ঢাকা, বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫ | ই-পেপার

দেশের বাজারে বিক্রি হওয়া সব আইফোন অবৈধ: এমআইওবি

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময়ঃ ০৫:৩১:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫
  • / ২৩ বার পড়া হয়েছে

দেশের মোবাইলফোন বাজারে অবৈধভাবে আমদানিকৃত ফোনের দাপটে ধুঁকছে বৈধ খাত এবং দেশীয় শিল্প। মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওনার্স অব বাংলাদেশ (এমআইওবি) জানিয়েছে, বর্তমানে বাজারে থাকা প্রায় ৬০ শতাংশ মোবাইল অবৈধভাবে দেশে ঢুকছে, যার ফলে বছরে সরকারের প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়ে যাচ্ছে।

সংস্থাটির মতে, অবৈধ মোবাইল বিক্রির ফলে রাষ্ট্র যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি সংকটে পড়েছে স্থানীয় কারখানা, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আগামী ১৬ ডিসেম্বর চালু হতে যাওয়া ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট রেজিস্টার (এনইআইআর) কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

বুধবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর রাওয়া ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমআইওবি নেতারা এসব বলেন।

ব্যবসায়ী নেতারা জানান, দেশে এখন বিশ্বের শীর্ষ মোবাইল ব্র্যান্ডগুলোর প্রায় সবকটিই উৎপাদন করছে। দেশের ৯০ শতাংশ চাহিদা দেশীয় কারখানা থেকেই মেটানো সম্ভব। কিন্তু অবৈধ মোবাইলের দাপটে স্থানীয় শিল্প পূর্ণ সক্ষমতা কাজে লাগাতে পারছে না। অবৈধ বেচাকেনায় স্থানীয় নির্মাতাদের বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর এর সঙ্গে জড়িয়ে হারিয়ে যাচ্ছে বিপুল রাজস্ব।

সংগঠনের সভাপতি জাকারিয়া শহীদ বলেন, বাজারে অবৈধ মোবাইল ফোনের প্রবাহে দেশীয় শিল্প বিপর্যস্ত। তিনি বলেন, উৎপাদন সরঞ্জামের দাম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেলেও স্থানীয় কারখানাগুলো এখনো ফোনের দাম বাড়ায়নি। তাঁর দাবি, এনইআইআরকে কেন্দ্র করে একটি মহল বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং সাধারণ গ্রাহকের মধ্যে আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা করছে। লাগেজ পার্টিরাই এ ধরনের প্রচারণার সঙ্গে জড়িত বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এনইআইআর কার্যকর হলে মোবাইলের দাম বাড়বে না, বরং রাজস্ব আয় কয়েক হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাবে।

এমআইওবির সহ-সভাপতি রেদওয়ানুল হক জানান, দেশে শতভাগ সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও অবৈধ আমদানির কারণে বাজারের চাহিদার মাত্র ৬০ শতাংশ উৎপাদন ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে। তিনি বলেন, এনইআইআর বন্ধ হয়ে গেলে দেশীয় শিল্প সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং বাজার আবার অবৈধ আমদানিকৃত ফোনের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।

স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অনার ব্র্যান্ডের স্থানীয় উৎপাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, আইন মেনে দেশে মোবাইল ব্যবসা করা এখন সহজ। এই খাতে নতুন বিনিয়োগ বাড়ছে, কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশে উৎপাদন বাড়লেও আইফোনের বাজার এখনো সম্পূর্ণভাবে অবৈধ আমদানির ওপর নির্ভরশীল, যা বৈধ বাজারের ওপর বড় চাপ সৃষ্টি করছে।

সংবাদ সম্মেলনে সঞ্চালক ছিলেন এমআইওবির প্রধান নির্বাহী মনিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন মোবাইলফোন ডিস্ট্রিবিউশন অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল কপুরিয়া, মোবাইল কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, স্যামসাং বাংলাদেশের অনুমোদিত পরিবেশক এক্সেল টেলিকমের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সাইফুদ্দিন এবং ভিভো বাংলাদেশের প্রতিনিধি ইমাম উদ্দীন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

