ঢাকা, বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ই-পেপার

কালুখালীতে কৃষি বিপ্লবের নেপথ্যে পূর্ণিমা হালদার

দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৬:২১:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৮ বার পড়া হয়েছে

আদম আলী, রাজবাড়ী প্রতিনিধি :

দেশের অর্থনীতির বড় অংশ কৃষি নির্ভর। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে আরও বিকশিত হচ্ছে এই খাত। হচ্ছে আধুনিকায়ন। এর ফলে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের গ্রামে গ্রামে ঘটছে নীরব কৃষি বিপ্লব। কালুখালীর বিভিন্ন এলাকার পাকা বাড়ীর ছাদেও জনপ্রিয় হচ্ছে ছাদ বাগান।

স্বাচ্ছন্দ্য, অনায়াস উদ্দীপনা, উদ্যম ও শক্তি নিয়ে দিনরাত মাঠে পরিশ্রম করে অর্থনীতির চাকা ঘোরাচ্ছেন প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা। এতে কৃষি বিপ্লবে আসছে গতিশীলতা। অনেকাংশেই চাঙ্গা হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি। তৃণমূল অর্থনীতির কাঠামো মজবুতের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতেও অবদান রাখছে এই কৃষি। মাঠের উৎপাদনে অনেক গ্রাম এখন পরিণত হয়েছে আঞ্চলিক শহরে।

কালুখালীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপজেলা কৃষি অফিসার পূর্ণিমা হালদার জানান, দেশে কৃষি কর্মকাণ্ডে এসেছে বিরাট গতিশীলতা। বিভিন্নস্থানে এখন এক জমিতে চার ফসলী শস্য আবাদের চেষ্টা চলছে। জোর দেওয়া হয়েছে শস্যের নিবিড়তা বৃদ্ধিতে। সে জন্য সাথী ফসল উৎপাদনের ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে।

সার্বিক কৃষি পরিসংখ্যান অনুযায়ী কালুখালীর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নেই, পেয়াজ, ধান,পাট, গম, ভুট্টাসহ মোট খাদ্যশস্য উৎপাদনে দেশের মধ্যে একটি অবস্থান তৈরী করে নিয়েছে এই উপজেলা। একই জমিতে পেঁয়াজ, রসুন, কালিজিরা, মশুরি, মটরসহ বছরে একাধিক ফসল চাষে দেশের মধ্যে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে আমাদের উপজেলা। এছাড়া বোয়ালিয়া, মদাপুর ইউনিয়নে তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করতে নিরলসভাবে কাজ করছেন পূর্ণিমা হালদার।

কালুখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অভিমত, মাঠ পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন, মনিটরিং ও মূল্যায়ন, কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচি প্রণয়ন, উপকরণের চাহিদা পূরণ ও মনিটরিং আরও জোরদার করতে হবে। এবং এটা করার পরামর্শ পূর্ণিমা হালদারের। কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া, বোয়ালিয়া, কালিকাপুর,মাজবাড়ী,মদাপুর,সাওরাইল,মৃগী ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি ব্লক রয়েছে। সবখানে সমানতালে জোরদার হলে আরও বহুগুণে বেড়ে যাবে কৃষি উৎপাদন।

জলাবদ্ধতার নিরসন, সারফেস ওয়াটার ডেভলপমেন্ট, ক্ষুদ্র সেচ, রেগুলেটর ও জলকপাট নির্মাণ এবং পাম্পিং মেশিন স্থাপনে কৃষকরা উপকৃত হয়েছে। এসকল বহুমুখী প্রকল্পে কালুখালীর বিভিন্ন এলাকায় বেশকিছু অনাবাদী জমি আবাদের আওতায় এসেছে। বোরো, রোপা, আউশ, আমন, পাট, রবিশস্য ও সবজিসহ সব ফসলের আবাদ ও উৎপাদন বেড়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশি। মানুষ এক ইঞ্চি জমিও ফেলে রাখছে না। বাড়ির উঠানে, আনাচে কানাচে সবজি উৎপাদন হচ্ছে মাঠের বাইরেও। কৃষকের পাশাপাশি কৃষকের গৃহিণীরাও এখন পুরাদমে কৃষি উৎপাদনে সময় ব্যয় করছেন কালুখালী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।

