ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ই-পেপার

বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারে লুকিয়ে কাবুল থেকে দিল্লি পৌঁছাল কিশোর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময়ঃ ০৭:৩৫:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ১৫ বার পড়া হয়েছে

ল্যান্ডিং গিয়ার বক্সে ঢুকে (উড়োজাহাজের চাকা রাখার বাক্স) আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি চলে এসেছে এক কিশোর। অবশ্য ১৩ বছর বয়সি ওই আফগান কিশোর ভারত নয়, যেতে চেয়েছিল ইরানে। এ লক্ষ্যে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোরে সে গোপনে কাবুল বিমানবন্দরের ভেতরে ঢুকেছে। তারপর সবার চোখ এড়িয়ে যাত্রীদের একটি দলের সঙ্গে রানওয়েতে চলে যায়। সেখানে সে কেএএম এয়ারের উড়োজাহাজের চাকা রাখার বাক্সের ভেতর লুকিয়ে পড়ে। তার কাছে শুধু লাল রঙের একটি অডিও স্পিকার ছিল।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে।

প্রতিবেদন মতে, বিমানটি ছিল আফগানিস্তানের বেসরকারি মালিকানাধীন বিমান সংস্থা কেএএম এয়ারের। কাবুল থেকে বিমানটি প্রায় ৯০ মিনিটের উড়াল শেষে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। উড়োজাহাজটি বিমানবন্দরে অবতরণের পর বিস্ময়করভাবে ওই কিশোর একদম অক্ষত অবস্থায় চাকা রাখার বাক্স থেকে বেরিয়ে আসে।

বিমানবন্দরের কর্মীরা রানওয়েতে সাদা রঙের কুর্তা-পায়জামা পরা একটি কিশোরকে এলোমেলোভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের জানান। তখনই কাবুল থেকে এক কিশোরের বিস্ময়কর যাত্রা সম্পর্কে তারা জানতে পারেন। পরে সে দিন সন্ধ্যায় ওই কিশোরকে কাবুলগামী একটি ফ্লাইটে উঠিয়ে দেওয়া হয়।

সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সের (সিআইএসএফ) এক কর্মকর্তা বলেন, ওই কিশোর আফগানিস্তানের কেএএম এয়ারের কাবুল থেকে দিল্লিগামী একটি উড়োজাহাজের চাকা রাখার বাক্সে গোপনে উঠে পড়ে। রোববার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ২০ মিনিটে সেটি দিল্লি পৌঁছায়। সিআইএসএফের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে উড়োজাহাজের পেছন দিকের ল্যান্ডিং গিয়ার বক্সের ভেতর লুকিয়েছিল। সে আফগানিস্তানের কুন্দুজ শহরের বাসিন্দা।’

ওই কিশোরকে বিমানবন্দরের অভিবাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে নেওয়ার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারপর বিকেল চারটার দিকে একই উড়োজাহাজে করে কিশোরকে কাবুলে ফেরত পাঠানো হয়।

বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ হাজার ফুট উচ্চতা দিয়ে ওড়ে। ওই উচ্চতায় তাপমাত্রা মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যায়। এ ছাড়া উড়োজাহাজ যখন অত উঁচুতে ওড়ে, তখন প্রচণ্ড চাপের সৃষ্টি হয়।

উড়োজাহাজের চাকা রাখার বাক্সে লুকিয়ে দেশ ছাড়ার চেষ্টা এটাই প্রথম নয়। এমন ঘটনায় মৃত্যুর ঝুঁকি ৭৭ শতাংশের বেশি। ইউএস ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফএএ) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৪৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৩২ জন এ কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। কেবিন চাপমুক্ত রাখার ব্যবস্থা থাকলেও নিচের চাকা রাখার বাক্সে তেমন ব্যবস্থা থাকে না। তাই সেখানে কেউ থাকলে তার অক্সিজেনের অভাবে, প্রচণ্ড চাপে ও ঠান্ডায় জমে মারা যাওয়ার কথা। এমনকি চাকা ওঠানামার সময় মারাত্মক আঘাত পাওয়া বা পড়ে যাওয়ার ঝুঁকিও থাকে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারে লুকিয়ে কাবুল থেকে দিল্লি পৌঁছাল কিশোর

