ঢাকা, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ই-পেপার

বঙ্গভবনের সামনে কাঁটাতারের বেড়া, বিজিবি মোতায়েন

দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ১০:৫৬:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৮২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ চেয়ে গত মঙ্গলবার রাতে বঙ্গভবনে প্রবেশের চেষ্টার ঘটনা ও পুলিশ সদস্যদের ওপরে হামলার পর আজ বুধবার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বঙ্গভবনের প্রধান ফটকের সামনে ব্যারিকেড ছাড়াও কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে, যা সেদিন ছিল না। গতকাল বুধবার বঙ্গভবনের প্রধান ফটকের সামনে এপিবিএন, বিজিবি, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্যকে সশস্ত্র অবস্থায় দেখা গেছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে এপিসি, জলকামানসহ রায়ট কার। সরেজমিনে দেখা যায়, বঙ্গভবন এলাকায় গতকাল বুধবার সকাল থেকে বিক্ষুব্ধ জনতা বা আন্দোলনকারীদের কাউকে না দেখা গেলেও নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়টি ছিল স্পষ্ট। গতকালের উদ্ভূত পরিস্থিতির ঘটনার পর গতকাল বুধবার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে গণমাধ্যমকর্মীদের বাড়তি উপস্থিতি দেখা গেছে। বঙ্গভবন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. শাহরিয়ার আলী বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে উদ্ভূত ও অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে। বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এক শিক্ষার্থীসহ দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, আহত হয়েছেন তিনজন। তিনি বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়নের ভিত্তিতে এই এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত আন্দোলনকারী বা বিক্ষুব্ধ জনতাকে দেখা যায়নি। তবে আমরা সতর্ক আছি। পুলিশের পাশাপাশি এপিবিএন, বিজিবি, সেনাবাহিনীর সদস্য মোতায়ন রয়েছেন। ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ডিএমপির নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল বুধবার বঙ্গভবন এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি ও যান চলাচল স্বাভাবিক। ছাত্র-জনতার তোপের মুখে পদত্যাগ করে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তিনি পালিয়ে যাওয়ার পরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিয়েছেন এবং আমি তা গ্রহণ করেছি। তবে সম্প্রতি মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি জানান, তিনি শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু তার কাছে এ-সংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই। রাষ্ট্রপতি বলেন, বহু চেষ্টা করেও (পদত্যাগপত্র সংগ্রহ করার) আমি ব্যর্থ হয়েছি। তিনি হয়তো সময় পাননি। এরপর নতুন করে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন সরকার পতনে নেতৃত্বদানকারীরা। সোমবার দিবাগত রাতে ফেসবুকে এ-সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লেখেন, সন্ত্রাসী ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ও ফ্যাসিবাদের দোসর রাষ্ট্রপতি চুপ্পুর পদত্যাগের দাবিতে ছাত্র-জনতার গণজমায়েত। এরপর গত মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে বিভিন্ন ব্যানারে বিক্ষুব্ধ জনতা বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে স্লোগান দেন। গত মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত পরিস্থিতির স্বাভাবিকই ছিল। তবে এরপর আন্দোলনকারীদের একটি দল বারবার বঙ্গভবনে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে। ব্যর্থ হয়ে বঙ্গভবনের সামনের নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেন একদল বিক্ষোভকারী। তবে সেনাবাহিনী ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কঠোর অবস্থানের ফলে তারা কেউ ভেতরে ঢুকতে পারেননি। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিক থেকে এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিক্ষোভকারীরা ‘ভুয়া’, ‘ভুয়া’সহ রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চেয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এরপর রাত ১০টার দিকে পুলিশের ওপর এবং পুলিশের গাড়িতে হামলা করেন আন্দোলনকারীরা। হামলায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

বঙ্গভবনের সামনে কাঁটাতারের বেড়া, বিজিবি মোতায়েন

আপডেট সময়ঃ ১০:৫৬:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ চেয়ে গত মঙ্গলবার রাতে বঙ্গভবনে প্রবেশের চেষ্টার ঘটনা ও পুলিশ সদস্যদের ওপরে হামলার পর আজ বুধবার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বঙ্গভবনের প্রধান ফটকের সামনে ব্যারিকেড ছাড়াও কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে, যা সেদিন ছিল না। গতকাল বুধবার বঙ্গভবনের প্রধান ফটকের সামনে এপিবিএন, বিজিবি, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্যকে সশস্ত্র অবস্থায় দেখা গেছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে এপিসি, জলকামানসহ রায়ট কার। সরেজমিনে দেখা যায়, বঙ্গভবন এলাকায় গতকাল বুধবার সকাল থেকে বিক্ষুব্ধ জনতা বা আন্দোলনকারীদের কাউকে না দেখা গেলেও নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়টি ছিল স্পষ্ট। গতকালের উদ্ভূত পরিস্থিতির ঘটনার পর গতকাল বুধবার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে গণমাধ্যমকর্মীদের বাড়তি উপস্থিতি দেখা গেছে। বঙ্গভবন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. শাহরিয়ার আলী বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে উদ্ভূত ও অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে। বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এক শিক্ষার্থীসহ দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, আহত হয়েছেন তিনজন। তিনি বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়নের ভিত্তিতে এই এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত আন্দোলনকারী বা বিক্ষুব্ধ জনতাকে দেখা যায়নি। তবে আমরা সতর্ক আছি। পুলিশের পাশাপাশি এপিবিএন, বিজিবি, সেনাবাহিনীর সদস্য মোতায়ন রয়েছেন। ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ডিএমপির নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল বুধবার বঙ্গভবন এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি ও যান চলাচল স্বাভাবিক। ছাত্র-জনতার তোপের মুখে পদত্যাগ করে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তিনি পালিয়ে যাওয়ার পরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিয়েছেন এবং আমি তা গ্রহণ করেছি। তবে সম্প্রতি মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি জানান, তিনি শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু তার কাছে এ-সংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই। রাষ্ট্রপতি বলেন, বহু চেষ্টা করেও (পদত্যাগপত্র সংগ্রহ করার) আমি ব্যর্থ হয়েছি। তিনি হয়তো সময় পাননি। এরপর নতুন করে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন সরকার পতনে নেতৃত্বদানকারীরা। সোমবার দিবাগত রাতে ফেসবুকে এ-সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লেখেন, সন্ত্রাসী ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ও ফ্যাসিবাদের দোসর রাষ্ট্রপতি চুপ্পুর পদত্যাগের দাবিতে ছাত্র-জনতার গণজমায়েত। এরপর গত মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে বিভিন্ন ব্যানারে বিক্ষুব্ধ জনতা বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে স্লোগান দেন। গত মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত পরিস্থিতির স্বাভাবিকই ছিল। তবে এরপর আন্দোলনকারীদের একটি দল বারবার বঙ্গভবনে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে। ব্যর্থ হয়ে বঙ্গভবনের সামনের নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেন একদল বিক্ষোভকারী। তবে সেনাবাহিনী ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কঠোর অবস্থানের ফলে তারা কেউ ভেতরে ঢুকতে পারেননি। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিক থেকে এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিক্ষোভকারীরা ‘ভুয়া’, ‘ভুয়া’সহ রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চেয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এরপর রাত ১০টার দিকে পুলিশের ওপর এবং পুলিশের গাড়িতে হামলা করেন আন্দোলনকারীরা। হামলায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন।