নিজস্ব প্রতিবেদক :
নড়বড়ে সেতুর কারণে ঝুঁকিতে দেশের উত্তরাঞ্চলের রেলপথ। বর্তমানে ওই পথে চলাচলরত ট্রেনগুলোকে ঝুঁকি নিয়ে ধীরগতিতে ব্রিজ অতিক্রম করতে হয়। ১৮৯২ সালে উত্তরবঙ্গে রেললাইন স্থাপনের সময় রেল ব্রিজগুলো নির্মিত হয়। সেগুলোর সর্বোচ্চ আয়ুষ্কাল ছিল ৬০ বছর। বহু আগেই ওসব সেতুর মেয়াদকাল উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এখন কোন রকমে জোড়াতালি দিয়ে চালু রাখা হয়েছে। উত্তরাঞ্চলের একাংশে এভাবেই রেল চলছে। রেলপথ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, লালমনিরহাট ও পাকশী হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ের উত্তরাঞ্চলের দুটি রেল ডিভিশন। তার মধ্যে লালমনিরহাট রেল বিভাগে বগুড়া, গাইবান্ধা, রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে রেলপথ বয়ে গেছে। ওই রেলপথের সেতুর গার্ডার খুবই দুর্বল। সেতুর নিচের মাটি ধসে গেলে অথবা বিচ্যুত হয়ে গেলে মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়। আর দুর্ঘটনা না ঘটলে মেরামত হয় না। বর্তমানে রেলের লালমনিরহাট বিভাগের আওতায় ৫শ’ দশমিক ৬১ কিলোমিটার রেলপথের ৪১১টি রেলসেতুর অর্ধেকের বেশি নড়বড়ে। বিগত ২০১৮ সালে মৌলভীবাজারে ট্রেন দুর্ঘটনার পর দেশের নড়বড়ে রেল সেতু মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়।
সূত্র জানায়, লালমনিরহাট রেল বিভাগের আওতায় বছর কয়েক আগে আপ ও ডাউনে আন্তঃনগর, মেইল ও এক্সপ্রেস এবং লোকাল ৬৪টি ট্রেন চলতো। ইঞ্জিন ও রেলকোচ সঙ্কটের কারণে আপ ও ডাউনে ১৮ টি ট্রেন সাময়িক বন্ধ রেখে ৪৬টি ট্রেন চালু রাখা হয়। পরবর্তী সমেয় কোভিডের কারণে ট্রেনের সংখ্যা কমানো হয়। বর্তমানে নতুন পরিবর্তিত সময়ে ট্রেন চলাচল করছে। তার মধ্যে ১৪টি আন্তঃনগর, ২২টি মেইল ও এক্সপ্রেস এবং ১০টি লোকাল। তাছাড়াও গুডস ট্রেন (মালগাড়ি) চলাচল করছে। বর্তমানে সেতুর ওপর ট্রেন উঠলেই ভেতরে বসে মনে হয় ব্রিজ কাঁপছে। সময়মতো ট্রেন চলাচল করতে এক্সপ্রেস ট্রেনগুলোকে ঘণ্টায় ৬৫ কিলোমিটার গতিতে চালাবার নির্দেশ রয়েছে। আর নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর তাগিদে সেতুর ওপরে গতি কমানোর সুযোগ থাকে না। তবে কোনো কোনো চালক নিজ দায়িত্বে কখনো কখনো ট্রেনের গতি কমে দেন। কিন্তু খেয়াল রাখতে হয় গতি বেশি কমালে ট্রেন চলাচল বিলম্ব না হয়।
এদিকে বাংলাদেশ রেলওয়ে সংশ্লিষ্টদের মতে, লালমনিরহাট রেল বিভাগের সেতুগুলো ব্রিটিশ শাসনামলে চুন সুরকির মিশ্রণে ইটের গাঁথুনিতে নির্মিত। আয়ুষ্কাল ৬০ বছর ছিল। যা বহু আগেই অতিক্রম করেছে। পুনর্নির্মিত আরসিসির গাঁথুনির সেতুর মেয়াদ একশ’ বছর। তবে পুনর্নির্মিত সেতুর সংখ্যা কম। লালমনিরহাট রেল বিভাগের অর্ধেক রেল সেতু বহু আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। বেশ কিছু সেতুর সংস্কার ও মেরামত হয়েছে। চলমান প্রক্রিয়ায় বাকিগুলোর কাজ হবে। নতুন কয়েকটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। করোনাকাল ওই কাজগুলো বাস্তবায়নে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। আশা করা হচ্ছে শিগগিরই নতুন করে সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।
সর্বশেষঃ
নড়বড়ে সেতুর জন্য ঝুঁকিতে দেশের উত্তরাঞ্চলের রেলপথ
-
দৈনিক আইন বার্তা
- আপডেট সময়ঃ ০৭:৫৩:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ মার্চ ২০২২
- ১৭৩ বার পড়া হয়েছে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