ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ই-পেপার

ঢাকার আশপাশের ৫শত অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে: পরিবেশমন্ত্রী

দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ১০:৫২:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ১৫১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বায়ুদূষণ কমাতে আগামী ১০০ দিনের কর্মসূচি হিসেবে পরিবেশ মন্ত্রণালয় ঢাকার আশপাশের এক হাজার অবৈধ ইটভাটার মধ্যে ৫০০ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুইয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ফরাসি দূতাবাস ঢাকার ফার্স্ট কাউন্সিলর এবং ডেপুটি হেড অব মিশন গুইলাম অড্রেন ডি কেরড্রেল, অর্থনৈতিক উপদেষ্টা জুলিয়েন দেউর, বাংলাদেশে এএফডি কান্ট্রি ডিরেক্টরের ডেপুটি সিসিলিয়া কর্টেস উপস্থিত ছিলেন। এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ৩০০ উপরে থাকলে ক্ষতিকর আমাদের দেশে সেটা অনেক আগেই অতিক্রম করেছে। তাই বায়ুদূষণ কমানোর জন্য কি পরিকল্পনা নিচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী বলেন, প্রথমে আমরা বায়ু দূষণের উৎসগুলো চিহ্নিত করছি। উৎস কি সেটা না জানলে ব্যবস্থা নেয়া যাবে না। আরেকটা বিষয় হলো বায়ুরমান যখন খারাপ পর্যায়ে চলে যায় তখন আমরা একটা এলার্ট ইস্যু করতে চাই। জনসাধারণকে বলতে চাই আজকে আমাদের বায়ুর যে মান আছে সেটা স্বাস্থ্যের জন্য প্রচ- ঝুঁকি। সুতরাং তাদের যদি জরুরি কাজ না থাকে তাহলে যেন ঘরের বাইরে না যায়। এ ছাড়া ডব্লিউএইচও বলছে মাস্ক পরতে হবে। এখন সরকারের পক্ষ থেকে একটা ঘোষণা এটা আমাদের দায়িত্ব। তিনি বলেন, বাযুদূষণের উৎসগুলোর বিপরীতে কি ব্যবস্থা নিতে পারি। আপনারা এরইমধ্যে লক্ষ্য করেছেন ঢাকার আশপাশে যে অবৈধ ইটের ভাঁটা আছে সেগুলো গুঁড়িয়ে দিচ্ছি। সেটা দিয়ে পুরো সমস্যা সমাধান হবে না। ঢাকা শহরে সিমেন্ট, বালি পরিবহন হয়, নির্মাণ কাজ হচ্ছে সেগুলো কভার করে বা ঢেকে রাখার নিয়ম আছে। এজন্য সবার সহযোগিতা নিয়ে আমরা যে কাজটা করতে চাই, সেটা হলো এখন যে বায়ুর মান আছে সেটা অত্যন্ত ক্ষতিকর। এখানে আমাদের অবশ্যই কিছু করতে হবে। এজন্য সময়ের প্রয়োজন। আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) আমরা ১০০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করবো। সেখানে এসব বিষয়ে বিস্তারিত থাকবে। এ পর্যন্ত কতগুলো ইটভাটা অবৈধ আছে, আর কতগুলো গুঁড়িয়ে দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আদালতের হিসেবে ২ হাজারের মতো অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। আমরা প্রথমে ঢাকার আশপাশে স্থায়ী চিমনিগুলো চিহ্নিত করছি। ১০০ দিনের কর্মসূচিতে দিনে গড়ে তিন থেকে চারটি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেবো। অথ্যাৎ ১০০ কর্ম দিবসে লক্ষ্য হচ্ছে ৫০০ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেবো। ঢাকার চারপাশে এক হাজার অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। আসলে এ ধরনের ইটভাটার জন্য সম্পূর্ণ অবৈধ। আরেকটা আছে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি। সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, এ ধরনের অবৈধ কর্মকা- ঘিরে দুর্নীতি হয়। অবৈধকে বৈধ করতে নানা ধরনের লেনদেন হয়। আমরা চাচ্ছি এটাকে নির্মূল করতে। আমরা চাই না এ ধরনের ইটভাটা থাকুক। ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্লক ইট নিয়েও ভাবতে হবে উৎসাহিত করতে হবে। আর ১০০ দিনের কর্মসূচি একশ দিনে শেষ হয়ে যাচ্ছে না। আসরা সূচনা করছি, আসরা এ বার্তাটা দিতে চাচ্ছি কোনো ধরনের অবৈধ ইটভাটা আমরা এখানে রাখতে চাচ্ছি না। বাড়ি নির্মাণ ক্ষেত্রে বা বালি, সিমেন্ট পরিবহন, গাড়ির ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে ক্ষেত্রে কি ব্যবস্থা নেবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এজন্য আমাদের সিটি করপোরেশন আছে তাদের সহায়তা আমাদের নিতে হবে। একই সঙ্গে আমাদের জরিমানাগুলো নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। গাড়ির ধোঁয়া নিয়ে আমাদের বিআরটিএ আছে, যেসব গাড়ির ফিটনেস নেই তাদের বিরুদ্ধে তো আমরা ব্যবস্থা নিতে পারবো না। শব্দদূষণ বিষয়েও বিআরটিএ দেখে। আমরা শুধু পরিবেশের মান মাত্র নির্ধারণ। তবে এটা কার্যকর করার দায়িত্ব শুধু আমাদের না সবার দায়িত্ব। ফ্রান্সের সঙ্গে কি আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আছে তার একটা অন্যতম দিক হচ্ছে জলবায়ু ও পরিবেশ নিয়ে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট যখন বাংলাদেশে এসেছিলেন তখন বলে গিয়েছিলেন একটা জলবায়ু অভিযোজন চুক্তি ফ্রান্স ও বাংলাদেশের মধ্যে করতে আগ্রহী। আজকে আমরা মূলত সেই চুক্তির মধ্যে কোন বিষয়গুলো থাকবে, অগ্রাধিকার দেওয়া হবে কোন বিষয় সেটা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, চুক্তিতে জলবায়ু পরিবর্তনের যে প্রভাব সেখানে বাংলাদেশের মানুষের সুরক্ষার বিষয়টা কীভাবে নিশ্চত করতে পারি। আরেকটা হচ্ছে জীববৈচিত্র্য যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তারা আমাদেরকে অর্থায়নের মাধ্যমে কোনো প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়াতে হয় সেটার মাধ্যমে সহায়তা করবে। আমরা আশা করছি চুক্তির যে খসড়া সেটা আগামী এক মাসের মধ্যে চূড়ান্ত করবো। তারপর আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট দুইজনে মিলে সই করবেন বলে আমার ধারণা।
এদিকে গতকাল বুধবার গুলশানের সিক্স সিজন হোটেলে অ্যাকশনএইড আয়োজিত ৯ম আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, পানি সম্পদ রক্ষা এবং সকলের জন্য পানির অধিকার নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট এনজিওদের সাথে একসাথে কাজ করবে সরকার। তিনি বলেন, সরকারি, বেসরকারি সংস্থা সমূহ একসঙ্গে কাজ করে আমরা পানির সংকট কাটিয়ে উঠতে এবং টেকসই ভবিষ্যত গড়ে তুলতে সক্ষম হবো। সকলের জন্য পানি নিশ্চিতে এবং সুরক্ষিত বিশ্বের জন্য আমাদের সকলকেই কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। এবার সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে-‘ওয়াটার, রিভারস, এ- ক্লাইমেট চেইঞ্জ: ক্রিয়েটিং স্পেস ফর রেজিলেন্স।’ পরিবেশমন্ত্রী বলেন, সুপেয় পানির সংকট একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ, কিন্তু এটি স্থানীয়ভাবে সমাধান করতে হবে। সরকার এজন্য পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। সমাজের সকল শ্রেণির ব্যক্তিদের একসাথে কাজ করে প্রত্যেকের বেঁচে থাকার এবং উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় পানি পেতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের তরুণদের নদী রক্ষা ও পানির অধিকার নিশ্চিতে এগিয়ে আসতে হবে। পানি সম্মেলনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নারদিয়া সিম্পসন, অ্যাকশনএইড ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ সোসাইটির চেয়ারপারসন ইব্রাহিম খলিল আল-জায়াদ এবং অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। ‘জলবায়ু পরিবর্তনের রাজনীতির মোকাবিলা’ শীর্ষক মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

