• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ
‘মুজিবনগর দিবস’ বাঙালির পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্তির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী শ্রম আইনের মামলায় ড. ইউনূসের জামিনের মেয়াদ বাড়ল জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় গুরুত্ব থাকবে জনস্বাস্থ্যেও: পরিবেশ মন্ত্রী অনিবন্ধিত অনলাইনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ: তথ্য প্রতিমন্ত্রী মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনায় বিকল্পভাবে পণ্য আমদানির চেষ্টা করছি: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী স্বাস্থ্যসেবায় অভূতপূর্ব অর্জন বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে: রাষ্ট্রপতি শান্তি আলোচনায় কেএনএফকে বিশ্বাস করেছিলাম, তারা ষড়যন্ত্র করেছে: সেনাপ্রধান বন কর্মকর্তার খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে কাজ করছে মন্ত্রণালয়: পরিবেশমন্ত্রী পুরান ঢাকার রাসায়নিক গুদাম: ১৪ বছর ধরে সরানোর অপেক্ষা ভাসানটেক বস্তিতে ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপন করা হবে : মেয়র আতিক

এসএসসি পরীক্ষার্থী বেড়েছে ৫০ হাজারের বেশি

Reporter Name / ৮৩ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :
এবারের এসএসসি ও সমামানের পরীক্ষায় ৫০ হাজার ২৯৫ জন পরীক্ষার্থী বেড়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা-২৩ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, এবছর মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১০ লাখ ২১ হাজার ১৯৭ জন এবং ১০ লাখ ৫০ হাজার ৯৬৫ জন ছাত্রী। এবার মোট কেন্দ্র ৩ হাজার ৮১০টি এবং মোট প্রতিষ্ঠান ২৯ হাজার ৭৯৮টি। তিনি বলেন, ২০২২ সালের তুলনায় ২৩ সালে মোট পরীক্ষার্থী বৃদ্ধি পেয়েছে ৫০ হাজার ২৯৫ জন। এর মধ্যে ছাত্রী বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৮ হাজার ৬০৯ জন। এবছর প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে ২০৭টি, কেন্দ্র বেড়েছে ২০টি। নারী পরীক্ষার্থী বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমাদের তো নারী শিক্ষার্থী বাড়ার বিষয়ে জানাতে গবেষণা করতে হবে, সেটি তো আমাদের নেই। আমি যদি সাধারণ ধারণা থেকে বলতে চাই, মেয়েরা এখন অনেক বেশি পড়ছে। পড়ার সুযোগ অনেক বেশি, সচেতনতা তৈরি হয়েছে, মেয়েদের সংখ্যা এখন অনেক বেশি বাড়ছে। কাজেই প্রতি বছরই হয়তো মেয়েদের সংখ্যার বাড়ার বিষয়টি দেখতে পাবো। একটা আশঙ্কা ছিল কোভিডের সময়ে নারী শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়ে। কারণ বাল্যবিয়েটা ক্লাস এইট, নাইন, টেনের সময়ে হয়। গত দুই-তিন বছর যখন পরীক্ষা নিয়ে কথা বলি, আপনাদের কিন্তু পরিসংখ্যান দিয়ে দেখিয়েছি। প্রত্যেক বছরের পরিসংখ্যান তার সঙ্গে তুলনা করলেও কোভিড সময়েও নারী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেনি। তিনি বলেন, আমাদের পক্ষ্যে বলা সম্ভব নয় বাল্যবিয়ে বেড়েছে কী বাড়েনি। কিন্তু আমাদের নারী পরিক্ষার্থী কিন্তু কমেনি। অর্থাৎ যদি তার বাল্যবিয়ে হয়েও থাকে সে হয়তো পড়াশোনা চালিয়ে গেছে। প্রতিবার নারী পরীক্ষার্থী বাড়ছে, এবছরও সেটি বেড়েছে। হয়তো বাল্যবিয়ে এখন কমেছে, মেয়েদের কর্মক্ষেত্র অনেক বেড়েছে। নানা ধরনের নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করেছেন। তার প্রতিফলন নিশ্চয়ই নারীদের ক্ষেত্রেও ঘটছে। চলতি বছরের আগস্টের মাঝামাঝি এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়ে মন্ত্রী বলেন, এইচএসসি পরীক্ষা পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসেই হচ্ছে। কিন্তু যেহেতু পূর্ণ নম্বরে পূর্ণ বিন্যাসে সব বিষয়েই পরীক্ষা হবে, তাই নির্বাচনী পরীক্ষা একটু পিছিয়ে ৩০ মে ঠিক করে দিয়েছি। আশা করছি, আগস্টের মাঝামাঝি সময়ের দিকে হয়তোবা পরীক্ষাটি নিতে পারবো। তিনি বলেন, ২০২৪ সালের এইচএইচসি পরীক্ষার বিষয়ে আমরা সবার সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেবো, পুনর্বিন্যাসে যাবো কি যাবো না? আমরা চাই পরীক্ষার সময়টা সঠিক জায়গায় নিয়ে আসতে, যতটুকু সম্ভব। এ বছরও চেষ্টা করেছিলাম সেটি, কিন্তু আগেরবার তো আমরা নভেম্বর-ডিসেম্বরের দিকে পরীক্ষা নিয়েছি। এবার হয়তো সেটি আগস্টে নিতে পারবো। আগামী বছর স্বাভাবিক সময়ে না হলেও যেন কাছে চলে আসতে পারি সেই চেষ্টা করবো। যদি প্রয়োজন হয় আগামী বছরের জন্যও একটি সিলেবাস পুনর্বিন্যাসের চেষ্টা করবো। