ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ই-পেপার

বাসের অগ্রিম টিকিট সংগ্রহের চাপ নেই

দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৮:৫২:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ এপ্রিল ২০২৩
  • / ১৩৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শুরু হয়েছে দূরপাল্লার বাসের আগাম টিকিট বিক্রি। তবে রাজধানীর বাস কাউন্টারগুলোতে টিকিট বিক্রির ব্যস্ততা তেমন চোখে পড়ছে না। অধিকাংশ কাউন্টারেই ফাঁকা। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বাসের অগ্রিম টিকিট সংগ্রহের কোনো চাপ দেখা যায়নি। আজ শনিবার গাবতলী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে এমন চিত্র দেখা গেছে। অনেক যাত্রী অনলাইনে বাসের টিকিট সংগ্রহ করেছেন। আবার শহরের অলিগলিতে অনেক টিকিট কাউন্টার হওয়ায় কেউ কষ্ট করে গাবতলী আসতে চান না। অন্যদিকে পদ্মা সেতুর কল্যাণেও চাপ কমেছে গাবতলীতে। আগে খুলনা, বরিশাল, গোপালগঞ্জ, নড়াইলের যাত্রীরা গাবতলী হয়ে বাড়ি ফিরতেন। তবে পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এসব জেলার মানুষ আর গাবতলী আসেন না। এসব অঞ্চলের যাত্রী সায়েদাবাদ থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াত করছেন। ফলে গাবতলী বাস টার্মিনালে সেই চিরচেনা ভিড় আর নেই। অন্যদিকে, রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের যেসব গাড়ি গাবতলী থেকে টিকিট দিচ্ছে সেগুলোতেও তেমন ভিড় দেখা যায়নি। এসব রুটের যাত্রীরা ঈদের অগ্রিম টিকিট দেওয়ার প্রথম দিন গত শুক্রবারই টিকিট সংগ্রহ করেছেন। ঢাকা-সাতক্ষীরাগামী রোজিনা এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মোহাম্মদ সানোয়ার আলী বলেন, আগে ঈদের এ সময় গাবতলীতে যাত্রীর অনেক ভিড় থাকতো। অথচ গাবতলী দেখে বোঝার উপায় নেই কয়েকদিন পর ঈদ। যাত্রীরা যে যেভাবে পারে পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াত করছে। আগে নড়াইল, বরিশাল, গোপালগঞ্জের মানুষ গাবতলী হয়ে যাতায়াত করতো। এখন রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরের যাত্রী, এমনকি যশোরের যাত্রীরাও পদ্মাসেতু হয়ে যাতায়াত করেন। ঢাকা-গোপালগঞ্জ-কাজুলিয়া-কোটালিপাড়া রুটে যাতায়াত করে দিগন্ত পরিবহন। গত ৭ এপ্রিল থেকে অগ্রিম টিকিট দেওয়া শুরু করেছে পরিবহনটি। অথচ দ্বিতীয় দিনে এসেই কোনো ভিড় নেই। একসময় এই টিকিট কাউন্টারে অগ্রিম টিকিটের জন্য জটলা লেগে থাকতো। দিগন্ত পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার জানান, সকাল থেকে দুটি অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়েছে। গাবতলীর সব যাত্রী পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াত করছে। গাবতলী একদম ফাঁকা। অনেক টিকিট কাউন্টারও বন্ধ। কেউ কেউ বসে অলস সময় পার করছেন। গাবতলী বাস টার্মিনালের সঙ্গে বেড়িবাঁধ হয়ে বাবু বাজার দিয়ে পদ্মা সেতুর সঙ্গে সংযোগ সড়ক নির্মাণের দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তা না হলে গাবতলী বাস টার্মিনাল একসময় বিলীন হয়ে যাবে বলে শঙ্কা তাদের। দিগন্ত পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার রাশেদ বলেন, অগ্রিম টিকিটের কোনো যাত্রী নাই। গাবতলী ফাঁকা। মানুষ সব পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াত করে। আমরা যারা গাবতলীতে কাজ করে খায়, এটাও হারিয়ে যাবে। সরকারের কাছে দাবি গাবতলী মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ বাবুবাজার সেতু হয়ে পদ্মা সেতু সড়কের সঙ্গে লিংক করে দেওয়া হয় যেন। না হলে গাবতলী হারিয়ে যাবে। অন্যদিকে গতকাল শনিবার রাজধানীর সায়েদাবাদে দেখা গেছে, শ্যামলী, হানিফসহ অধিকাংশ কাউন্টারে আগাম টিকিট বিক্রি হচ্ছে