ঢাকা, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫ | ই-পেপার

মিরপুর-১০ মেট্রো স্টেশন চালু করতে খরচ কত, জানালেন উপদেষ্টা

দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৭:৪০:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪
  • / ১১৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর-১০ স্টেশন প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পর যাত্রী চলাচলারে জন্য ফের খুলে দেওয়া হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, স্টেশনটি চালু করতে ব্যয় হয়েছে সোয়া এক কোটি টাকা। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে যাত্রীরা আবার মিরপুর-১০ স্টেশন থেকে ট্রেনে চড়তে পারছেন। প্রতিটি বগিতে দেখা গেছে উপচে পরা ভিড়। ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশনটি অল্প দিনের মধ্যে চালু হওয়ায় পথের ভোগান্তি থেকে রেহাই মিলেছে বলে যাত্রীদের ভাষ্য। সকাল সাড়ে ১০টায় স্টেশন পরিদর্শনে এসে উপদেষ্টা বলেন, অন্য স্টেশনের কার্যকারিতা ব্যহত না করে কিছু সরঞ্জাম এখানে রিপ্লেস করে এটি করা সম্ভব হয়েছে। স্টেশনটি মেরামত করার খরচ নিয়ে ফাওজুল কবির খান বলেন, আরো কিছু সরঞ্জাম এখানে লাগবে। আর অন্য স্টেশন থেকে যেগুলো রিপ্লেস করা হয়েছে, তা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এজন্য আরও ১৭ কোটি ৬০ লাখ টাকার মত লাগবে। এতে করে সর্বমোট খরচ হবে ১৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। তিনি বলেছেন, বিদেশি ও বাংলাদেশি মেট্রোরেলের অভিজ্ঞতাসম্পন্নদের সহযোগিতায় স্টেশনটি চালু করা সম্ভব হয়েছে। গত ১৯ জুলাই আন্দোলনের সময় মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন ভাঙচুর করা হয়। গত ১৪ অগাস্ট এই দুটি স্টেশন নিয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হয় বলে জানায় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত সোমবার ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এই স্টেশন ঠিক করতে কোন ঠিকাদার বা বিদেশি কাউকে লাগেনি। ডিএমটিসিএল নিজেই দুটি (কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০) স্টেশন ঠিক করেছে।” উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, আমরা মেট্রোরেলকে সহায়তার জন্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাফিউল হাসানের নেতৃত্বে একটি ‘ওভারসাইট কমিটি’ করেছিলাম। সেখানে বিদেশে মেট্রোরেলে কাজ করেন, এমন একজন দক্ষ লোককে যুক্ত করেছিলাম। ছাত্র আন্দোলনের একজন প্রতিনিধিও যুক্ত ছিলেন। এই কমিটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। মন্ত্রণালয় এবং মেট্রোরেলের সর্বস্তরের কর্মীদের নিয়েই স্টেশনটি চালু করা সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেন অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা। আন্দোলনের সময় ভাংচুরের পর মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন স্টেশন ঠিক করতে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ও ১ বছর সময় লাগবে বলে বলা হয়েছিল। ওই খরচ এবং সময়মীমা নিয়ে ফাওজুল কবির খান বলেন, “এমন নানান কিছু শোনা গিয়েছিল। আমরা সেটি স্বল্প ব্যয়ে কম সময়ে করতে পেরেছি। এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে স্বল্প ব্যয়ে কিভাবে উন্নয়ন প্রকল্প নেয়া যায়, তা আমরা করব। আমরা আশা করি, অপচয় রোধ করে সেই টাকা সাধারণ মানুষের কাজে ব্যবহার করতে পারব। মেট্রোরেলে টাকা অপচয় নাকি দুর্নীতি হয়েছে জানতে চাইলেতিনি বলেন, আমরা এখনো এটাকে এখন অপচয় বলছি। কারণ দুর্নীতি বললে, তার বিষয়ে সুস্পষ্ট থাকতে হবে। ভবিষ্যতে অপচয় কমানোসহ মেট্রোরেলে গতি আনতে দক্ষ-যোগ্য ব্যক্তিকে মেট্রোরেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদে দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমাদের প্রাথমিক কাজ একজন পেশাদার এমডিকে দায়িত্ব দেওয়া, যেন তিনি মেট্রো বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হন। মেট্রোরেলের বিভিন্ন স্তরে ‘প্রভাবমুক্ত হয়ে যোগ্যদের নিয়োগ দেওয়া হবে’ বলেও আশ্বাস দেন ফাওজুল কবির খান। মেট্রোরেলের ভাড়া কমবে কি না, সেই প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, “সরকারের ব্যয়ের সাথে সমন্বয় করে আমরা এটি বিবেচনায় নেব। তিনি বলেছেন শহরের যানজট এবং নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা সরকারের কাজের অগ্রাধিকারে আছে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) এর কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাফিউল হাসানসহ অনেকে এ সময় উপস্থিত ছিলেন। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলনকালে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১৮ জুলাই বিকালে বন্ধ হয়ে যায় মেট্রোরেল। পরদিন মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর ১০ স্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। হামলা চালানো হয় পল্লবী ও ১১ নম্বর স্টেশনে। এরপর থেকেই মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এক মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ২৫ অগাস্ট মেট্রোরেল চালু করা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর ১০ এবং কাজীপাড়া স্টেশন দুটি চালু করা যাচ্ছিল না। মেরামত শেষে প্রথমে যাত্রী চলাচলের জন্য গত ২০ সেপ্টেম্বর খুলে দেওয়া হয় কাজীপাড়া, এবার চালু হল মিরপুর ১০। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে এমআরটি-৬ লাইনের উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬টি স্টেশনের সবগুলোই খুলে দেওয়া হয়।
মেট্রো ‘ম্যাজিকের মত’
সকাল পৌনে ১০টায় কাওরানবাজার যাওয়ার জন্য মিরপুর ১০ স্টেশনে আসেন নাঈম হোসেন নামে এক ব্যক্তি। তিনি টিকেট মেশিনে টাকা দিয়ে কয়েক বার চেষ্টা করেও টিকেট সংগ্রহ করতে পারেননি। পরে কাউন্টারে গিয়ে স্টেশনকর্মীদের কাছ থেকে টিকেট সংগ্রহ করেন নাঈম। তার পেছনে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ফেরদৌস সারোয়ার নামে আরেকজনকে দেখা যায় মেশিনে টাকা দিয়েই নির্বিঘেœ নিজে নিজে টিকেট কাটতে পেরেছেন। নাঈম হোসেনের টিকেট কাটতে না পারার কারণ কী জানতে চাইলে স্টেশন কন্ট্রোলার খাইরুল ইসলাম বলেন, অনেক সময় পুরান টাকা বা ছেঁড়া টাকা হলে মেশিন নিতে চায় না। তবে আমাদের সবগুলো মেশিনই সচল আছে। যাত্রী ফেরদৌস সারোয়ার বলেন, “আমার অফিস ফার্মগেট হওয়ায় নিয়মিত মেট্রোতেই অফিসে যেতাম। মাঝে এই স্টেশনটা বন্ধ থাকায় বাসে যেতে হয়েছে। তখন অনেক ভোগান্তি হত। বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা। বাসও জায়গায় জায়গায় থেমে থাকে। ফলে সময়ও লাগত বেশি। মিরপুর ১০ স্টেশন চালু হওয়ায় ভোগান্তি কমেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই যানজটের ঢাকা শহরে তো মেট্রো ম্যাজিকের মতই গন্তব্যস্থলে নিয়ে যায়। তবে ৫ মিনিট পর পর মেট্রো পরিচালনা করার দাবি জানান তিনি। বিশেষ করে অফিস টাইমে প্রতি ৫ মিনিট পর পর মেট্রো চালু হওয়া দরকার বলে মনে করেন সারোয়ার। আগামী শুক্রবার থেকে অফপিক টাইমে মেট্রোরেলের হেডওয়ে (দুই ট্রেনের মধ্যবর্তী সময়) ১২ মিনিটের জায়গায় ১০ মিনিট করা হবে বলে জানিয়েছে ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল)। এতে ৬০টির বদলে দিনে ৭২টি ট্রেন চলাচল করবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

