ঢাকা, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ই-পেপার

পরিবেশ সুরক্ষায় উদ্বেগ: পাহাড়ের প্রাণহীন ডেড জোন তৈরি করছে প্লাস্টিক

দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৬:৫৫:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৩৯ বার পড়া হয়েছে

মোঃ জুয়েল হোসাইন,বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি :

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের কনফারেন্স হলে পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময়ে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোস্তফা কামাল মজুমদার,বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড,মেহেদী মাসুদ এবং সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি।

এসময় প্রধান বক্তরা বলেন,পরিবেশ দূষণে সবচেয়ে বেশি মারাত্মক প্রভাব ফেলে প্লাস্টিক। এটি এমন একটি বস্তু যা কখনো বিনষ্ট হয় না। বছরের পর বছর এটি থেকে যায়। ফলে দূষণ আরও বাড়ে। সেই হিসেবে দেখতে গেলে পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে আরও একটি বড় দিক পাহাড় । বিশ্বজুড়ে মানুষ নানাভাবে পাহাড়ের উপর নির্ভরশীল। গোটা বিশ্ব জুড়ে পাহাড় কেন্দ্র করে ভয়ানক আরও একটি উপকার বেড়ে উঠছে হু হু করে। যা নিয়ে চিন্তিত পরিবেশবিদরা। বর্তমান প্রজন্ম তো বটেই পাশাপাশি অদূর ভবিষ্যতে পরবর্তী প্রজন্ম আদেও পাহাড়ের মুক্ত টিকে থাকার উপযুক্ত হবে বলে গণ্য করা যায়।

এসময়ে সভাপতি জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি তিনি বলেন, সব সময় শতর্ক থাকাটার ভাল আমরা পরিবেশকে যদি বাঁচাতে হইলে আমাদের এলাকায় গুলো সব সময় পরিস্কার পরিছন্নতা রাখার নিজ দায়িত্ব নিতে হবে। রাস্তার স্কুল ছেলে মেয়েরা চিপস জাতীয় কিছু খেলে পেকেট যেখানে সেখানে ফেলে না দেয় আমরা এবং এটাই সবার থেকে বজায় রাখার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করি।

এদিকে এই ভয়ানক সমস্যাটি হলো পাহাড়ের বর্জ্য। মানবসৃষ্ট সমস্ত কঠিন পদার্থগুলোকে পাহাড়ের নিক্ষেপ করা হচ্ছে। যা পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা বলে মনে করছে। ফলে পরিবেশবিদরা। জাতিসংঘের এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের রিপোর্ট যা বলছে তা শুনলে চমকে যাবার মত বিষয়।

পোগ্রামের রিপোর্ট অনুসারে, প্লাস্টিক, কাচ, কাঠ ও রাবারকে প্রধান পাহাড় বর্জ্য হিসেবে ধরা হয়। সারা বিশ্বের পাহাড়ের বর্জ্যের মধ্যে এই প্লাস্টিক পচতে প্রায় পাঁচশো বছর সময় নেয় এবং ১৯৫০-এর দশক থেকে তৈরি প্রতিটি কণা আজও প্রকৃতিতে বিদ্যমান। এদিকে বাংলাদেশ ও জার্মানিরতে ৯০% থেকে ২০% শতাংশই হলো এগুলো। প্রতি বছর এক কোটি টনের বেশি প্লাস্টিকে দূষিত হচ্ছে পাহাড়ের । আর তাতেই জমছে প্লাস্টিকের পাহাড়।

প্লাস্টিকদূষণের ফলে প্রতি বছর ২০% প্লাস্টিক রিসাইকেল হয় পাহাড়ের পেপে চাষ, পিয়ারা,আনারস চাষ ইত্যাদি প্ল্যান্টগুলো অব্যহত থাকে এবং ৮০% প্লাস্টিক রাস্তার পাশে জমা হয়ে বন্যা ও নদী ভাঙনের পাহাড় ধস এর কারণ হয় ফলে প্রাণীর এবং মানুষ পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি হয় জানা গেছে পাহাড়ের আবর্জনার অধিকাংশ আনুমানিক ৮০ শতাংশই ভূমিভিত্তিক উৎস থেকে আসে।ফলে পাহাড়ের মধ্যে ডেড জোন তৈরি হচ্ছে। ডেড জোন এমন একটি জায়গা যেখানে পাহাড় প্রাণির জন্য অক্সিজেন একেবারেই থাকে না।আবার বাতাস, বৃষ্টি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ হারিকেন, সুনামি, টর্নেডো ও বন্যার কারণে উপকূলীয় এলাকার আবর্জনা পাহাড়ের নিক্ষিপ্ত হয়। অবশিষ্ট ২০ শতাংশ থেকে ৮০% বর্জ্য আসে পাহাড়ভিত্তিক মুক্ত থেকে।

এর ফলে সমুদ্র দূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বারবার সতর্ক করছেন পরিবেশবিদরা। এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি বছর ৮ থেকে ১২ মেট্রিক টন প্লাস্টিক পাহাড় মুক্ত নিক্ষেপ করা হয়। যেখানে বর্তমানে বিশ্বজুড়ে পাহাড় পৃষ্ঠে ১৫ থেকে ৫১ ট্রিলিয়ন প্লাস্টিকের টুকরো ভাসছে এবং যার ফলে পাহাড়ের প্লাস্টিক মুক্ত সব ধরনের ফল চাষের ভাল উৎপাদন হয়।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

