০৪:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫ | ই-পেপার

জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি দেশের শিল্প খাতে বড় উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
জ¦ালানির মূল্যবৃদ্ধি দেশের শিল্প খাতে বড় উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। জ¦ালানি বাজারের অস্থিতিশীলতা ইতোমধ্যে দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। শিল্পোদ্যোক্তাদের মতে, সরকারিভাবে জ¦ালানির মূল্য বাড়ানো হলে কারখানা সচল রাখাই দুরূহ হয়ে পড়বে- এমন উদ্বেগ সব শিল্প খাতেই কম-বেশি রয়েছে। বিশেষ করে বস্ত্র, সিরামিক ও ইস্পাতের মতো ভারী শিল্পে এ নিয়ে শঙ্কা সবচেয়ে বেশি। জ¦ালানি বিভাগ এবং শিল্প খাত সংশ্লিষ্টদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আমদানিকৃত এলএনজিকে ঘিরে দেশের জ¦ালানি খাতের মহাপরিকল্পনার বড় একটি অংশ সাজানো হয়েছে। গত বছরের শেষার্ধেই স্পট মার্কেটে পণ্যটির দাম বাড়তে থাকে। একসময় পণ্যটির দাম প্রতি এমএমবিটিইউ ৫৫ ডলারের ওপরে উঠে যায়। তবে চলতি বছরের শুরুর দিকে জ¦ালানিটির বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরার কিছুটা লক্ষণও দেখা দিয়েছিল। কিন্তু এর মধ্যে ইউক্রেনে-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হলে বৈশ্বিক জ¦ালানির বাজার ব্যাপক অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে এবং গ্যাসের দামও ব্যাপক হারে বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে স্পট মার্কেটে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ৮০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। তবে এশিয়ার এলএনজি বাজারে পণ্যটির দাম এখন কিছুটা কমছে। কিন্তু এলএনজির দাম কমলেও অপরিশোধিত জ¦ালানি তেল, কয়লাসহ অন্যান্য জ¦ালানিপণ্যের বাজার এখনো মারাত্মক অস্থিতিশীল। এ মুহূর্তে পশ্চিমা দেশগুলোর রাশিয়ার বৈরিতার বড় একটি ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে জ¦ালানিপণ্যের বাজার। ওই হিসেবে সার্বিক জ¦ালানি বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না বাজার পর্যবেক্ষকরা। বৈশ্বিক জ¦ালানি বাজারে অস্থিতিশীলতা দীর্ঘায়িত হয়ে ওঠার মতো সব ধরনের অভ্যন্তরীণ ও বহিঃউপাদান বাজারে উপস্থিত। ফলে সামনের দিনগুলোয়ও জ¦ালানি খাতে সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনার ওপর চাপ অব্যাহত থাকার আশঙ্কা রয়েছে।
সূত্র জানায়, বিতরণ কোম্পানিগুলো ইতোমধ্যে জ¦ালানি বাজারের অস্থিতিশীলতার কথা উল্লেখ করে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। আর ব্যবসায়ীরা তার বিরোধিতা করে বলছে, দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ সংকট রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা স্থানীয় শিল্পের সক্ষমতার ওপরই বেশি জোর দিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ বা গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে স্থানীয় শিল্পগুলোর জন্য তা আত্মঘাতী হয়ে দাঁড়াবে। কর্মসংস্থানসহ সার্বিক অর্থনীতিকেই তা মারাত্মকভাবে বিপন্ন করে তুলবে।
সূত্র আরো জানায়, জ¦ালানি বাজারের অস্থিতিশীলতার মধ্যে বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ বজায় রাখাই সরকার বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে। জ¦ালানিতে ভর্তুকি, মূল্য সমন্বয় ও সরবরাহের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা-অনিশ্চয়তা রয়েছে। সব মিলে তা আগামী অর্থবছরে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হবে। সরকারের জন্য জ¦ালানি সরবরাহ ও মূল্য- দুটোই বড় চ্যালেঞ্জ হবে।
এদিকে দেশে বৈশ্বিক জ¦ালানি বাজারের অস্থিতিশীলতার প্রভাব নিয়ে বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, বৈশ্বিক জ¦ালানির বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকলে জ¦ালানি খাতে তার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। বিষয়টি সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ পাওয়ার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি খাতের প্রকল্পগুলোয়ও তার প্রভাব রয়েছে। তবে সরকার এখন বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিয়ে কাজ করছে। আগামী অর্থবছরে এটিই বড় চ্যালেঞ্জ।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ভাগাড়সহ কোনো স্থানেই ময়লা পোড়ানো যাবে না: পরিবেশ উপদেষ্টা

জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি দেশের শিল্প খাতে বড় উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে

আপডেট সময়ঃ ০৮:৪৬:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুন ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
জ¦ালানির মূল্যবৃদ্ধি দেশের শিল্প খাতে বড় উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। জ¦ালানি বাজারের অস্থিতিশীলতা ইতোমধ্যে দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। শিল্পোদ্যোক্তাদের মতে, সরকারিভাবে জ¦ালানির মূল্য বাড়ানো হলে কারখানা সচল রাখাই দুরূহ হয়ে পড়বে- এমন উদ্বেগ সব শিল্প খাতেই কম-বেশি রয়েছে। বিশেষ করে বস্ত্র, সিরামিক ও ইস্পাতের মতো ভারী শিল্পে এ নিয়ে শঙ্কা সবচেয়ে বেশি। জ¦ালানি বিভাগ এবং শিল্প খাত সংশ্লিষ্টদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আমদানিকৃত এলএনজিকে ঘিরে দেশের জ¦ালানি খাতের মহাপরিকল্পনার বড় একটি অংশ সাজানো হয়েছে। গত বছরের শেষার্ধেই স্পট মার্কেটে পণ্যটির দাম বাড়তে থাকে। একসময় পণ্যটির দাম প্রতি এমএমবিটিইউ ৫৫ ডলারের ওপরে উঠে যায়। তবে চলতি বছরের শুরুর দিকে জ¦ালানিটির বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরার কিছুটা লক্ষণও দেখা দিয়েছিল। কিন্তু এর মধ্যে ইউক্রেনে-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হলে বৈশ্বিক জ¦ালানির বাজার ব্যাপক অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে এবং গ্যাসের দামও ব্যাপক হারে বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে স্পট মার্কেটে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ৮০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। তবে এশিয়ার এলএনজি বাজারে পণ্যটির দাম এখন কিছুটা কমছে। কিন্তু এলএনজির দাম কমলেও অপরিশোধিত জ¦ালানি তেল, কয়লাসহ অন্যান্য জ¦ালানিপণ্যের বাজার এখনো মারাত্মক অস্থিতিশীল। এ মুহূর্তে পশ্চিমা দেশগুলোর রাশিয়ার বৈরিতার বড় একটি ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে জ¦ালানিপণ্যের বাজার। ওই হিসেবে সার্বিক জ¦ালানি বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না বাজার পর্যবেক্ষকরা। বৈশ্বিক জ¦ালানি বাজারে অস্থিতিশীলতা দীর্ঘায়িত হয়ে ওঠার মতো সব ধরনের অভ্যন্তরীণ ও বহিঃউপাদান বাজারে উপস্থিত। ফলে সামনের দিনগুলোয়ও জ¦ালানি খাতে সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনার ওপর চাপ অব্যাহত থাকার আশঙ্কা রয়েছে।
সূত্র জানায়, বিতরণ কোম্পানিগুলো ইতোমধ্যে জ¦ালানি বাজারের অস্থিতিশীলতার কথা উল্লেখ করে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। আর ব্যবসায়ীরা তার বিরোধিতা করে বলছে, দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ সংকট রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা স্থানীয় শিল্পের সক্ষমতার ওপরই বেশি জোর দিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ বা গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে স্থানীয় শিল্পগুলোর জন্য তা আত্মঘাতী হয়ে দাঁড়াবে। কর্মসংস্থানসহ সার্বিক অর্থনীতিকেই তা মারাত্মকভাবে বিপন্ন করে তুলবে।
সূত্র আরো জানায়, জ¦ালানি বাজারের অস্থিতিশীলতার মধ্যে বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ বজায় রাখাই সরকার বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে। জ¦ালানিতে ভর্তুকি, মূল্য সমন্বয় ও সরবরাহের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা-অনিশ্চয়তা রয়েছে। সব মিলে তা আগামী অর্থবছরে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হবে। সরকারের জন্য জ¦ালানি সরবরাহ ও মূল্য- দুটোই বড় চ্যালেঞ্জ হবে।
এদিকে দেশে বৈশ্বিক জ¦ালানি বাজারের অস্থিতিশীলতার প্রভাব নিয়ে বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, বৈশ্বিক জ¦ালানির বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকলে জ¦ালানি খাতে তার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। বিষয়টি সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ পাওয়ার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি খাতের প্রকল্পগুলোয়ও তার প্রভাব রয়েছে। তবে সরকার এখন বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিয়ে কাজ করছে। আগামী অর্থবছরে এটিই বড় চ্যালেঞ্জ।