বাস (৪৩) ও মো. মোক্তার শেখ (৫০)। তারা সবাই আশুলিয়ায় বসবাস করতেন। তবে তাদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি। র‌্যাব-৪ জানায়, গত ৬ মার্চ মো. রুমন হোসাইন নামের এক ব্যক্তির অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায় যে, ওই দিন বেলা ৩টার দিকে তার বাবা মো. আক্তার আলী বিশ্বাস তাদের বাসা আশুলিয়া হতে জিরাবো ফুফাতো ভাইয়ের বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। এর কিছু সময় পর তারা তার বাবার ফোন বন্ধ পান। পরে ফোনে না পেয়ে তারা তার ফুফাতো ভাইয়ের বাসায় ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের বাসায় খোঁজ নিয়েও কোনো সন্ধান পায় না। ওইদিন সন্ধ্যায় তার বাবার ফোন হতে তার ছেলে রুমন হোসাইনকে ফোন করে অজ্ঞাত ব্যক্তি জানায় তার বাব তাদের নিকট আটক আছে। তারা অপহৃতের নগ্ন ছবি তুলে রেখেছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে এক লাখ টাকা না দিলে তারা ভুক্তভোগীর নগ্ন ও আপত্তিকর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেবে। এমনকি টাকা না পেলে অপহৃতকে হত্যার হুমকিও দেয় তারা। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে, র‌্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দা দল ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে মাঠ পর্যায়ে গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। একই সঙ্গে আটককৃত আসামিদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও তাদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয় যে, তারা আশুলিয়া থানাধীন ধলপুর এলাকায় ভুক্তভোগীসহ অবস্থান করছে। পরে ৭ মার্চ র‌্যাব-৪, সিপিসি-২ এর একটি আভিযানিক দল আশুলিয়ার ধলপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মূলহোতাসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের হেফাজত থেকে অপহৃত ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়। র‌্যাব-৪ সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামিরা জানায় যায় যে, দীর্ঘদিন ধরে এই চক্রটি সাভার-আশুলিয়া অঞ্চলে কাজ করে আসছিল। প্রথমে এই চক্রের কয়েকজন মিলে সুনির্দিষ্ট টার্গেট ঠিক করে। তারপর একজন মহিলার মাধ্যমে তার সঙ্গে মিথ্যা সুসম্পর্ক তৈরির একপর্যায়ে মহিলা ভুক্তভোগীকে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য তাদের পূর্ব নির্ধারিত স্থানে ডেকে আনে। তারপর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি বাসায় নিয়ে গিয়ে ওঁৎ পেতে থাকা অপরাপর সহযোগীদের কাছে দেয়। একপর্যায়ে তারা ভিকটিমকে উলঙ্গ করে নগ্ন ভিডিও ধারণ করে। তারপর ভুক্তভোগীর ফোন দিয়ে তার পরিবারকে কল দিয়ে মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি করে ও একই সঙ্গে ভুক্তভোগীকে লাঠি দিয়ে প্রহার করে পরিবারকে শোনায়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী তার আত্মসম্মানের ভয়ে ও পারিবারিক মর্যাদার কারণে গোপনে মোটা অংকের টাকা দেয়। গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

চারুকলায় ফ্যাসিবাদের মুখায়ব পুড়িয়েছে হাসিনার দোসররা: ফারুকী

আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে মুক্তিপণ দাবি, নারীসহ গ্রেপ্তার ৩

আপডেট সময়ঃ ০৯:০৮:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় ভুয়া আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে অপহরণের পর নগ্ন ভিডিও করে মুক্তিপণ দাবি করা সংঘবদ্ধ চক্রের মূলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র?্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে অপহৃত এক ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়। আজ বুধবার দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‌্যাব-৪ সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান। এর আগে, গত মঙ্গলবার আশুলিয়ার ধলপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন- ঝিনাইদহ জেলার বাসিন্দা মোছা. মায়া খাতুন (৩৭), শিমুল বিশ্বাস (৪৩) ও মো. মোক্তার শেখ (৫০)। তারা সবাই আশুলিয়ায় বসবাস করতেন। তবে তাদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি। র‌্যাব-৪ জানায়, গত ৬ মার্চ মো. রুমন হোসাইন নামের এক ব্যক্তির অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায় যে, ওই দিন বেলা ৩টার দিকে তার বাবা মো. আক্তার আলী বিশ্বাস তাদের বাসা আশুলিয়া হতে জিরাবো ফুফাতো ভাইয়ের বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। এর কিছু সময় পর তারা তার বাবার ফোন বন্ধ পান। পরে ফোনে না পেয়ে তারা তার ফুফাতো ভাইয়ের বাসায় ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের বাসায় খোঁজ নিয়েও কোনো সন্ধান পায় না। ওইদিন সন্ধ্যায় তার বাবার ফোন হতে তার ছেলে রুমন হোসাইনকে ফোন করে অজ্ঞাত ব্যক্তি জানায় তার বাব তাদের নিকট আটক আছে। তারা অপহৃতের নগ্ন ছবি তুলে রেখেছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে এক লাখ টাকা না দিলে তারা ভুক্তভোগীর নগ্ন ও আপত্তিকর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেবে। এমনকি টাকা না পেলে অপহৃতকে হত্যার হুমকিও দেয় তারা। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে, র‌্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দা দল ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে মাঠ পর্যায়ে গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। একই সঙ্গে আটককৃত আসামিদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও তাদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয় যে, তারা আশুলিয়া থানাধীন ধলপুর এলাকায় ভুক্তভোগীসহ অবস্থান করছে। পরে ৭ মার্চ র‌্যাব-৪, সিপিসি-২ এর একটি আভিযানিক দল আশুলিয়ার ধলপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মূলহোতাসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের হেফাজত থেকে অপহৃত ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়। র‌্যাব-৪ সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামিরা জানায় যায় যে, দীর্ঘদিন ধরে এই চক্রটি সাভার-আশুলিয়া অঞ্চলে কাজ করে আসছিল। প্রথমে এই চক্রের কয়েকজন মিলে সুনির্দিষ্ট টার্গেট ঠিক করে। তারপর একজন মহিলার মাধ্যমে তার সঙ্গে মিথ্যা সুসম্পর্ক তৈরির একপর্যায়ে মহিলা ভুক্তভোগীকে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য তাদের পূর্ব নির্ধারিত স্থানে ডেকে আনে। তারপর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি বাসায় নিয়ে গিয়ে ওঁৎ পেতে থাকা অপরাপর সহযোগীদের কাছে দেয়। একপর্যায়ে তারা ভিকটিমকে উলঙ্গ করে নগ্ন ভিডিও ধারণ করে। তারপর ভুক্তভোগীর ফোন দিয়ে তার পরিবারকে কল দিয়ে মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি করে ও একই সঙ্গে ভুক্তভোগীকে লাঠি দিয়ে প্রহার করে পরিবারকে শোনায়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী তার আত্মসম্মানের ভয়ে ও পারিবারিক মর্যাদার কারণে গোপনে মোটা অংকের টাকা দেয়। গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।