আপডেট সময়ঃ ০৭:৩৫:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ল্যান্ডিং গিয়ার বক্সে ঢুকে (উড়োজাহাজের চাকা রাখার বাক্স) আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি চলে এসেছে এক কিশোর। অবশ্য ১৩ বছর বয়সি ওই আফগান কিশোর ভারত নয়, যেতে চেয়েছিল ইরানে। এ লক্ষ্যে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোরে সে গোপনে কাবুল বিমানবন্দরের ভেতরে ঢুকেছে। তারপর সবার চোখ এড়িয়ে যাত্রীদের একটি দলের সঙ্গে রানওয়েতে চলে যায়। সেখানে সে কেএএম এয়ারের উড়োজাহাজের চাকা রাখার বাক্সের ভেতর লুকিয়ে পড়ে। তার কাছে শুধু লাল রঙের একটি অডিও স্পিকার ছিল।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে।

প্রতিবেদন মতে, বিমানটি ছিল আফগানিস্তানের বেসরকারি মালিকানাধীন বিমান সংস্থা কেএএম এয়ারের। কাবুল থেকে বিমানটি প্রায় ৯০ মিনিটের উড়াল শেষে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। উড়োজাহাজটি বিমানবন্দরে অবতরণের পর বিস্ময়করভাবে ওই কিশোর একদম অক্ষত অবস্থায় চাকা রাখার বাক্স থেকে বেরিয়ে আসে।

বিমানবন্দরের কর্মীরা রানওয়েতে সাদা রঙের কুর্তা-পায়জামা পরা একটি কিশোরকে এলোমেলোভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের জানান। তখনই কাবুল থেকে এক কিশোরের বিস্ময়কর যাত্রা সম্পর্কে তারা জানতে পারেন। পরে সে দিন সন্ধ্যায় ওই কিশোরকে কাবুলগামী একটি ফ্লাইটে উঠিয়ে দেওয়া হয়।

সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সের (সিআইএসএফ) এক কর্মকর্তা বলেন, ওই কিশোর আফগানিস্তানের কেএএম এয়ারের কাবুল থেকে দিল্লিগামী একটি উড়োজাহাজের চাকা রাখার বাক্সে গোপনে উঠে পড়ে। রোববার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ২০ মিনিটে সেটি দিল্লি পৌঁছায়। সিআইএসএফের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে উড়োজাহাজের পেছন দিকের ল্যান্ডিং গিয়ার বক্সের ভেতর লুকিয়েছিল। সে আফগানিস্তানের কুন্দুজ শহরের বাসিন্দা।’

ওই কিশোরকে বিমানবন্দরের অভিবাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে নেওয়ার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারপর বিকেল চারটার দিকে একই উড়োজাহাজে করে কিশোরকে কাবুলে ফেরত পাঠানো হয়।

বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ হাজার ফুট উচ্চতা দিয়ে ওড়ে। ওই উচ্চতায় তাপমাত্রা মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যায়। এ ছাড়া উড়োজাহাজ যখন অত উঁচুতে ওড়ে, তখন প্রচণ্ড চাপের সৃষ্টি হয়।

উড়োজাহাজের চাকা রাখার বাক্সে লুকিয়ে দেশ ছাড়ার চেষ্টা এটাই প্রথম নয়। এমন ঘটনায় মৃত্যুর ঝুঁকি ৭৭ শতাংশের বেশি। ইউএস ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফএএ) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৪৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৩২ জন এ কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। কেবিন চাপমুক্ত রাখার ব্যবস্থা থাকলেও নিচের চাকা রাখার বাক্সে তেমন ব্যবস্থা থাকে না। তাই সেখানে কেউ থাকলে তার অক্সিজেনের অভাবে, প্রচণ্ড চাপে ও ঠান্ডায় জমে মারা যাওয়ার কথা। এমনকি চাকা ওঠানামার সময় মারাত্মক আঘাত পাওয়া বা পড়ে যাওয়ার ঝুঁকিও থাকে।