না। ইউনিক, সৌদিয়াসহ কয়েকটি কাউন্টারে টিকিট বিক্রি হলেও যাত্রীদের সাড়া কম। জানা গেছে, ২২ এপ্রিল ঈদুল ফিতর ধরে (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে) বাস কাউন্টারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে ১৬ থেকে ২১ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট। সায়েদাবাদ ইউনিক বাস কাউন্টারের শাহের আলী বলেন, আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। আমরাও আগাম টিকিট বিক্রি করছি। যাত্রীরা আসলে শুধু ফোন করে জিজ্ঞেস করছে আমরা আগাম টিকিট ছেড়েছি কি না। তবে দ্ইু একজন ছাড়া কেউ টিকিট নেয়নি। আমাদের বাড়তি গাড়ি আছে ও বিকল্প ব্যবস্থা আছে। তাই আমরা আগাম টিকিট বিক্রি করতে পারি। কোন জায়গায় যানজট হলে গাড়ি যদি আসতে বিলম্ব হয় সেক্ষেত্রে বিকল্প আমরা কি করবো সেটিও আমরা পরিকল্পনা করে রেখেছি। সাকুরা বাস কাউন্টারের সেলস এক্সিকিউটিভ মো. বাবুল বলেন, আমরা ঈদের আগাম টিকিট অনলাইনে দিয়ে দিয়েছি। আমাদের ইতোমধ্যে অনেক টিকিট শেষও হয়ে গেছে। আমাদের কাউন্টারে টিকিট দিয়েছে কম, কাউন্টারে তো লোকজন দুর্নীতি করে টিকিট থাকলেও দেয় না। এজন্যই অনলাইনে পুরে টিকিট দিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে মানুষ টিকিট পায়। এদিকে, অনেক কাউন্টারে আগাম টিকিট বিক্রি হচ্ছে না। রাস্তায় যানজটে শিডিউল বিপর্যয়ের কথা মাথায় রেখে আগাম টিকিট বিক্রি করছেন না অনেকে, বলছেন সংশ্লিষ্টরা। হানিফ ৫ নম্বর কাউন্টারের ম্যানেজার মো. ইকবাল বলেন, আমাদের কাউন্টারে ঈদের টিকিট নিয়ে বাড়তি চাপ নেই। আমরা আগাম টিকিটও বিক্রি করছি না। আমরা সেভাবে আগাম বিক্রিও করবো না। কারণ দেখা যায় যে ঈদের সময় গাড়ির সময় দিয়েছি সকাল ৯টা, সেসময় গাড়ি যানজটে হয়ত পড়ে থাকবে পোস্তাগোলা। তখন আরেক ধরনের সমস্যা হয়। তাই ঈদের সময় তাৎক্ষনিক টিকিট বিক্রি করি। গতবারও আমরা আগাম টিকিট বেচি নাই। এবারও বেচুম না।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

বাসের অগ্রিম টিকিট সংগ্রহের চাপ নেই

আপডেট সময়ঃ ০৮:৫২:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শুরু হয়েছে দূরপাল্লার বাসের আগাম টিকিট বিক্রি। তবে রাজধানীর বাস কাউন্টারগুলোতে টিকিট বিক্রির ব্যস্ততা তেমন চোখে পড়ছে না। অধিকাংশ কাউন্টারেই ফাঁকা। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বাসের অগ্রিম টিকিট সংগ্রহের কোনো চাপ দেখা যায়নি। আজ শনিবার গাবতলী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে এমন চিত্র দেখা গেছে। অনেক যাত্রী অনলাইনে বাসের টিকিট সংগ্রহ করেছেন। আবার শহরের অলিগলিতে অনেক টিকিট কাউন্টার হওয়ায় কেউ কষ্ট করে গাবতলী আসতে চান না। অন্যদিকে পদ্মা সেতুর কল্যাণেও চাপ কমেছে গাবতলীতে। আগে খুলনা, বরিশাল, গোপালগঞ্জ, নড়াইলের যাত্রীরা গাবতলী হয়ে বাড়ি ফিরতেন। তবে পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এসব জেলার মানুষ আর গাবতলী আসেন না। এসব অঞ্চলের যাত্রী সায়েদাবাদ থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াত করছেন। ফলে গাবতলী বাস টার্মিনালে সেই চিরচেনা ভিড় আর নেই। অন্যদিকে, রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের যেসব গাড়ি গাবতলী থেকে টিকিট দিচ্ছে সেগুলোতেও তেমন ভিড় দেখা যায়নি। এসব রুটের যাত্রীরা ঈদের অগ্রিম টিকিট দেওয়ার প্রথম দিন গত শুক্রবারই টিকিট সংগ্রহ করেছেন। ঢাকা-সাতক্ষীরাগামী রোজিনা এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মোহাম্মদ সানোয়ার আলী বলেন, আগে ঈদের এ সময় গাবতলীতে যাত্রীর অনেক ভিড় থাকতো। অথচ গাবতলী দেখে বোঝার উপায় নেই কয়েকদিন পর ঈদ। যাত্রীরা যে যেভাবে পারে পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াত