ঢাকা, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫ | ই-পেপার

কোনো কিছুই ড. ইউনূসের নিয়ন্ত্রণে নেই : কর্নেল অলি

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময়ঃ ০২:৩৯:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৩২ বার পড়া হয়েছে

লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমদ বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস-ও হয়ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-র মতো দেশ ছাড়তে হবে—কারণ এখন দেশের বেশ কিছু কিছু বিষয় তার নিয়ন্ত্রণে নেই। একটি অনলাইন পোর্টালে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছেন, সিভিল প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ—কোনো কিছুই কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণে নেই এবং পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির পথে রয়েছে।

কর্নেল অলি বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অনিয়ম ও সহিংসতার ঘটনা বেড়ে চলেছে; “যত্রতত্র খুন হচ্ছে, যে যখন ইচ্ছা রাস্তা ব্লক করে বসে পড়ছে, দাবি-দাওয়া আদায় করছে। পরিস্থিতি মগেরমুলুকে পরিণত হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে গোলমাল বৃদ্ধি পেয়েছে এবং শরণার্থী (রিফিউজি) সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে—যা গভীর উদ্বেগের বিষয়।

অলি মন্তব্য করেন, “এখানে হাসি-মজায় দেশ চালানো যাবে না; কঠোরভাবে সমস্যার সমাধান করতে হবে। দেশকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে কার্যকর নীতি গ্রহণ করা জরুরি, আর তা ড. ইউনূস করতে পারছেন না।” তিনি অভিযোগ করেন, উপদেষ্টা নিজের টিমে এনজিও‑জোট ও বিভিন্ন নন‑গভর্নমেন্টাল গোষ্ঠীকে জোড় দিয়েছেন—যাদের সরকারের মন্ত্রণালয় চালানোর বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই। ফলে বাস্তব প্রশাসনিক দক্ষতা কমে গিয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

এলডিপি সভাপতি দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকট নিয়েও সরাসরি আক্রমণ করেন। বলেন, “অনেক ব্যাংক বন্ধ হচ্ছে, নিরীহ ব্যাংক কর্মচারীরাও চাকরি হারাচ্ছেন। মানুষের জীবিকা ও কর্মসংস্থানের প্রশ্নে সরকার পর্যাপ্ত উদ্যোগ নিচ্ছে না। অর্থ মন্ত্রণালয় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।” তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আপনি বিদেশি শীর্ষ মঞ্চে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আন্তর্জাতিকভাবে কী করছেন—সব দেখাচ্ছেন; কিন্তু নিজের জনগণের দুর্দশা দেখছেন না।”

অলি আরও বলেন, দেশের যাঁরা সম্পদ লুণ্ঠন করেছে অথবা লুণ্ঠনে সহযোগিতা করেছে, যাঁরা বিদেশি প্রচেষ্টার অংশ হয়ে ভারতীয় স্বার্থ রক্ষা করেছে—এদের রাজনীতিতে অংশ নেওয়া উচিত না। “এই ধরণের লোকজনকে রাজনীতিতে আসতে দেওয়া হবে না; তারা জনগণের রক্তচোষা,” তিনি দাবি করেন।

তবে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কর্নেল অলির মতো মন্তব্যগুলো আঞ্চলিক ও জাতীয় স্তরে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন দৃঢ় আক্রমণাত্মক বক্তব্য সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর কৌশল হলেও তা বাস্তব নীতিগত পরিবর্তনে পরিণত হবে কি না—সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। সরকারি পক্ষ থেকে এবিষয়ে এখনো কোনো রেসপন্স পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় ও জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক সূত্র জানায়, সরকারের প্রতি এমন অভিযোগ তদন্তের বিষয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো তাদের দায়িত্ব কৃত্তিমভাবে পালন করছে—তবে সম্মিলিতকরণ ও স্বচ্ছতা বাড়ালে পরিস্থিতি দ্রুত স্থিতিশীল করা যেতে পারে।

রাজনৈতিক সহস্রাব্দের এ অস্থির সময়ে রাজনৈতিক অধিদফতর ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত কাজে নেমে নীতি প্রয়োগ ও সংকট মোকাবিলার উদ্যোগ নিতে উভয়পক্ষেরই আহ্বান জানিয়েছেন কিছু বিশ্লেষক।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

কোনো কিছুই ড. ইউনূসের নিয়ন্ত্রণে নেই : কর্নেল অলি

আপডেট সময়ঃ ০২:৩৯:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমদ বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস-ও হয়ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-র মতো দেশ ছাড়তে হবে—কারণ এখন দেশের বেশ কিছু কিছু বিষয় তার নিয়ন্ত্রণে নেই। একটি অনলাইন পোর্টালে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছেন, সিভিল প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ—কোনো কিছুই কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণে নেই এবং পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির পথে রয়েছে।

কর্নেল অলি বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অনিয়ম ও সহিংসতার ঘটনা বেড়ে চলেছে; “যত্রতত্র খুন হচ্ছে, যে যখন ইচ্ছা রাস্তা ব্লক করে বসে পড়ছে, দাবি-দাওয়া আদায় করছে। পরিস্থিতি মগেরমুলুকে পরিণত হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে গোলমাল বৃদ্ধি পেয়েছে এবং শরণার্থী (রিফিউজি) সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে—যা গভীর উদ্বেগের বিষয়।

অলি মন্তব্য করেন, “এখানে হাসি-মজায় দেশ চালানো যাবে না; কঠোরভাবে সমস্যার সমাধান করতে হবে। দেশকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে কার্যকর নীতি গ্রহণ করা জরুরি, আর তা ড. ইউনূস করতে পারছেন না।” তিনি অভিযোগ করেন, উপদেষ্টা নিজের টিমে এনজিও‑জোট ও বিভিন্ন নন‑গভর্নমেন্টাল গোষ্ঠীকে জোড় দিয়েছেন—যাদের সরকারের মন্ত্রণালয় চালানোর বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই। ফলে বাস্তব প্রশাসনিক দক্ষতা কমে গিয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

এলডিপি সভাপতি দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকট নিয়েও সরাসরি আক্রমণ করেন। বলেন, “অনেক ব্যাংক বন্ধ হচ্ছে, নিরীহ ব্যাংক কর্মচারীরাও চাকরি হারাচ্ছেন। মানুষের জীবিকা ও কর্মসংস্থানের প্রশ্নে সরকার পর্যাপ্ত উদ্যোগ নিচ্ছে না। অর্থ মন্ত্রণালয় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।” তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আপনি বিদেশি শীর্ষ মঞ্চে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আন্তর্জাতিকভাবে কী করছেন—সব দেখাচ্ছেন; কিন্তু নিজের জনগণের দুর্দশা দেখছেন না।”

অলি আরও বলেন, দেশের যাঁরা সম্পদ লুণ্ঠন করেছে অথবা লুণ্ঠনে সহযোগিতা করেছে, যাঁরা বিদেশি প্রচেষ্টার অংশ হয়ে ভারতীয় স্বার্থ রক্ষা করেছে—এদের রাজনীতিতে অংশ নেওয়া উচিত না। “এই ধরণের লোকজনকে রাজনীতিতে আসতে দেওয়া হবে না; তারা জনগণের রক্তচোষা,” তিনি দাবি করেন।

তবে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কর্নেল অলির মতো মন্তব্যগুলো আঞ্চলিক ও জাতীয় স্তরে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন দৃঢ় আক্রমণাত্মক বক্তব্য সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর কৌশল হলেও তা বাস্তব নীতিগত পরিবর্তনে পরিণত হবে কি না—সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। সরকারি পক্ষ থেকে এবিষয়ে এখনো কোনো রেসপন্স পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় ও জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক সূত্র জানায়, সরকারের প্রতি এমন অভিযোগ তদন্তের বিষয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো তাদের দায়িত্ব কৃত্তিমভাবে পালন করছে—তবে সম্মিলিতকরণ ও স্বচ্ছতা বাড়ালে পরিস্থিতি দ্রুত স্থিতিশীল করা যেতে পারে।

রাজনৈতিক সহস্রাব্দের এ অস্থির সময়ে রাজনৈতিক অধিদফতর ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত কাজে নেমে নীতি প্রয়োগ ও সংকট মোকাবিলার উদ্যোগ নিতে উভয়পক্ষেরই আহ্বান জানিয়েছেন কিছু বিশ্লেষক।