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠু এবং নকলমুক্ত করতে আগামী এক মাস অর্থাৎ ২৬ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে এ পরীক্ষা হলেও করোনার কারণে গত বছরের মতো এ বছরও যথাসময় পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে এবার সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পূর্ণ নম্বরে এবং সময়ে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩। আগামী ৩০ এপ্রিল শুরু হতে যাওয়া ২০২৩ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পরীক্ষা চলাকালীন ফেসবুক ও মোবাইল ফোনে যে কোনো ধরনের গুজব, অনৈতিকভাবে তথ্য সরবরাহ বা আর্থিক লেনদেন নজরদারিতে রাখা হবে। তিনি বলেন, পরীক্ষা ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে কোনো ধরনের গুজব বা অপতৎপরতা সৃষ্টিকারী চক্রগুলোর কার্যক্রম বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারের জোর নজরদারি থাকবে। প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা পরীক্ষার্থীর কাছে উত্তর সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিদের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জেলা প্রশাসন কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যদি কোনো মোবাইল নম্বরে একাধিকবার একই অংকের অর্থ সন্দেহজনকভাবে লেনদেন হয়, তবে সংশ্লিষ্ট এজেন্টকে নিকটস্থ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করতে হবে। এ বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা সকাল ১০টায় শুরু হয়ে শেষ হবে দুপুর ১টায়। পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থী বিলম্বে উপস্থিত হলে ওই পরীক্ষার্থীর নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্বের কারণ লিখিতভাবে রেজিস্টার বইয়ে উল্লেখ করে ওইদিনই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন আকারে জমা দিতে হবে। এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা সুষ্ঠু, সুন্দর ও প্রশ্নফাঁসের গুজবমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আগামী ২৬ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত সারাদেশে সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। পাবলিক পরীক্ষা নিয়ে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ অন্য সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্নফাঁসের গুজব সৃষ্টিকারীদের পেজ দ্রুত বন্ধের জন্য ফেসবুকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিটিআরসি প্রয়োজনীয় যোগাযোগ রাখবে। পরীক্ষাকেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন একটি সাধারণ (ফিচার) ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। কেন্দ্র সচিব ব্যতীত পরীক্ষাকেন্দ্রে অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না। অননুমোদিত ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ট্রেজারি-থানা থেকে প্রশ্নপত্র গ্রহণ ও পরিবহন কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, শিক্ষক, কর্মচারীরা কোনো ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। প্রশ্নপত্র পরিবহন কাজে কালো কাঁচযুক্ত মাইক্রোবাস বা এ ধরনের কোনো যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না। প্রত্যেক কেন্দ্রের জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন ট্যাগ অফিসার নিয়োগ দেওয়া হবে। ট্যাগ অফিসার ট্রেজারি, থানা হেফাজত থেকে কেন্দ্র সচিবসহ প্রশ্নপত্র বের করে পুলিশ প্রহরায় সব সেটের প্রশ্ন কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট পূর্বে প্রশ্নের সেট কোড ঘোষণা করা হবে। সে অনুযায়ী কেন্দ্র সচিব, ট্যাগ অফিসার ও পুলিশ কর্মকর্তার স্বাক্ষরে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট বিধি অনুযায়ী খোলা হবে। পরীক্ষা চলাকালীন কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের মোবাইল ফোনের সুবিধাসহ অনুমতিবিহীন কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। এ-সংক্রান্ত নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হলে, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। ডা. দীপু মনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস থেকে ২৬৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঝুঁকিপূর্ণ বলে তালিকা করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন জায়গায় ভবন চিহ্নিত হচ্ছে। যেখানেই আমাদের কোনো ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হবে, যতো দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নেবো। কোনো ভবন হয়তো নতুন করে তৈরি করতে হবে, আবার কোনোটা মেরামত করতে হতে পারে। যেখানে নতুন করতে হবে সেখানে নতুন করবো। কোনোভাবেই জীবন নিয়ে ঝুঁকি নেওয়ার সুযোগ নেই। ভবনগুলো নির্মাণের সময় আইন না মানার বিষয়ে দীপু মনি বলেন, যে দেশে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর ২১ বছরে কোনো মামলা করা যায়নি। দেশটা এমন বিনা বিচারের দেশে পরিণত হয়েছিল। সেই দেশে তো বিল্ডিং কোড মানা অনেক পরের কথা। কাজেই আমাদের অনেক ভবনই হয়তো এমন সময়ে তৈরি, যখন কেউ আইনই মানেনি। এ দেশটা তো তখন আইনের শাসনের দেশ ছিল না। অপশাসনে জর্জরিত একটা দেশ ছিল। আজকে সেই দেশটা একটা গণতান্ত্রিক দেশ। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, গতকালই (সোমবার) আমরা গণতন্ত্র চর্চার একটা অসামান্য সাফল্যের অংশ দেখতে পেয়েছি। আমাদের বিদায়ী রাষ্ট্রপতি সফলভাবে দুটি মেয়াদ সম্পন্ন করে বিদায় নিলেন। কি সুন্দর বিদায়। নতুন রাষ্ট্রপতি তার দায়িত্ব গ্রহণ করলেন। এখন আমরা গণতন্ত্রের চর্চা যেমন দেখতে পাচ্ছি, তেমনি অন্যান্য ক্ষেত্রেও আইনের প্রয়োগ দেখতে পাচ্ছি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকবিভাগের সচিব সোলেমান খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category