• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ
দুর্নীতির অভিযোগের বিরুদ্ধে সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ হজযাত্রীদের স্বস্তি দিতে আমরা কাজ করছি: ধর্মমন্ত্রী ‘মুজিবনগর দিবস’ বাঙালির পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্তির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী শ্রম আইনের মামলায় ড. ইউনূসের জামিনের মেয়াদ বাড়ল জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় গুরুত্ব থাকবে জনস্বাস্থ্যেও: পরিবেশ মন্ত্রী অনিবন্ধিত অনলাইনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ: তথ্য প্রতিমন্ত্রী মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনায় বিকল্পভাবে পণ্য আমদানির চেষ্টা করছি: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী স্বাস্থ্যসেবায় অভূতপূর্ব অর্জন বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে: রাষ্ট্রপতি শান্তি আলোচনায় কেএনএফকে বিশ্বাস করেছিলাম, তারা ষড়যন্ত্র করেছে: সেনাপ্রধান বন কর্মকর্তার খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে কাজ করছে মন্ত্রণালয়: পরিবেশমন্ত্রী

পদ্মা সেতু রেল সংযোগের পরামর্শক ব্যয় বাড়ছে ৩০১ কোটি টাকা

Reporter Name / ৭৮ Time View
Update : বুধবার, ৩ মে, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :
পদ্মা সেতু রেল সংযোগের পরামর্শক ব্যয় ৩০১ কোটি ৪২ লাখ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ বাড়ায় এ ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। আজ বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের বলেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ’ প্রকল্পে নিয়োজিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ আর্মি ইন অ্যাসোসিয়েশন উইথ বিআরটিসি, বুয়েট- কে মেয়াদ ২০২৪ সালের মে পর্যন্ত বৃদ্ধির জন্য ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ৩০১ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয় বৃদ্ধির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, এ ব্যয় বাড়ানোর ফলে এ খাতের মোট ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৪২ কোটি ২৭ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। মেয়াদ বাড়ানোর কারণেই এ ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। এদিকে গত ৪ এপ্রিল পরীক্ষামূলকভাবে পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলাচল করে। প্রথম যে ট্রেনটি পদ্মা সেতু পার হয়, তার ইঞ্জিন আনা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। সেটি টেনে নিয়ে গেছে চীন থেকে আনা সাতটি কোচ। ইঞ্জিন ও কোচ ফরিদপুরের ভাঙ্গা প্রান্ত থেকে রওনা হয় দুপুর ১টা ২১ মিনিটে। এরপর প্রথম স্টেশন মালিগ্রামসংলগ্ন বগাইলে পৌঁছায় ১টা ৪১ মিনিটে। ট্রেনটি গড়ে ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার বেগে চলে। ২টা ১০ মিনিটে শিবচরের পদ্মা স্টেশনে এসে পৌঁছায়। ২টা ৪০ মিনিটে পদ্মা সেতুতে ওঠে। পদ্মা সেতু পার হতে ১৬ মিনিট লাগে ট্রেনের। সব মিলিয়ে ভাঙ্গা থেকে মাওয়া স্টেশন-এ ৪২ কিলোমিটার রেলপথে আসতে ট্রেনের সময় লাগে প্রায় দুই ঘণ্টা। এর আগে ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনে ফিতা কেটে পরীক্ষামূলক বিশেষ এই ট্রেন চলাচলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। এ সময় তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তার স্বপ্ন একটা একটা করে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। তারই অংশ হিসেবে ট্রায়াল ট্রেন চলছে। আগামী সেপ্টেম্বরে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার অংশে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করবে। ২০২৪ সালের জুন মাসে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথে ট্রেন চলবে।’ উদ্বোধন শেষে ট্রেনের প্রথম যাত্রী হিসেবে পদ্মা সেতু পার হন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরী, উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, সংসদ সদস্য ও আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন, ইকবাল হোসেন অপু এমপি, নাহিম রাজ্জাক এমপি, সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি এমপি ও আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি। তারাও ট্রেনে উঠে ভাঙ্গা থেকে মাওয়া স্টেশনে নামেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন পদ্মা সেতু রেল প্রকল্পের প্রধান সমন্বয়ক মেজর জেনারেল এ কে এম রেজাউল মজিদ, ডেপুটি সমন্বয়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল কালাম আজাদ, প্রকল্প ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদ আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরীক্ষামূলক উদ্বোধনের দিনে পদ্মা সেতুর দুই পাড়ে ছিল উৎসুক জনতার ঢল। দুই পাড়ে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। ট্রেন চলাকালে উৎসুক জনতা রাস্তার দুই পাশে হাত নেড়ে স্বাগত জানায়। রেলযাত্রা উপলক্ষে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের ৪২ নম্বর ও মাওয়া প্রান্তের ১ নম্বর পিলারে আতশবাজি ফুটিয়ে উচ্ছ্বাস ও আনন্দ প্রকাশ করা হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদ্মা সেতু ঘিরে নতুন রেলপথ বদলে দেবে দেশের রেল নেটওয়ার্ক। বর্তমানে রেলপথে ঢাকার সঙ্গে খুলনার দূরত্ব ৪৬০ কিলোমিটার। পদ্মা সেতু হয়ে যশোর রেলপথে যাতায়াতে রাজধানী থেকে খুলনার দূরত্ব কমবে ২১২ কিলোমিটার। মিয়ানমার হয়ে চীনের সঙ্গে সংযোগ ঘটাতে ট্রান্স-এশিয়ান রেল রুটের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে পদ্মা সেতুর রেল রুটটিও। পাথরবিহীন রেললাইন এই প্রথম তৈরি হলো বাংলাদেশে। জাজিরা প্রান্ত থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেনের তিনটি স্টেশন রয়েছে। শিবচরে দুটি স্টেশন এবং ভাঙ্গায় জংশন রয়েছে। স্টেশনগুলোর ওপর দিয়ে ৩২ কিলোমিটার লাইন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া ভাঙ্গা জংশনটি আধুনিকায়ন করার কাজ চলছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকার সঙ্গে পদ্মা সেতু হয়ে চার জেলা (মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল) অতিক্রম করে যশোরের সঙ্গে রেলযোগাযোগ স্থাপিত হবে। পরীক্ষামূলক উদ্বোধনের দিন রেলপথমন্ত্রী ভাঙ্গা থেকে ট্রেনে করে এসে মাওয়া রেলওয়ে স্টেশনে নেমে সাংবাদিকদের বলেন, পুরো প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৫ শতাংশের বেশি। আর পুরো প্রকল্পকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। ঢাকা থেকে মাওয়া অংশের অগ্রগতি ৭৪ ভাগ, মাওয়া থেকে ভাঙ্গা অংশের অগ্রগতি ৯২ ভাগ এবং ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত অগ্রগতি ৬৮ শতাংশ। তবে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার অংশে আগামী সেপ্টেম্বর যাত্রীবাহী রেল চলাচলের আশা করছেন তিনি। আগামী বছরের জুনে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেল চলাচল করবে। লেভেল ক্রসিংবিহীন এই রেলপথে ৩২টি রেল কালভার্ট, ৩৭টি আন্ডারপাস এবং ১৩টি রেল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের রেল স্টেশনসহ নতুন ১৪টি স্টেশন নির্মাণ এবং পুরোনো ছয়টি স্টেশন উন্নয়ন চূড়ান্ত পর্যায়ে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category