করছে। আগে নড়াইল, বরিশাল, গোপালগঞ্জের মানুষ গাবতলী হয়ে যাতায়াত করতো। এখন রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরের যাত্রী, এমনকি যশোরের যাত্রীরাও পদ্মাসেতু হয়ে যাতায়াত করেন। ঢাকা-গোপালগঞ্জ-কাজুলিয়া-কোটালিপাড়া রুটে যাতায়াত করে দিগন্ত পরিবহন। গত ৭ এপ্রিল থেকে অগ্রিম টিকিট দেওয়া শুরু করেছে পরিবহনটি। অথচ দ্বিতীয় দিনে এসেই কোনো ভিড় নেই। একসময় এই টিকিট কাউন্টারে অগ্রিম টিকিটের জন্য জটলা লেগে থাকতো। দিগন্ত পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার জানান, সকাল থেকে দুটি অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়েছে। গাবতলীর সব যাত্রী পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াত করছে। গাবতলী একদম ফাঁকা। অনেক টিকিট কাউন্টারও বন্ধ। কেউ কেউ বসে অলস সময় পার করছেন। গাবতলী বাস টার্মিনালের সঙ্গে বেড়িবাঁধ হয়ে বাবু বাজার দিয়ে পদ্মা সেতুর সঙ্গে সংযোগ সড়ক নির্মাণের দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তা না হলে গাবতলী বাস টার্মিনাল একসময় বিলীন হয়ে যাবে বলে শঙ্কা তাদের। দিগন্ত পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার রাশেদ বলেন, অগ্রিম টিকিটের কোনো যাত্রী নাই। গাবতলী ফাঁকা। মানুষ সব পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াত করে। আমরা যারা গাবতলীতে কাজ করে খায়, এটাও হারিয়ে যাবে। সরকারের কাছে দাবি গাবতলী মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ বাবুবাজার সেতু হয়ে পদ্মা সেতু সড়কের সঙ্গে লিংক করে দেওয়া হয় যেন। না হলে গাবতলী হারিয়ে যাবে। অন্যদিকে গতকাল শনিবার রাজধানীর সায়েদাবাদে দেখা গেছে, শ্যামলী, হানিফসহ অধিকাংশ কাউন্টারে আগাম টিকিট বিক্রি হচ্ছে না। ইউনিক, সৌদিয়াসহ কয়েকটি কাউন্টারে টিকিট বিক্রি হলেও যাত্রীদের সাড়া কম। জানা গেছে, ২২ এপ্রিল ঈদুল ফিতর ধরে (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে) বাস কাউন্টারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে ১৬ থেকে ২১ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট। সায়েদাবাদ ইউনিক বাস কাউন্টারের শাহের আলী বলেন, আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। আমরাও আগাম টিকিট বিক্রি করছি। যাত্রীরা আসলে শুধু ফোন করে জিজ্ঞেস করছে আমরা আগাম টিকিট ছেড়েছি কি না। তবে দ্ইু একজন ছাড়া কেউ টিকিট নেয়নি। আমাদের বাড়তি গাড়ি আছে ও বিকল্প ব্যবস্থা আছে। তাই আমরা আগাম টিকিট বিক্রি করতে পারি। কোন জায়গায় যানজট হলে গাড়ি যদি আসতে বিলম্ব হয় সেক্ষেত্রে বিকল্প আমরা কি করবো সেটিও আমরা পরিকল্পনা করে রেখেছি। সাকুরা বাস কাউন্টারের সেলস এক্সিকিউটিভ মো. বাবুল বলেন, আমরা ঈদের আগাম টিকিট অনলাইনে দিয়ে দিয়েছি। আমাদের ইতোমধ্যে অনেক টিকিট শেষও হয়ে গেছে। আমাদের কাউন্টারে টিকিট দিয়েছে কম, কাউন্টারে তো লোকজন দুর্নীতি করে টিকিট থাকলেও দেয় না। এজন্যই অনলাইনে পুরে টিকিট দিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে মানুষ টিকিট পায়। এদিকে, অনেক কাউন্টারে আগাম টিকিট বিক্রি হচ্ছে না। রাস্তায় যানজটে শিডিউল বিপর্যয়ের কথা মাথায় রেখে আগাম টিকিট বিক্রি করছেন না অনেকে, বলছেন সংশ্লিষ্টরা। হানিফ ৫ নম্বর কাউন্টারের ম্যানেজার মো. ইকবাল বলেন, আমাদের কাউন্টারে ঈদের টিকিট নিয়ে বাড়তি চাপ নেই। আমরা আগাম টিকিটও বিক্রি করছি না। আমরা সেভাবে আগাম বিক্রিও করবো না। কারণ দেখা যায় যে ঈদের সময় গাড়ির সময় দিয়েছি সকাল ৯টা, সেসময় গাড়ি যানজটে হয়ত পড়ে থাকবে পোস্তাগোলা। তখন আরেক ধরনের সমস্যা হয়। তাই ঈদের সময় তাৎক্ষনিক টিকিট বিক্রি করি। গতবারও আমরা আগাম টিকিট বেচি নাই। এবারও বেচুম না।