দেশের বাজারে বিক্রি হওয়া সব আইফোন অবৈধ: এমআইওবি

আপডেট সময়ঃ ০৫:৩১:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫

দেশের মোবাইলফোন বাজারে অবৈধভাবে আমদানিকৃত ফোনের দাপটে ধুঁকছে বৈধ খাত এবং দেশীয় শিল্প। মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওনার্স অব বাংলাদেশ (এমআইওবি) জানিয়েছে, বর্তমানে বাজারে থাকা প্রায় ৬০ শতাংশ মোবাইল অবৈধভাবে দেশে ঢুকছে, যার ফলে বছরে সরকারের প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়ে যাচ্ছে।

সংস্থাটির মতে, অবৈধ মোবাইল বিক্রির ফলে রাষ্ট্র যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি সংকটে পড়েছে স্থানীয় কারখানা, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আগামী ১৬ ডিসেম্বর চালু হতে যাওয়া ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট রেজিস্টার (এনইআইআর) কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

বুধবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর রাওয়া ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমআইওবি নেতারা এসব বলেন।

ব্যবসায়ী নেতারা জানান, দেশে এখন বিশ্বের শীর্ষ মোবাইল ব্র্যান্ডগুলোর প্রায় সবকটিই উৎপাদন করছে। দেশের ৯০ শতাংশ চাহিদা দেশীয় কারখানা থেকেই মেটানো সম্ভব। কিন্তু অবৈধ মোবাইলের দাপটে স্থানীয় শিল্প পূর্ণ সক্ষমতা কাজে লাগাতে পারছে না। অবৈধ বেচাকেনায় স্থানীয় নির্মাতাদের বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর এর সঙ্গে জড়িয়ে হারিয়ে যাচ্ছে বিপুল রাজস্ব।

সংগঠনের সভাপতি জাকারিয়া শহীদ বলেন, বাজারে অবৈধ মোবাইল ফোনের প্রবাহে দেশীয় শিল্প বিপর্যস্ত। তিনি বলেন, উৎপাদন সরঞ্জামের দাম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেলেও স্থানীয় কারখানাগুলো এখনো ফোনের দাম বাড়ায়নি। তাঁর দাবি, এনইআইআরকে কেন্দ্র করে একটি মহল বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং সাধারণ গ্রাহকের মধ্যে আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা করছে। লাগেজ পার্টিরাই এ ধরনের প্রচারণার সঙ্গে জড়িত বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এনইআইআর কার্যকর হলে মোবাইলের দাম বাড়বে না, বরং রাজস্ব আয় কয়েক হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাবে।

এমআইওবির সহ-সভাপতি রেদওয়ানুল হক জানান, দেশে শতভাগ সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও অবৈধ আমদানির কারণে বাজারের চাহিদার মাত্র ৬০ শতাংশ উৎপাদন ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে। তিনি বলেন, এনইআইআর বন্ধ হয়ে গেলে দেশীয় শিল্প সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং বাজার আবার অবৈধ আমদানিকৃত ফোনের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।

স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অনার ব্র্যান্ডের স্থানীয় উৎপাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, আইন মেনে দেশে মোবাইল ব্যবসা করা এখন সহজ। এই খাতে নতুন বিনিয়োগ বাড়ছে, কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশে উৎপাদন বাড়লেও আইফোনের বাজার এখনো সম্পূর্ণভাবে অবৈধ আমদানির ওপর নির্ভরশীল, যা বৈধ বাজারের ওপর বড় চাপ সৃষ্টি করছে।

সংবাদ সম্মেলনে সঞ্চালক ছিলেন এমআইওবির প্রধান নির্বাহী মনিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন মোবাইলফোন ডিস্ট্রিবিউশন অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল কপুরিয়া, মোবাইল কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, স্যামসাং বাংলাদেশের অনুমোদিত পরিবেশক এক্সেল টেলিকমের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সাইফুদ্দিন এবং ভিভো বাংলাদেশের প্রতিনিধি ইমাম উদ্দীন।