কৃষি কর্মকর্তা পূর্ণিমা হালদারের অভিমত, কৃষিখাতে সরকারের বহুমুখী পদক্ষেপে দেশে কৃষিজাত আয় ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। কৃষিতে আসছে অভাবনীয় সাফল্য। তবে কৃষকের স্বার্থে কৃষিপণ্যের বাজারজাতকরণ সহজ ও উপযুক্ত মূল্যপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা দেওয়াসহ সমস্যাদির সমাধান হলে কৃষিতে শতভাগ সাফল্য আনা সম্ভব।

এ বিষয়ে একটি প্রশ্নের জবাবে কৃষি কর্মকর্তা বলেছেন, বর্তমানে কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ফলে প্রতি বিঘা জমিতে ২৫ মনের অধিক ধান আবাদ সম্ভব হচ্ছে। নতুন নতুন জাত মাঠে ছড়িয়ে দিতে কৃষি বিজ্ঞানীরা নিরলস পরিশ্রম করছেন। কৃষিতে সরকার সারা দেশে কৃষি গবেষণাগার তৈরি ও গবেষণার কাজে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে কৃষিতে এই বিপ্লব ঘটিয়ে চলেছেন।

এ বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, কৃষি ও কৃষক বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। সরকার কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কৃষকের ভাগ্যোন্নয়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তাই অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এই খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।

তিনি বলেন, কৃষি ও কৃষকের অকৃত্রিম বন্ধু হচ্ছেন সরকার ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কৃষি মন্ত্রণালয়। তাই দেশের কৃষিখাতের উন্নয়নে নানামুখী পরিকল্পনা করছেন বর্তমান সরকার। বর্তমানে কালুখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পূর্ণিমা হালদারের যোগদানের পর সেই পথ অনুসরণ করে কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়ে চলেছেন প্রান্তিক কৃষক।

কৃষিতে অবদান রাখলেও কালুখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পূর্ণিমা হালদারের সরকারী গাড়ী না থাকায় কালুখালীর চরাঞ্চলে কৃষকদের দৌঁড় গোড়ায় পৌঁছাতে বেশ বেগ পোহাতে হচ্ছে, অটো গাড়ী ভাড়া করে যেতে হয় গ্রামীন এলাকায় যেটা খুবই কষ্ট সাধ্য একজন নারী অফিসারের জন্য। সরকারী বরাদ্দের গাড়ী থাকলে কালুখালী উপজেলা রাজবাড়ী জেলার মধ্যে শেষ্ঠ হবে কৃষিতে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

কালুখালীতে কৃষি বিপ্লবের নেপথ্যে পূর্ণিমা হালদার

আপডেট সময়ঃ ০৬:২১:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আদম আলী, রাজবাড়ী প্রতিনিধি :

দেশের অর্থনীতির বড় অংশ কৃষি নির্ভর। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে আরও বিকশিত হচ্ছে এই খাত। হচ্ছে আধুনিকায়ন। এর ফলে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের গ্রামে গ্রামে ঘটছে নীরব কৃষি বিপ্লব। কালুখালীর বিভিন্ন এলাকার পাকা বাড়ীর ছাদেও জনপ্রিয় হচ্ছে ছাদ বাগান।

স্বাচ্ছন্দ্য, অনায়াস উদ্দীপনা, উদ্যম ও শক্তি নিয়ে দিনরাত মাঠে পরিশ্রম করে অর্থনীতির চাকা ঘোরাচ্ছেন প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা। এতে কৃষি বিপ্লবে আসছে গতিশীলতা। অনেকাংশেই চাঙ্গা হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি। তৃণমূল অর্থনীতির কাঠামো মজবুতের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতেও অবদান রাখছে এই কৃষি। মাঠের উৎপাদনে অনেক গ্রাম এখন পরিণত হয়েছে আঞ্চলিক শহরে।

কালুখালীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপজেলা কৃষি অফিসার পূর্ণিমা হালদার জানান, দেশে কৃষি কর্মকাণ্ডে এসেছে বিরাট গতিশীলতা। বিভিন্নস্থানে এখন এক জমিতে চার ফসলী শস্য আবাদের চেষ্টা চলছে। জোর দেওয়া হয়েছে শস্যের নিবিড়তা বৃদ্ধিতে। সে জন্য সাথী ফসল উৎপাদনের ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে।

সার্বিক কৃষি পরিসংখ্যান অনুযায়ী কালুখালীর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নেই, পেয়াজ, ধান,পাট, গম, ভুট্টাসহ মোট খাদ্যশস্য উৎপাদনে দেশের মধ্যে একটি অবস্থান তৈরী করে নিয়েছে এই উপজেলা। একই জমিতে পেঁয়াজ, রসুন, কালিজিরা, মশুরি, মটরসহ বছরে একাধিক ফসল চাষে দেশের মধ্যে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে আমাদের উপজেলা। এছাড়া বোয়ালিয়া, মদাপুর ইউনিয়নে তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করতে নিরলসভাবে কাজ করছেন পূর্ণিমা হালদার।

কালুখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অভিমত, মাঠ পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন, মনিটরিং ও মূল্যায়ন, কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচি প্রণয়ন, উপকরণের চাহিদা পূরণ ও মনিটরিং আরও জোরদার করতে হবে। এবং এটা করার পরামর্শ পূর্ণিমা হালদারের। কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া, বোয়ালিয়া, কালিকাপুর,মাজবাড়ী,মদাপুর,সাওরাইল,মৃগী ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি ব্লক রয়েছে। সবখানে সমানতালে জোরদার হলে আরও বহুগুণে বেড়ে যাবে কৃষি উৎপাদন।

জলাবদ্ধতার নিরসন, সারফেস ওয়াটার ডেভলপমেন্ট, ক্ষুদ্র সেচ, রেগুলেটর ও জলকপাট নির্মাণ এবং পাম্পিং মেশিন স্থাপনে কৃষকরা উপকৃত হয়েছে। এসকল বহুমুখী প্রকল্পে কালুখালীর বিভিন্ন এলাকায় বেশকিছু অনাবাদী জমি আবাদের আওতায় এসেছে। বোরো, রোপা, আউশ, আমন, পাট, রবিশস্য ও সবজিসহ সব ফসলের আবাদ ও উৎপাদন বেড়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশি। মানুষ এক ইঞ্চি জমিও ফেলে রাখছে না। বাড়ির উঠানে, আনাচে কানাচে সবজি উৎপাদন হচ্ছে মাঠের বাইরেও। কৃষকের পাশাপাশি কৃষকের গৃহিণীরাও এখন পুরাদমে কৃষি উৎপাদনে সময় ব্যয় করছেন কালুখালী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।

কৃষি কর্মকর্তা পূর্ণিমা হালদারের অভিমত, কৃষিখাতে সরকারের বহুমুখী পদক্ষেপে দেশে কৃষিজাত আয় ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। কৃষিতে আসছে অভাবনীয় সাফল্য। তবে কৃষকের স্বার্থে কৃষিপণ্যের বাজারজাতকরণ সহজ ও উপযুক্ত মূল্যপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা দেওয়াসহ সমস্যাদির সমাধান হলে কৃষিতে শতভাগ সাফল্য আনা সম্ভব।

এ বিষয়ে একটি প্রশ্নের জবাবে কৃষি কর্মকর্তা বলেছেন, বর্তমানে কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ফলে প্রতি বিঘা জমিতে ২৫ মনের অধিক ধান আবাদ সম্ভব হচ্ছে। নতুন নতুন জাত মাঠে ছড়িয়ে দিতে কৃষি বিজ্ঞানীরা নিরলস পরিশ্রম করছেন। কৃষিতে সরকার সারা দেশে কৃষি গবেষণাগার তৈরি ও গবেষণার কাজে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে কৃষিতে এই বিপ্লব ঘটিয়ে চলেছেন।

এ বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, কৃষি ও কৃষক বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। সরকার কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কৃষকের ভাগ্যোন্নয়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তাই অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এই খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।

তিনি বলেন, কৃষি ও কৃষকের অকৃত্রিম বন্ধু হচ্ছেন সরকার ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কৃষি মন্ত্রণালয়। তাই দেশের কৃষিখাতের উন্নয়নে নানামুখী পরিকল্পনা করছেন বর্তমান সরকার। বর্তমানে কালুখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পূর্ণিমা হালদারের যোগদানের পর সেই পথ অনুসরণ করে কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়ে চলেছেন প্রান্তিক কৃষক।

কৃষিতে অবদান রাখলেও কালুখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পূর্ণিমা হালদারের সরকারী গাড়ী না থাকায় কালুখালীর চরাঞ্চলে কৃষকদের দৌঁড় গোড়ায় পৌঁছাতে বেশ বেগ পোহাতে হচ্ছে, অটো গাড়ী ভাড়া করে যেতে হয় গ্রামীন এলাকায় যেটা খুবই কষ্ট সাধ্য একজন নারী অফিসারের জন্য। সরকারী বরাদ্দের গাড়ী থাকলে কালুখালী উপজেলা রাজবাড়ী জেলার মধ্যে শেষ্ঠ হবে কৃষিতে।