ঢাকা ওয়াসার এমডির বেতন-বোনাসের হিসাব চেয়ে হাইকোর্টের আদেশ বহাল

- আপডেট সময়ঃ ০৮:০০:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর ২০২২
- / ১৬৬ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানকে গত ১৩ বছরে কী পরিমাণ বেতন-বোনাস ও টিএডিএসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হয়েছে, সে তথ্য জানতে চেয়ে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ওয়াসা বোর্ডের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি বোরহান উদ্দিন ‘নো অর্ডার’ আদেশ দেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সার্কুলার ও সার্ভিস (বেতন ও সুবিধাদি) অর্ডার লঙ্ঘন করে ওয়াসার এমডিকে অযৌক্তিক ও উচ্চ বেতন দেওয়ার অভিযোগ এনে তার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) পক্ষে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন গত জুলাইয়ে রিট করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে ১৭ বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। আদালতে প্রতিবেদন আকারে ৬০ দিনের মধ্যে ঢাকা ওয়াসা বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওই সব তথ্য আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। রুলে ঢাকা ওয়াসার এমডিকে অপসারণে পদক্ষেপ নিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। বিগত দিনে তাকে দেওয়া মাত্রাতিরিক্ত বেতন কেন তার কাছ থেকে পুনরুদ্ধার করা হবে না এবং তাকে অপসারণে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তাও রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে। পরে এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে ওয়াসা বোর্ড। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার আদালত ‘নো অর্ডার’ আদেশ দেন। ফলে হাইকোর্টের আদেশ বহাল থাকলো। আদালতে ওয়াসা বোর্ডের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এএম মাসুম। ক্যাবের পক্ষে আদালতের অনুমতি নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে (ইন পারসন) শুনানি করেন সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রফেসর ড.এম শামসুল আলম। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাইকোর্টে শুনানি করা এই মামলার আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া।
উৎসাহ বোনাসের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল: এদিকে ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘পারফরম্যান্স বোনাস’ (উৎসাহ বোনাস) হিসেবে প্রণোদনা দেওয়ার ওপর হাইকোর্টের দেওয়া তিন মাসের নিষেধাজ্ঞারও আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ওয়াসা বোর্ডের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি বোরহান উদ্দিন ‘নো অর্ডার’ আদেশ দেন। বিধি প্রণয়ন না করে পানির মূল্য নির্ধারণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ৩১ জুলাই কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) পক্ষে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন রিট করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। রুলে একই সঙ্গে বিধি প্রণয়ন না করে পানির মূল্য নির্ধারণ করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান। আদালতে ওয়াসা বোর্ডের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এএম মাসুম। ক্যাবের পক্ষে আদালতের অনুমতি নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে (ইন পারসন) শুনানি করেন সিনিয়র সহ সভাপতি প্রফেসর ড.এম শামসুল আলম। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাইকোর্টে শুনানি করা এই মামলার আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৭ এপ্রিল ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের ২৯১তম সভায় পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড (উৎসাহ বোনাস) দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। করোনা মহামারি-পরবর্তী ২০২০-২১ অর্থবছরের পারফরম্যান্সের জন্য ঢাকা ওয়াসার স্থায়ী, চুক্তিভিত্তিক ও প্রেষণে নিয়োজিত কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের তিনটি মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ বোনাস দেওয়া হবে। আর গত ২৫ জানুয়ারি ২৮৬তম সভায় কর্মীদের একটি মূল বেতনের অর্ধেক ইন্টেরিম (অন্তর্বর্তীকালীন) পারফরম্যান্স বোনাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাড়ে তিনটি পারফরম্যান্স বোনাস দিতে সংস্থাটির ব্যয় হবে ১৯ কোটি টাকার বেশি। পানির দামের বিষয়ে গণমাধ্যমে বলা হয়, আবাসিক ও বাণিজ্যিক পর্যায়ে পানির দাম ৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে ঢাকা ওয়াসা বোর্ড। বোর্ডের এই সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট নয় ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। আবাসিকে ২৫ শতাংশ এবং বাণিজ্যিক সংযোগে ১৯ শতাংশ পর্যন্ত পানির দাম বাড়াতে চায় তারা। এজন্য স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রস্তাব পাঠিয়েছে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। সবশেষ গত ৬ জুলাই ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের সভায় পানির দাম ৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। বর্তমান মূল্যস্ফীতির কথা বিবেচনায় রেখে ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের সদস্যরা সর্বসম্মতিক্রমে ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।