ঢাকার আশপাশের ৫শত অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে: পরিবেশমন্ত্রী

আপডেট সময়ঃ ১০:৫২:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বায়ুদূষণ কমাতে আগামী ১০০ দিনের কর্মসূচি হিসেবে পরিবেশ মন্ত্রণালয় ঢাকার আশপাশের এক হাজার অবৈধ ইটভাটার মধ্যে ৫০০ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুইয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ফরাসি দূতাবাস ঢাকার ফার্স্ট কাউন্সিলর এবং ডেপুটি হেড অব মিশন গুইলাম অড্রেন ডি কেরড্রেল, অর্থনৈতিক উপদেষ্টা জুলিয়েন দেউর, বাংলাদেশে এএফডি কান্ট্রি ডিরেক্টরের ডেপুটি সিসিলিয়া কর্টেস উপস্থিত ছিলেন। এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ৩০০ উপরে থাকলে ক্ষতিকর আমাদের দেশে সেটা অনেক আগেই অতিক্রম করেছে। তাই বায়ুদূষণ কমানোর জন্য কি পরিকল্পনা নিচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী বলেন, প্রথমে আমরা বায়ু দূষণের উৎসগুলো চিহ্নিত করছি। উৎস কি সেটা না জানলে ব্যবস্থা নেয়া যাবে না। আরেকটা বিষয় হলো বায়ুরমান যখন খারাপ পর্যায়ে চলে যায় তখন আমরা একটা এলার্ট ইস্যু করতে চাই। জনসাধারণকে বলতে চাই আজকে আমাদের বায়ুর যে মান আছে সেটা স্বাস্থ্যের জন্য প্রচ- ঝুঁকি। সুতরাং তাদের যদি জরুরি কাজ না থাকে তাহলে যেন ঘরের বাইরে না যায়। এ ছাড়া ডব্লিউএইচও বলছে মাস্ক পরতে হবে। এখন সরকারের পক্ষ থেকে একটা ঘোষণা এটা আমাদের দায়িত্ব। তিনি বলেন, বাযুদূষণের উৎসগুলোর বিপরীতে কি ব্যবস্থা নিতে পারি। আপনারা এরইমধ্যে লক্ষ্য করেছেন ঢাকার আশপাশে যে অবৈধ ইটের ভাঁটা আছে সেগুলো গুঁড়িয়ে দিচ্ছি। সেটা দিয়ে পুরো সমস্যা সমাধান হবে না। ঢাকা শহরে সিমেন্ট, বালি পরিবহন হয়, নির্মাণ কাজ হচ্ছে সেগুলো কভার করে বা ঢেকে রাখার নিয়ম আছে। এজন্য সবার সহযোগিতা নিয়ে আমরা যে কাজটা করতে চাই, সেটা হলো এখন যে বায়ুর মান আছে সেটা অত্যন্ত ক্ষতিকর। এখানে আমাদের অবশ্যই কিছু করতে হবে। এজন্য সময়ের প্রয়োজন। আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) আমরা ১০০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করবো। সেখানে এসব বিষয়ে বিস্তারিত থাকবে। এ পর্যন্ত কতগুলো ইটভাটা অবৈধ আছে, আর কতগুলো গুঁড়িয়ে দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আদালতের হিসেবে ২ হাজারের মতো অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। আমরা প্রথমে ঢাকার আশপাশে স্থায়ী চিমনিগুলো চিহ্নিত করছি। ১০০ দিনের কর্মসূচিতে দিনে গড়ে তিন থেকে চারটি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেবো। অথ্যাৎ ১০০ কর্ম দিবসে লক্ষ্য হচ্ছে ৫০০ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেবো। ঢাকার চারপাশে এক হাজার অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। আসলে এ ধরনের ইটভাটার জন্য সম্পূর্ণ অবৈধ। আরেকটা আছে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি। সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, এ ধরনের অবৈধ কর্মকা- ঘিরে দুর্নীতি হয়। অবৈধকে বৈধ করতে নানা ধরনের লেনদেন হয়। আমরা চাচ্ছি এটাকে নির্মূল করতে। আমরা চাই না এ ধরনের ইটভাটা থাকুক। ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্লক ইট নিয়েও ভাবতে হবে উৎসাহিত করতে হবে। আর ১০০ দিনের কর্মসূচি একশ দিনে শেষ হয়ে যাচ্ছে না। আসরা সূচনা করছি, আসরা এ বার্তাটা দিতে চাচ্ছি কোনো ধরনের অবৈধ ইটভাটা আমরা এখানে রাখতে চাচ্ছি না। বাড়ি নির্মাণ ক্ষেত্রে বা বালি, সিমেন্ট পরিবহন, গাড়ির ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে ক্ষেত্রে কি ব্যবস্থা নেবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এজন্য আমাদের সিটি করপোরেশন আছে তাদের সহায়তা আমাদের নিতে হবে। একই সঙ্গে আমাদের জরিমানাগুলো নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। গাড়ির ধোঁয়া নিয়ে আমাদের বিআরটিএ আছে, যেসব গাড়ির ফিটনেস নেই তাদের বিরুদ্ধে তো আমরা ব্যবস্থা নিতে পারবো না। শব্দদূষণ বিষয়েও বিআরটিএ দেখে। আমরা শুধু পরিবেশের মান মাত্র নির্ধারণ। তবে এটা কার্যকর করার দায়িত্ব শুধু আমাদের না সবার দায়িত্ব। ফ্রান্সের সঙ্গে কি আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আছে তার একটা অন্যতম দিক হচ্ছে জলবায়ু ও পরিবেশ নিয়ে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট যখন বাংলাদেশে এসেছিলেন তখন বলে গিয়েছিলেন একটা জলবায়ু অভিযোজন চুক্তি ফ্রান্স ও বাংলাদেশের মধ্যে করতে আগ্রহী। আজকে আমরা মূলত সেই চুক্তির মধ্যে কোন বিষয়গুলো থাকবে, অগ্রাধিকার দেওয়া হবে কোন বিষয় সেটা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, চুক্তিতে জলবায়ু পরিবর্তনের যে প্রভাব সেখানে বাংলাদেশের মানুষের সুরক্ষার বিষয়টা কীভাবে নিশ্চত করতে পারি। আরেকটা হচ্ছে জীববৈচিত্র্য যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তারা আমাদেরকে অর্থায়নের মাধ্যমে কোনো প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়াতে হয় সেটার মাধ্যমে সহায়তা করবে। আমরা আশা করছি চুক্তির যে খসড়া সেটা আগামী এক মাসের মধ্যে চূড়ান্ত করবো। তারপর আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট দুইজনে মিলে সই করবেন বলে আমার ধারণা।
এদিকে গতকাল বুধবার গুলশানের সিক্স সিজন হোটেলে অ্যাকশনএইড আয়োজিত ৯ম আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, পানি সম্পদ রক্ষা এবং সকলের জন্য পানির অধিকার নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট এনজিওদের সাথে একসাথে কাজ করবে সরকার। তিনি বলেন, সরকারি, বেসরকারি সংস্থা সমূহ একসঙ্গে কাজ করে আমরা পানির সংকট কাটিয়ে উঠতে এবং টেকসই ভবিষ্যত গড়ে তুলতে সক্ষম হবো। সকলের জন্য পানি নিশ্চিতে এবং সুরক্ষিত বিশ্বের জন্য আমাদের সকলকেই কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। এবার সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে-‘ওয়াটার, রিভারস, এ- ক্লাইমেট চেইঞ্জ: ক্রিয়েটিং স্পেস ফর রেজিলেন্স।’ পরিবেশমন্ত্রী বলেন, সুপেয় পানির সংকট একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ, কিন্তু এটি স্থানীয়ভাবে সমাধান করতে হবে। সরকার এজন্য পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। সমাজের সকল শ্রেণির ব্যক্তিদের একসাথে কাজ করে প্রত্যেকের বেঁচে থাকার এবং উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় পানি পেতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের তরুণদের নদী রক্ষা ও পানির অধিকার নিশ্চিতে এগিয়ে আসতে হবে। পানি সম্মেলনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নারদিয়া সিম্পসন, অ্যাকশনএইড ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ সোসাইটির চেয়ারপারসন ইব্রাহিম খলিল আল-জায়াদ এবং অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। ‘জলবায়ু পরিবর্তনের রাজনীতির মোকাবিলা’ শীর্ষক মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ।