ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ই-পেপার

জঙ্গি-মাদক-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলতে ইমামদের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ১০:৪৮:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৩
  • / ১৩১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
মসজিদের ইমাম-খতিবসহ আলেম ওলামাদের বয়ানে জঙ্গিবাদ, মাদক, দুর্নীতি, নারীর প্রতি সহিংসতার বিষয়ে আরও বেশি করে আলোচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চতুর্থ পর্যায়ে নবনির্মিত আরও ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধনকালে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মসজিদের ইমাম-খতিব, আলেম-ওলামাদেরকে সাধারণ মানুষ শ্রদ্ধার চোখে দেখেন। কাজেই আপনাদের কথার গুরুত্ব রয়েছে। আমাদের যেসব সমস্যাগুলো দেখা দিচ্ছে- যেমন মাদকাসক্তি, একটা মাদকাসক্ত ছেলে-মেয়ে যদি পরিবারে থাকে তবে সেই পরিবারটা একেবারে ধ্বংসের পথে চলে যায়। যাতে কেউ এই মাদকাসক্ত না হয়। তিনি বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা, জঙ্গিবাদ, গুজব ছড়ানো, গৃহকর্মী বা অধীনস্থদের প্রতি অমানবিক আচরণ করা, দুর্নীতি ইত্যাদি সমস্যা সমাজ থেকে দূর করার জন্য মসজিদে যখন আপনারা খুতবা দেন তখন যদি আপনারা এই বিষয়গুলো সম্পর্কে মানুষকে আরও বেশি করে বলেন, বোঝান- তাহলে কিন্তু মানুষ এটা গ্রহণ করবে। বিশেষ করে জুমার নামাজের পূর্বে যে খুতবা দেওয়া হয় সেখানে এই বিষয়গুলো মানুষের সামনে ভালোভাবে তুলে ধরা দরকার। ইমামদের বয়ানে জঙ্গিবাদ বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাঝে মাঝে আমাদের কোমলমতি ছেলেদের বিভ্রান্তির পথে নিয়ে যায়। সেদিকে যাতে তাদের নিয়ে যেতে না পারে, তারা যেন জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়। ইসলাম ধর্ম যে শান্তির ধর্ম আর মানুষ খুন করলে কখনো বেহেশতে যাওয়া যায় না, নিরীহ মানুষকে খুন করলে বরং দোযখের আগুনে পুড়তে হয় কাজে মানুষের মাঝে এই বিষয়টা সচেতন করতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেক পরিবারে ছেলে-মেয়েরা যেন সৎ পথে থাকে, ভালোভাবে চলে, লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হয় সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস সঙ্গে যেন কেউ জড়িত হতে না পারে সেদিকে আপনারা একটি বিশেষভাবে দৃষ্টি দেন। আমি মনে করি আমরা জঙ্গিবাদ দমন করতে পেরেছি, ভবিষ্যতে এটা আমরা অব্যাহত রাখতে পারব। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম ধর্ম হচ্ছে শান্তির ধর্ম। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ আমাদের। ইসলাম ধর্মও আমাদের সেটাই শেখায়- অন্য ধর্মের প্রতি আমাদের সহনশীল আচরণ করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের এই ভূখ-ে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম-বর্ণ বসবাস করে। সবারই সমান অধিকার আছে, যার যার ধর্ম পালন করার। অন্যের ধর্মে আঘাত দেওয়া, এটা মোটেই সমীচীন নয়। ইসলাম আমাদের সেই শিক্ষা দেয় না। কারণ ইসলাম হচ্ছে মানবতার ধর্ম, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম হচ্ছে ইসলাম ধর্ম; সেই কথাটাই আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, নবী করীম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো সংখ্যালঘুকে হত্যা করবে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। আমাদের অত্যন্ত দুর্ভাগ্য মাঝে মাঝে আমরা দেখি আমাদের কিছু মানুষ হয়তো কোনো ধর্ম বা আমাদের ইসলাম ধর্মেই হয়তো কেউ অন্য মতালম্বি আছে তাদের ওপর আঘাত হানে। যেটা সম্পূর্ণভাবে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম-এর চিন্তা-চেতনা, আদর্শ এবং আমাদের কোরআন শরীফে যে নির্দেশনা দেওয়া আছে তার পরিপন্থী। উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া এবং সিলেটের বিশ্বনাথের মডেল মসজিদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ইমাম, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ মুসল্লিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