পরিবেশ সুরক্ষায় উদ্বেগ: পাহাড়ের প্রাণহীন ডেড জোন তৈরি করছে প্লাস্টিক

আপডেট সময়ঃ ০৬:৫৫:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মোঃ জুয়েল হোসাইন,বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি :

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের কনফারেন্স হলে পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময়ে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোস্তফা কামাল মজুমদার,বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড,মেহেদী মাসুদ এবং সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি।

এসময় প্রধান বক্তরা বলেন,পরিবেশ দূষণে সবচেয়ে বেশি মারাত্মক প্রভাব ফেলে প্লাস্টিক। এটি এমন একটি বস্তু যা কখনো বিনষ্ট হয় না। বছরের পর বছর এটি থেকে যায়। ফলে দূষণ আরও বাড়ে। সেই হিসেবে দেখতে গেলে পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে আরও একটি বড় দিক পাহাড় । বিশ্বজুড়ে মানুষ নানাভাবে পাহাড়ের উপর নির্ভরশীল। গোটা বিশ্ব জুড়ে পাহাড় কেন্দ্র করে ভয়ানক আরও একটি উপকার বেড়ে উঠছে হু হু করে। যা নিয়ে চিন্তিত পরিবেশবিদরা। বর্তমান প্রজন্ম তো বটেই পাশাপাশি অদূর ভবিষ্যতে পরবর্তী প্রজন্ম আদেও পাহাড়ের মুক্ত টিকে থাকার উপযুক্ত হবে বলে গণ্য করা যায়।

এসময়ে সভাপতি জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি তিনি বলেন, সব সময় শতর্ক থাকাটার ভাল আমরা পরিবেশকে যদি বাঁচাতে হইলে আমাদের এলাকায় গুলো সব সময় পরিস্কার পরিছন্নতা রাখার নিজ দায়িত্ব নিতে হবে। রাস্তার স্কুল ছেলে মেয়েরা চিপস জাতীয় কিছু খেলে পেকেট যেখানে সেখানে ফেলে না দেয় আমরা এবং এটাই সবার থেকে বজায় রাখার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করি।

এদিকে এই ভয়ানক সমস্যাটি হলো পাহাড়ের বর্জ্য। মানবসৃষ্ট সমস্ত কঠিন পদার্থগুলোকে পাহাড়ের নিক্ষেপ করা হচ্ছে। যা পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা বলে মনে করছে। ফলে পরিবেশবিদরা। জাতিসংঘের এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের রিপোর্ট যা বলছে তা শুনলে চমকে যাবার মত বিষয়।

পোগ্রামের রিপোর্ট অনুসারে, প্লাস্টিক, কাচ, কাঠ ও রাবারকে প্রধান পাহাড় বর্জ্য হিসেবে ধরা হয়। সারা বিশ্বের পাহাড়ের বর্জ্যের মধ্যে এই প্লাস্টিক পচতে প্রায় পাঁচশো বছর সময় নেয় এবং ১৯৫০-এর দশক থেকে তৈরি প্রতিটি কণা আজও প্রকৃতিতে বিদ্যমান। এদিকে বাংলাদেশ ও জার্মানিরতে ৯০% থেকে ২০% শতাংশই হলো এগুলো। প্রতি বছর এক কোটি টনের বেশি প্লাস্টিকে দূষিত হচ্ছে পাহাড়ের । আর তাতেই জমছে প্লাস্টিকের পাহাড়।

প্লাস্টিকদূষণের ফলে প্রতি বছর ২০% প্লাস্টিক রিসাইকেল হয় পাহাড়ের পেপে চাষ, পিয়ারা,আনারস চাষ ইত্যাদি প্ল্যান্টগুলো অব্যহত থাকে এবং ৮০% প্লাস্টিক রাস্তার পাশে জমা হয়ে বন্যা ও নদী ভাঙনের পাহাড় ধস এর কারণ হয় ফলে প্রাণীর এবং মানুষ পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি হয় জানা গেছে পাহাড়ের আবর্জনার অধিকাংশ আনুমানিক ৮০ শতাংশই ভূমিভিত্তিক উৎস থেকে আসে।ফলে পাহাড়ের মধ্যে ডেড জোন তৈরি হচ্ছে। ডেড জোন এমন একটি জায়গা যেখানে পাহাড় প্রাণির জন্য অক্সিজেন একেবারেই থাকে না।আবার বাতাস, বৃষ্টি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ হারিকেন, সুনামি, টর্নেডো ও বন্যার কারণে উপকূলীয় এলাকার আবর্জনা পাহাড়ের নিক্ষিপ্ত হয়। অবশিষ্ট ২০ শতাংশ থেকে ৮০% বর্জ্য আসে পাহাড়ভিত্তিক মুক্ত থেকে।

এর ফলে সমুদ্র দূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বারবার সতর্ক করছেন পরিবেশবিদরা। এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি বছর ৮ থেকে ১২ মেট্রিক টন প্লাস্টিক পাহাড় মুক্ত নিক্ষেপ করা হয়। যেখানে বর্তমানে বিশ্বজুড়ে পাহাড় পৃষ্ঠে ১৫ থেকে ৫১ ট্রিলিয়ন প্লাস্টিকের টুকরো ভাসছে এবং যার ফলে পাহাড়ের প্লাস্টিক মুক্ত সব ধরনের ফল চাষের ভাল উৎপাদন হয়।