ঢাকা, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ই-পেপার

বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল এলাকা প্লাবিত

দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৮:৪১:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪
  • / ১০৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে মুষলধারে বৃষ্টি ও জোয়ারে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে কয়েক হাজার মাছের ঘের ও লক্ষাধিক একর ফসলি জমি প্লাবিত হয়ে খামারি ও চাষির ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, এবারে ঝড়ের সময় যে প্লাবন হয়েছে তা দক্ষিণাঞ্চলে এর আগে কখনও দেখা যায়নি। আবার ঘূর্ণিঝড় রিমালের মতো দীর্ঘসময় ঝড়ের তা-ব দেখেননি তারা। এ ঝড় রাত কাটিয়ে গোটা দিনের অর্ধেকের বেশি সময় অর্থাৎ ১২-১৫ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে দক্ষিণাঞ্চলে প্রভাব খাটিয়েছে। যা সিডর, আইলা, নার্গিসের সময়ও এমনটা লক্ষ্য করা যায়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে এমনটা হচ্ছে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপকূলীয় অধ্যয়ন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলন, গত ২০ বছর পূর্বেও বর্ষার সময়েই ৮০ ভাগ বৃষ্টিপাত হয়ে যেত। কিন্তু বর্তমান আমরা শীতকালেও বৃষ্টিপাত হতে দেখছি। তিনি বলেন, বছরে মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে যে বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা তার ২০ শতাংশও হয়নি। তবে সংরক্ষণে থাকা শক্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ঘূর্ণিঝড় রিমালে। ফলে ঝড়ের সময়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে ঝড়ের সময়ে স্বাভাবিক নিয়মে সাগরের পানি ফুলে ফেঁপে উঠে, তেমনি নদ-নদীতে জোয়ারের পানির উচ্চতা বেড়ে যায় এটাও ঠিক। সবমিলিয়ে জোয়ারের সঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টিপাত প্লাবনের পানির উচ্চতা বাড়িয়েছে বলে মত দেন তিনি। এদিকে, ঝড়ের দীর্ঘ স্থায়িত্বের কারণে প্লাবনের সময়টা দীর্ঘ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্লাবিত এলাকার পানি নেমে গেছে। তবে তবে বরিশাল নগরের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এখানে অপরিকল্পিত নগরায়ন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করেছে। একই কথা জানিয়েছেন বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের জলানুসন্ধান বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুম। তিনি বলেন, ঝড়ের কারণে স্বাভাবিক জোয়ারের সময়েই নদ-নদীতে পানির উচ্চতা বিপৎসীমা অতিক্রম করেছ। তার ওপরে মুষলধারে বৃষ্টি থাকায় প্লাবিত এলাকায় পানির উচ্চতা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, দক্ষিণাঞ্চলের মেঘনা, বুড়িশ্বর, বলেশ্বর, তেঁতুলিয়া, বিশখালী, কচা, কীর্তনখোলা নদীসহ বেশিরভাগ নদীর পানি ঝড়ের দিন সর্বোচ্চ বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোনো কোনো নদীর পানি বিপৎসীমার ৫-৮ ফুট উচ্চতা অতিক্রম করে প্রবাহিত হয়েছে। এদিকে আবহাওয়া অফিস বলছে, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বরিশালে ১৪০ মিলিমিটারের ওপরে বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা স্বল্প সময়ে বেশ ভালো পরিমাণের বৃষ্টিপাত।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল এলাকা প্লাবিত

আপডেট সময়ঃ ০৮:৪১:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে মুষলধারে বৃষ্টি ও জোয়ারে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে কয়েক হাজার মাছের ঘের ও লক্ষাধিক একর ফসলি জমি প্লাবিত হয়ে খামারি ও চাষির ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, এবারে ঝড়ের সময় যে প্লাবন হয়েছে তা দক্ষিণাঞ্চলে এর আগে কখনও দেখা যায়নি। আবার ঘূর্ণিঝড় রিমালের মতো দীর্ঘসময় ঝড়ের তা-ব দেখেননি তারা। এ ঝড় রাত কাটিয়ে গোটা দিনের অর্ধেকের বেশি সময় অর্থাৎ ১২-১৫ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে দক্ষিণাঞ্চলে প্রভাব খাটিয়েছে। যা সিডর, আইলা, নার্গিসের সময়ও এমনটা লক্ষ্য করা যায়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে এমনটা হচ্ছে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপকূলীয় অধ্যয়ন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলন, গত ২০ বছর পূর্বেও বর্ষার সময়েই ৮০ ভাগ বৃষ্টিপাত হয়ে যেত। কিন্তু বর্তমান আমরা শীতকালেও বৃষ্টিপাত হতে দেখছি। তিনি বলেন, বছরে মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে যে বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা তার ২০ শতাংশও হয়নি। তবে সংরক্ষণে থাকা শক্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ঘূর্ণিঝড় রিমালে। ফলে ঝড়ের সময়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে ঝড়ের সময়ে স্বাভাবিক নিয়মে সাগরের পানি ফুলে ফেঁপে উঠে, তেমনি নদ-নদীতে জোয়ারের পানির উচ্চতা বেড়ে যায় এটাও ঠিক। সবমিলিয়ে জোয়ারের সঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টিপাত প্লাবনের পানির উচ্চতা বাড়িয়েছে বলে মত দেন তিনি। এদিকে, ঝড়ের দীর্ঘ স্থায়িত্বের কারণে প্লাবনের সময়টা দীর্ঘ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্লাবিত এলাকার পানি নেমে গেছে। তবে তবে বরিশাল নগরের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এখানে অপরিকল্পিত নগরায়ন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করেছে। একই কথা জানিয়েছেন বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের জলানুসন্ধান বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুম। তিনি বলেন, ঝড়ের কারণে স্বাভাবিক জোয়ারের সময়েই নদ-নদীতে পানির উচ্চতা বিপৎসীমা অতিক্রম করেছ। তার ওপরে মুষলধারে বৃষ্টি থাকায় প্লাবিত এলাকায় পানির উচ্চতা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, দক্ষিণাঞ্চলের মেঘনা, বুড়িশ্বর, বলেশ্বর, তেঁতুলিয়া, বিশখালী, কচা, কীর্তনখোলা নদীসহ বেশিরভাগ নদীর পানি ঝড়ের দিন সর্বোচ্চ বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোনো কোনো নদীর পানি বিপৎসীমার ৫-৮ ফুট উচ্চতা অতিক্রম করে প্রবাহিত হয়েছে। এদিকে আবহাওয়া অফিস বলছে, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বরিশালে ১৪০ মিলিমিটারের ওপরে বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা স্বল্প সময়ে বেশ ভালো পরিমাণের বৃষ্টিপাত।