মা-বোনসহ মরিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পিবিআইয়ের সুপারিশ

- আপডেট সময়ঃ ০৮:৪৮:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
- / ১৪৬ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক :
খুলনার বহুল আলোচিত অপহরণ মামলা প্রমাণিত না হওয়ায় রহিমা বেগম এবং তার দুই মেয়ে মরিয়ম মান্নান ও আদুরি আকতারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আজ সোমবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান। তিনি বলেন, রহিমা বেগমের স্বামী আবদুল মান্নান হাওলাদারের আরও একটি বিয়ে আছে। সেই ঘরের সন্তানরা বরগুনার পাথরঘাটায় থাকে। তাদের নগরীর মহেশ্বরপাশার জমির ভাগ না দেওয়ার জন্য রহিমা বেগমের অপহরণ নাটক সাজান মরিয়ম মান্নান। মিথ্যা মামলার অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আদালতে সুপারিশ করা হয়েছে। পুলিশ সুপার মুশফিকুর আরও বলেন, এর আগে এ মামলায় পুলিশ যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছিল, তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ফলে তাদের এই মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশও করা হয়েছে। রহিমা বেগমের সৎছেলের কাছ থেকে জমি কিনেছিলেন হেলাল শরিফ ও গোলাম কিবরিয়া। সেই জমি যেন তারা দখল নিতে না পারেন সেজন্যই পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন আদুরী। কথিত অপহরণ মামলায় তাদের জেলও খাটতে হয়েছে।’ যোগ করেন মুশফিক ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট রাতে খুলনা নগরীর মহেশ্বরপাশা এলাকার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম। তাকে অপহরণের অভিযোগ তুলে ২৮ আগস্ট তার ছোট মেয়ে আদুরী দৌলতপুর থানায় মামলা করেন। এ মামলায় গত ৪ সেপ্টেম্বর ও পরবর্তী সময়ে প্রতিবেশী পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব ও পুলিশ। তবে পিবিআই বলছে, রহিমা বেগম ২৭ আগস্ট রাতে তার তৃতীয় স্বামী বেল্লাল হাওলাদারের সহযোগিতায় ঢাকায় চলে যান। ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি ঢাকায় মেয়ে মরিয়মের কাছে ছিলেন। এরপর ৬ সেপ্টেম্বর চলে যান বান্দরবান। ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বান্দরবানে তিনি রিজিয়া বেগম নামের এক নারীর বাড়ি ছিলেন। ১২ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত একই এলাকার মনি বেগমের ভাতের হোটেলে কাজ নেন এবং তার বাড়িতেই থাকেন। পরে একটি অফিসে কাজের জন্য গেলে তারা রহিমার কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্মনিবন্ধন চান। এতে ভীত হয়ে ১৭ সেপ্টেম্বর রহিমা ফরিদপুরের বোয়ালমারীর সৈয়দপুর গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের বাড়িতে যান। সেখানে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে ভুয়া নাম এবং বাড়ি বাগেরহাট উল্লেখ করে জন্মনিবন্ধনেরও চেষ্টা করেন। ২৪ সেপ্টেম্বর উদ্ধার হওয়ার আগ পর্যন্ত রহিমা বোয়ালমারীতে ছিলেন, যা তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। মায়ের খোঁজ দেওয়ার দাবিতে তার মেয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেত্রী মরিয়ম ও পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন, পোস্টারিং ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। মাকে ফিরে পেতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক আকুতি-মিনতি করেন মরিয়ম মান্নান, যা দেশবাসীর মনে নাড়া দেয়। একপর্যায়ে ২২ আগস্ট ময়মনসিংহের ফুলপুর থানা পুলিশ তার মায়ের লাশ উদ্ধার করেছে দাবি করে ফেসবুকে পোস্ট দেন মরিয়ম। পরদিন ফুলপুর থানায় গিয়ে লাশটি তার মায়ের বলে শনাক্তও করেন। কিন্তু ২৪ সেপ্টেম্বর খুলনার দৌলতপুর থানা পুলিশ ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের বাড়িতে স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে থাকা রহিমাকে উদ্ধার করে। কুদ্দুস একসময় মহেশ্বরপাশায় রহিমার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।