ঈদযাত্রা নির্বিঘœ করার নির্দেশ সেতুমন্ত্রীর

- আপডেট সময়ঃ ০৯:১১:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩
- / ১৪৩ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঈদযাত্রা নির্বিঘœ করতে সড়কে দায়িত্ব পালনকারী সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলো যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেটা সুচারুরূপে পালনের নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ রোববার বনানীতে বিআরটিএ’র প্রধান কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঈদ উপলক্ষে সড়কপথে যাত্রীসাধারণের যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘœ করার লক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। মন্ত্রী বলেন, যার যার যে দায়িতে তিনি যেভাবে প্রতিজ্ঞা করেছেন সেভাবে পালন করুন। এটা হলো আমার আপনাদের কাছে অনুরোধ। যতই আমরা অবকাঠামো নির্মাণ নিয়ে আলোচনা করি, সেটা খুবই স্বাভাবিক। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সেটা সম্ভব হয়েছে। উন্নয়ন অনেক হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে বড় ঘাটতি আমাদের শৃঙ্খলার। সড়কে সেটা কার্যকর হয়নি। পরিবহনেও হয়নি। আরও অনেক ছয় লেন বা আট লেন হবে পরিকল্পনা আছে। তবে ডিসিপ্লিন কীভাবে কার্যকর করতে পারা যাবে সেটাই সবচেয়ে চ্যালেঞ্জ। ডিসিপ্লিন থাকলে যানজট ও দুর্ঘটনা কমে যাবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন গতানুগতিক একটা মিটিং করে, বক্তৃতা দিয়ে যদি মনে হয় দায়িত্ব শেষ হয়ে গেছে তাহলে শৃঙ্খলা ফেরানো যাবে না। এখানে সবাই পরিকল্পনার কথা বললেন, কিন্তু গার্মেন্টস মালিকরা কি সেটা শুনবেন সেই গ্যারান্টি কোথায়। প্রতিবার এই নিয়ম চালু হয়। নির্দেশনা দেওয়া হয় কিন্তু পালন করেন কয়জন? খুব সহজে এটা বাস্তবায়ন করা যাবে না এটাই বাস্তবতা। ঈদে ভোগান্তি কমাতে ঢাকার প্রবেশ পথ বিশেষ নজরদারি করতে হাইওয়ে পুলিশ ও বিআরটিএ’কে নির্দেশনা দিয়েছি। নবীনগর ও চন্দ্রার যানজট নিয়ে মন্ত্রী নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন, সেখানে রাত পার হয়ে ভোর হয়। এরপর আনফিট গাড়ি থাকে, চালক অতিরিক্ত গাড়ি চালিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। এভাবেই সময় নষ্ট হয়। মন্ত্রী বলেন, আমরা এই কষ্টটা দূর করতে পারছি না। এই কষ্টটা আমারও আছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে প্রতি মিনিটে ১৬ জন রাস্তায় মারা যায়। সৌদি আরবে দুর্ঘটনায় ২৪ জনের মধ্যে ২০ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। আমাদের লোক মারা গেল কেউ তো সেটা নিয়ে কিছু বলে না। শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী ছাড়া। শুধু এখনকার ব্যাপার সবার চোখে পড়ে। যেভাবে দোষ দেওয়া হয় তাতে মনে হয় এদেশে সড়কে কিছুই হয়নি। এমনকি বজ্রপাতে প্রাণহানি হলেও সরকারকে দোষ দেওয়া হয়। গাজীপুর বিআরটি প্রকল্পকে ভোগান্তির অন্যতম স্থান উল্লেখ করে কাদের বলেন, বিআরটি প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা বললেও কিন্তু শেষ হয় না। যথেষ্ট মানুষকে ভোগান্তি দিচ্ছে। কত মানুষ বিদেশে যাবে অথচ মানুষ মিস করে বিমানের ফ্লাইট। ভিআইপি ও ক্ষমতাসীনরা ট্রাফিক আইন অমান্য করে বলে উষ্মা প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের। তাদের আইন মানাতে পুলিশের প্রতি কঠোর হতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, আইন আমরা অনেকেই মানি না। ঈদের সময় আমাদের অনেক ভিআইপি তারা রাস্তার রং সাইটে চলাচল করে। একটু জটলা দেখলেই রং সাইটে চলে যায়। এখন অসাধারণ মানুষটা যদি আইন না মানেন, সাধারণ মানুষের দোষ কী? প্রথমে অসাধারণদের আইন মানতে হবে। তিনি আরও বলেন, পুলিশও তাদের (ভিআইপি) ব্যাপারে এত উদাস কেন? আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কেন ভয় পায়? আপনাদের সহায়তায় তো ঢাকা সিটিতে আমরা মোটরসাইকেলের শৃঙ্খলা এনেছি। আবার দেখা যায় ১৫ থেকে ২০টা মোটরসাইকেলে নো হেলমেট, এরা হলো রাজনৈতিক তরুণ তুর্কি। এদের আবার পুলিশ কিছু বলে না, ভয় পায়। কেন ভয় পান? কেন ডিসিপ্লিন ভঙ্গের জন্য এদের ধরেন না? এক্সাম্পল সেট করুন। আমি দেখেছি পার হয়ে যাচ্ছে এদের কিছু বলছে না। এখন রাজনীতি করে বলে অথবা রুলিং পার্টির সংশ্লিষ্টতা আছে বলে ক্ষমতার দাপট দেখাবে, তিনজন ইউদাউট হেলমেট। এটা তো উচিত না। মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহজাহান খান এমপি, সড়ক ও সেতু সচিব এ বি এম আমান উল্লাহ নুরী, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব এনায়েত উল্লাহ, যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।