জঙ্গি-মাদক-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলতে ইমামদের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

আপডেট সময়ঃ ১০:৪৮:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :
মসজিদের ইমাম-খতিবসহ আলেম ওলামাদের বয়ানে জঙ্গিবাদ, মাদক, দুর্নীতি, নারীর প্রতি সহিংসতার বিষয়ে আরও বেশি করে আলোচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চতুর্থ পর্যায়ে নবনির্মিত আরও ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধনকালে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মসজিদের ইমাম-খতিব, আলেম-ওলামাদেরকে সাধারণ মানুষ শ্রদ্ধার চোখে দেখেন। কাজেই আপনাদের কথার গুরুত্ব রয়েছে। আমাদের যেসব সমস্যাগুলো দেখা দিচ্ছে- যেমন মাদকাসক্তি, একটা মাদকাসক্ত ছেলে-মেয়ে যদি পরিবারে থাকে তবে সেই পরিবারটা একেবারে ধ্বংসের পথে চলে যায়। যাতে কেউ এই মাদকাসক্ত না হয়। তিনি বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা, জঙ্গিবাদ, গুজব ছড়ানো, গৃহকর্মী বা অধীনস্থদের প্রতি অমানবিক আচরণ করা, দুর্নীতি ইত্যাদি সমস্যা সমাজ থেকে দূর করার জন্য মসজিদে যখন আপনারা খুতবা দেন তখন যদি আপনারা এই বিষয়গুলো সম্পর্কে মানুষকে আরও বেশি করে বলেন, বোঝান- তাহলে কিন্তু মানুষ এটা গ্রহণ করবে। বিশেষ করে জুমার নামাজের পূর্বে যে খুতবা দেওয়া হয় সেখানে এই বিষয়গুলো মানুষের সামনে ভালোভাবে তুলে ধরা দরকার। ইমামদের বয়ানে জঙ্গিবাদ বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাঝে মাঝে আমাদের কোমলমতি ছেলেদের বিভ্রান্তির পথে নিয়ে যায়। সেদিকে যাতে তাদের নিয়ে যেতে না পারে, তারা যেন জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়। ইসলাম ধর্ম যে শান্তির ধর্ম আর মানুষ খুন করলে কখনো বেহেশতে যাওয়া যায় না, নিরীহ মানুষকে খুন করলে বরং দোযখের আগুনে পুড়তে হয় কাজে মানুষের মাঝে এই বিষয়টা সচেতন করতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেক পরিবারে ছেলে-মেয়েরা যেন সৎ পথে থাকে, ভালোভাবে চলে, লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হয় সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস সঙ্গে যেন কেউ জড়িত হতে না পারে সেদিকে আপনারা একটি বিশেষভাবে দৃষ্টি দেন। আমি মনে করি আমরা জঙ্গিবাদ দমন করতে পেরেছি, ভবিষ্যতে এটা আমরা অব্যাহত রাখতে পারব। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম ধর্ম হচ্ছে শান্তির ধর্ম। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ আমাদের। ইসলাম ধর্মও আমাদের সেটাই শেখায়- অন্য ধর্মের প্রতি আমাদের সহনশীল আচরণ করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের এই ভূখ-ে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম-বর্ণ বসবাস করে। সবারই সমান অধিকার আছে, যার যার ধর্ম পালন করার। অন্যের ধর্মে আঘাত দেওয়া, এটা মোটেই সমীচীন নয়। ইসলাম আমাদের সেই শিক্ষা দেয় না। কারণ ইসলাম হচ্ছে মানবতার ধর্ম, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম হচ্ছে ইসলাম ধর্ম; সেই কথাটাই আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, নবী করীম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো সংখ্যালঘুকে হত্যা করবে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। আমাদের অত্যন্ত দুর্ভাগ্য মাঝে মাঝে আমরা দেখি আমাদের কিছু মানুষ হয়তো কোনো ধর্ম বা আমাদের ইসলাম ধর্মেই হয়তো কেউ অন্য মতালম্বি আছে তাদের ওপর আঘাত হানে। যেটা সম্পূর্ণভাবে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম-এর চিন্তা-চেতনা, আদর্শ এবং আমাদের কোরআন শরীফে যে নির্দেশনা দেওয়া আছে তার পরিপন্থী। উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া এবং সিলেটের বিশ্বনাথের মডেল মসজিদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ইমাম, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ মুসল্লিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।