ঢাকা, শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫ | ই-পেপার

দাবি আদায়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের ৪ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময়ঃ ০৬:০০:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫
  • / ৩৮ বার পড়া হয়েছে

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা তাদের দীর্ঘদিনের দাবি আদায়ে আবারও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন। প্রবেশ পদে ১১তম গ্রেড প্রদান, উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি নিশ্চিত করার দাবিতে আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া না হলে চার দিনের কর্মবিরতিসহ অবস্থান কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

শনিবার (০১ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সংগঠনগুলোর ‘ঐক্য পরিষদ’-এর পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহিনুর আল আমিন এবং কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমাজের সভাপতি আনিসুর রহমান।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার সহকারী শিক্ষক নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করলেও তাদের মর্যাদা ও আর্থিক নিরাপত্তা দীর্ঘদিন ধরেই অবহেলিত। শিক্ষকরা জানান, বর্তমানে একজন সহকারী শিক্ষক ১৩তম গ্রেডে যোগদান করে সর্বসাকুল্যে মাত্র ১৭ হাজার ৬৫০ টাকা বেতন পান, যা বর্তমান আকাশছোঁয়া বাজারমূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

শিক্ষকরা বলেন, তাদের অন্যতম প্রধান দাবি হলো সহকারী শিক্ষকের এন্ট্রি পদ ১১তম গ্রেডে (১২ হাজার ৫০০ টাকা স্কেল) উন্নীত করা, যাতে সর্বসাকুল্যে বেতন হবে ১৯ হাজার ৮২৫ টাকা। এতে সরকারকে অতিরিক্ত মাত্র ২ হাজার ২৬৫ টাকা প্রদান করতে হবে, যা সরকারের আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনায় রেখেই করা হয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, একই শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অন্যান্য দপ্তরের সরকারি চাকরিজীবীরা ১০ম বা ১১তম গ্রেডে যোগদান করলেও প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকরা বহু বছর ধরে ১৩তম গ্রেডে রয়েছেন। তারা এই পরিস্থিতিকে ‘অমানবিক ও বৈষম্যমূলক’ বলে অভিহিত করেন। পাশাপাশি, ২০০৯ সাল থেকে কার্যকরী পদোন্নতি কার্যক্রম স্থগিত থাকায় অধিকাংশ শিক্ষক তাদের চাকরি জীবনে কোনো পদোন্নতি না পেয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবেই অবসর গ্রহণ করেন, যা চরম হতাশার।

শিক্ষকদের ১১টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ঐক্য পরিষদ জানিয়েছে, আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে তাদের তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে সারা দেশব্যাপী কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে— আগামী ২৩ ও ২৪ নভেম্বর অর্ধদিবস কর্মবিরতি; ২৫ ও ২৬ নভেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি; এবং ২৭ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন।

এরপরও দাবি মেনে নেওয়া না হলে শিক্ষকরা বৃত্তিসহ সকল প্রকার পরীক্ষা বর্জন করবেন এবং আগামী ১১ ডিসেম্বর থেকে আমরণ অনশনের মতো চূড়ান্ত কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

দাবি আদায়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের ৪ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা

আপডেট সময়ঃ ০৬:০০:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা তাদের দীর্ঘদিনের দাবি আদায়ে আবারও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন। প্রবেশ পদে ১১তম গ্রেড প্রদান, উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি নিশ্চিত করার দাবিতে আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া না হলে চার দিনের কর্মবিরতিসহ অবস্থান কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

শনিবার (০১ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সংগঠনগুলোর ‘ঐক্য পরিষদ’-এর পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহিনুর আল আমিন এবং কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমাজের সভাপতি আনিসুর রহমান।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার সহকারী শিক্ষক নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করলেও তাদের মর্যাদা ও আর্থিক নিরাপত্তা দীর্ঘদিন ধরেই অবহেলিত। শিক্ষকরা জানান, বর্তমানে একজন সহকারী শিক্ষক ১৩তম গ্রেডে যোগদান করে সর্বসাকুল্যে মাত্র ১৭ হাজার ৬৫০ টাকা বেতন পান, যা বর্তমান আকাশছোঁয়া বাজারমূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

শিক্ষকরা বলেন, তাদের অন্যতম প্রধান দাবি হলো সহকারী শিক্ষকের এন্ট্রি পদ ১১তম গ্রেডে (১২ হাজার ৫০০ টাকা স্কেল) উন্নীত করা, যাতে সর্বসাকুল্যে বেতন হবে ১৯ হাজার ৮২৫ টাকা। এতে সরকারকে অতিরিক্ত মাত্র ২ হাজার ২৬৫ টাকা প্রদান করতে হবে, যা সরকারের আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনায় রেখেই করা হয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, একই শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অন্যান্য দপ্তরের সরকারি চাকরিজীবীরা ১০ম বা ১১তম গ্রেডে যোগদান করলেও প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকরা বহু বছর ধরে ১৩তম গ্রেডে রয়েছেন। তারা এই পরিস্থিতিকে ‘অমানবিক ও বৈষম্যমূলক’ বলে অভিহিত করেন। পাশাপাশি, ২০০৯ সাল থেকে কার্যকরী পদোন্নতি কার্যক্রম স্থগিত থাকায় অধিকাংশ শিক্ষক তাদের চাকরি জীবনে কোনো পদোন্নতি না পেয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবেই অবসর গ্রহণ করেন, যা চরম হতাশার।

শিক্ষকদের ১১টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ঐক্য পরিষদ জানিয়েছে, আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে তাদের তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে সারা দেশব্যাপী কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে— আগামী ২৩ ও ২৪ নভেম্বর অর্ধদিবস কর্মবিরতি; ২৫ ও ২৬ নভেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি; এবং ২৭ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন।

এরপরও দাবি মেনে নেওয়া না হলে শিক্ষকরা বৃত্তিসহ সকল প্রকার পরীক্ষা বর্জন করবেন এবং আগামী ১১ ডিসেম্বর থেকে আমরণ অনশনের মতো চূড়ান্ত কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।