চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংর্ঘ : খুলিহীন মামুনের জ্ঞান ফিরেছে , সায়েম এখনো অচেতন

- আপডেট সময়ঃ ০৭:২৪:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ২৯ বার পড়া হয়েছে
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের প্রায় ৪ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও জ্ঞান ফিরেনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র ইমতিয়াজ আহমেদ সায়েমের। গত ৩১ আগস্ট শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসীর মধ্যকার সংঘাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তিনি গুরুতর আহত হন। অন্যদিকে অস্ত্রোপচারের পর জ্ঞান ফিরায় খুলিহীন মাথা নিয়ে সমাজতত্ত্ব বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র মামুন মিয়াকে কেবিনে রাখা হয়েছে। খুলি না থাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে মাথায় লিখে দেওয়া হয়েছে ‘হাড় নেই, চাপ দিবেন না’, যা রাত থেকে ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সায়েম ও মামুন বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে। আঘাতের পর পার্কভিউ হাসাপাতালে আনা হলে চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার করে সায়েমকে আইসিইউতে রাখেন। এরপর থেকে প্রায় ৪ দিন পেরিয়ে গেলেও জ্ঞান ফিরেনি তার।
সায়েমের সঙ্গে একই সংঘাতে আহত হয়েছেন সমাজতত্ত্ব বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র মামুন মিয়া। তার মাথার খুলি খুলে রাখা হলেও, অস্ত্রোপচারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জ্ঞান ফিরেছে। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় বর্তমানে খুলিহীন মাথা নিয়ে তাকে কেবিনে রাখা হয়েছে। খুলি না থাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে মাথায় লিখে দেওয়া হয়েছে ‘হাড় নেই, চাপ দিবেন না’, যা গতকাল রাত থেকে ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
মামুনের বড় ভাই টাঙ্গাইলে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাসুদ রানা জানান, মামুনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। সে কথা বলতে পারছে। তাকে কেবিনে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, সায়েমের সুস্থতার অপেক্ষায় আইসিইউ ইউনিটের বাহিরে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন মা শাহনাজ আমির ও বাবা আমির হোসেন। ছেলে আহত হওয়ার খবর শুনে গত সোমবার ভোরে বগুড়া থেকে চট্টগ্রামে ছুটে এসেছেন তারা। এরপর থেকেই অপেক্ষারত অবস্থায় আছেন আইসিইউ’র সামনে।
ইমতিয়াজ সায়েমের মা শাহনাজ আমির বলেন, আল্লাহর কাছে দোয়া করছি, আমার ছেলেকে যাতে সুস্থ-স্বাভাবিকভাবে আমার কোলে ফিরিয়ে দেন। চিকিৎসকরা আমাদের আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন। তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে আমাদের জানাচ্ছেন। তার অবস্থা এখনও অপরিবর্তনীয়।
সায়েমের সঙ্গে সর্বশেষ কি কথা হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার দিন দুপুর ১ টা ৫৬ পর্যন্ত আমার ছেলের সঙ্গে কথা বলেছি। সে আমাকে বললো মেডিক্যালে যাচ্ছে। আমি তাকে মেডিক্যালে থাকতে বলেছিলাম। পরে তিনটার দিকে শুনতে পেলাম সে আহত হয়েছে। রক্ত দরকার।
এ বিষয়ে পার্কভিউ হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এটিএম রেজাউল করিম বলেন, সায়েমের মাথায় ধারালো অস্ত্রের গভীর ক্ষত ছিল। খুলির ভেতরের অংশ ও রক্তনালী ছিঁড়ে গেছে। এখন পর্যন্ত তার জ্ঞান ফিরেনি। তবে মামুনের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। তাকে কেবিনে দেওয়া হয়েছে। আশা করছি সে আরও তাড়াতাড়ি সুস্থ হবে। এখন সুস্থ হলেও মাথার খুলিটি প্রতিস্থাপন করতে মাস দেড়েক সময় লাগবে।
এর আগে গত ৩০ আগস্ট রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসীর মধ্যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে ৩১ আগস্ট দিনভর দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় দুই পক্ষের মধ্যে। এতে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত। এদের মধ্যে তিনজনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় আইসিইউতে রাখা হয়। পরে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।