ঘুমচোখে ছিলেন বাসচালক, ৩৩ ঘণ্টায়ও নেননি বিশ্রাম

- আপডেট সময়ঃ ০৮:২৯:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩
- / ১৬০ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক :
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কুতুবপুর এলাকায় পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়েতে চাকা ফেটে বাস খাদে পড়ে ১৯ যাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। দীর্ঘ ক্লান্তির কারণেই চালক বাসটির নিয়ন্ত্রণ হারান বলে জানিয়েছে শিবচর হাইওয়ে পুলিশ। শিবচর হাইওয়ে পুলিশের ওসি আবু নাঈম মো. মোফাজ্জেল হক বলেন, প্রাথমিকভাবে জেনেছি, ইমাদ পরিবহনের বাসের চালক জাহিদ হাসান দীর্ঘ ৩৩ ঘণ্টা ধরে গাড়ি চালিয়ে ক্লান্ত ছিলেন। তবুও বিশ্রাম না নিয়েই তিনি গাড়ি চালাচ্ছিলেন। সকালে ঘুমচোখে বাস চালাচ্ছিলেন। এ কারণে বাসের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এতেই ঘটে গেছে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এদিকে এ ঘটনায় পরিবহন মালিকসহ অজ্ঞাতনামাদের নামে মামলা দিয়েছে পুলিশ। গত রোববার রাতে শিবচর থানায় মামলাটি করেন শিবচর হাইওয়ে পুলিশের সার্জেন্ট জয়ন্ত সরকার। শিবচর থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন জানান, গত রোববার ভোরে খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। বাসটির যান্ত্রিক ত্রুটি ও বেপরোয়া গতির কারণে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা হয়েছে উল্লেখ করে শিবচর থানায় ইমাদ পরিবহন কর্তৃপক্ষসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা হয়। এদিকে দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি। সোমবার সকালে শিবচরের এক্সপ্রেসওয়ের দুর্ঘটনাস্থলে আসে তদন্ত কমিটি। মাদারীপুর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পল্লব কুমার হাজরার নেতৃত্বে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির সদস্য মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান ফকির, বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক শাহনেওয়াজ হাসানাত-ই-রাব্বি, মাদারীপুর বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল হোসেন ছাড়াও বুয়েটের একটি প্রতিনিধি দল কার্যক্রম শুরু করেছে। কমিটি প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় দোকানদারসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়াও দুর্ঘটনাকবলিত বাস, হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করে তদন্ত কমিটি। দুই কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসক। তদন্ত কমিটির প্রধান পল্লব হাজরা বলেন, তদন্ত কমিটি কার্যক্রম শুরু করেছে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করার চেষ্টা হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমরা আমাদের প্রতিবেদন জমা দেব। উল্লেখ্য, গত রোববার ভোর রাতে খুলনা থেকে যাত্রী নিয়ে ইমাদ পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা-মেট্রো-ব-১৫-৩৩৪৮) ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। বাসটি গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়া থেকে ১৫ জন যাত্রী তোলে। বাসটি পদ্মা সেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর সীমানা এলাকায় এলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। বাসটি এক্সপ্রেস হাইওয়ের নিচের আন্ডারপাসের গাইড ওয়ালের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ সময় বাসটির একটি অংশ আন্ডারপাসের ওপর এবং অন্য অংশ এক্সপ্রেসওয়ের ঢালুতে ঝুলে ছিল। ঘটনাস্থলেই গাড়ির মধ্য থেকে ১৪ জনের লাশ বের করা হয়। শিবচর হাসপাতালে মারা যায় তিনজন এবং ঢাকাতে আরও দুইজনসহ মোট ১৯ জন মারা যায়।