পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পিটার হাসের বৈঠক, সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা

- আপডেট সময়ঃ ০৯:৫৯:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৪
- / ১৬৫ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, বাণিজ্য সম্প্রসারণ কীভাবে বাড়ানো যায়, তা নিয়ে কাজ করবে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র। আজ বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন পিটার হাস। মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, আজ (গতকাল বুধবার) নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমার দেখা করার সুযোগ হয়েছে। আগে তিনি যখন মন্ত্রী ছিলেন, তখন থেকেই তাকে আমি চিনি। কিন্তু এটি আমার জন্য সম্মানজনক যে তার নতুন পদে তার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে এবং কীভাবে দুপক্ষের জন্যই জরুরি, এমন বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করতে পারি, সেটি নিয়েও কথা হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন, বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং রোহিঙ্গা। সামনের মাসগুলোয় আমাদের অভিন্ন স্বার্থ রক্ষা করার জন্য কীভাবে আমরা কাজ করতে পারি, সেটির জন্য আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, পারস্পরিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে আমরা কীভাবে কাজ করবো, তা নিয়েও কথা হয়েছে। যেমন, জলবায়ু পরিবর্তন, ব্যবসায়িক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো ও রোহিঙ্গা সংকট। আমাদের সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে ভবিষ্যতে আমরা একসঙ্গে কাজ করবো। এদিকে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন ভালো হয়েছে, সে ব্যাপারে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে তিনি জানিয়েছেন। তিনি পিটারকে জানিয়েছেন, গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে ৪২ শতাংশ ভোট পড়েছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গ তুলে হাছান মাহমুদ বলেন, নানা বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের কো-অপারেশন আছে। আমরা জঙ্গি দমনের ক্ষেত্রে, উগ্রবাদ মোকাবিলায় দীর্ঘদিন একসাথে কাজ করেছি। আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ব্যাপারে আমরা একমত ব্যক্ত করেছি। গত নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনেকে পর্যবেক্ষণ করতে এসেছে সে বিষয়ে আলোচনা করেছি। বাংলাদেশে একটি ভালো নির্বাচন হয়েছে প্রায় ৪২ শতাংশ ভোট পড়েছে। কারণ, নির্বাচনের দিন অনেক কুয়াশা ছিল সকালে এবং ঠা-াও ছিল। সেটি না হলে ভোট আরও ১০ শতাংশ বেশি পড়ত। সেটি নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমরা উভয় দেশ সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করার লক্ষ্যে, জঙ্গি দমন, উগ্রবাদ মোকাবিলাসহ সব ক্ষেত্রে একসাথে কাজ করার ব্যাপারে একমত হয়েছি। নির্বাচনের পর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলে গুঞ্জন ছিল। কিন্তু বুধবারের বৈঠকে পিটার হাসকে হাস্যোজ¦ল দেখা গেছে। সেই অস্বস্তি কতোটা কাটল- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা উভয় দেশ আমাদের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করার লক্ষ্যে আমাদের সরকার মার্কিন সরকারের সাথে একযোগে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ব্যাপারে আমরা ফলপ্রসূ আলোচনা করেছি। মন্ত্রী বলেন, মার্কিন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত আমার সাথে সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন। দুই রাষ্ট্রদূতের সাথেই আমার ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের একটি বড় উন্নয়ন সহযোগী। বাণিজ্য ক্ষেত্রেও তারা একটি বড় বাণিজ্যের অংশীদার। আমি গত ৫২ বছরের পথচলায় মার্কিন সহায়তার জন্য রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। আমরা উভয়েই আমাদের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করার ব্যাপারে একমত হয়েছি। সে লক্ষ্যে কাজ করা বলে আমরা আলোচনা করেছি। মার্কিন রাষ্ট্রদূতও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করার জন্য, বাণিজ্য আরও বিস্তৃত ও সরাসরি বিনিয়োগ বাড়াতে কাজ করার বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে রোহিঙ্গা ইস্যুতে কথা বলেছি। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে আমরা তাদের সহায়তা সব সময় চেয়ে এসেছি। আজকে সেটি পুনর্ব্যক্ত করেছি। তারা আমাদের সহায়তা করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে আমরা একসাথে কাজ করে যাবো। ইইউ রাষ্ট্রদূতের সাথেও এটি নিয়ে কথা বলেছি। রোহিঙ্গা ইস্যুটি শুরুতে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজায় অমানবিক হামলার ঘটনায় বিশ্বের দৃষ্টি অনেকটা সরে গেছে। সেজন্য আমি তার সাথে আলোচনা করেছি রোহিঙ্গা ইস্যুটি আমাদের জন্য সমস্যা। বাংলাদেশে ঘন জনবসতি। সেখানে ১৫ লাখ রোহিঙ্গা আমাদের জন্য বাড়তি সমস্যা। সেজন্য তাদের নাগরিক অধিকার দিয়ে মিয়ানমারে পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা করেছি।