মিরপুর-১০ মেট্রো স্টেশন চালু করতে খরচ কত, জানালেন উপদেষ্টা

আপডেট সময়ঃ ০৭:৪০:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর-১০ স্টেশন প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পর যাত্রী চলাচলারে জন্য ফের খুলে দেওয়া হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, স্টেশনটি চালু করতে ব্যয় হয়েছে সোয়া এক কোটি টাকা। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে যাত্রীরা আবার মিরপুর-১০ স্টেশন থেকে ট্রেনে চড়তে পারছেন। প্রতিটি বগিতে দেখা গেছে উপচে পরা ভিড়। ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশনটি অল্প দিনের মধ্যে চালু হওয়ায় পথের ভোগান্তি থেকে রেহাই মিলেছে বলে যাত্রীদের ভাষ্য। সকাল সাড়ে ১০টায় স্টেশন পরিদর্শনে এসে উপদেষ্টা বলেন, অন্য স্টেশনের কার্যকারিতা ব্যহত না করে কিছু সরঞ্জাম এখানে রিপ্লেস করে এটি করা সম্ভব হয়েছে। স্টেশনটি মেরামত করার খরচ নিয়ে ফাওজুল কবির খান বলেন, আরো কিছু সরঞ্জাম এখানে লাগবে। আর অন্য স্টেশন থেকে যেগুলো রিপ্লেস করা হয়েছে, তা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এজন্য আরও ১৭ কোটি ৬০ লাখ টাকার মত লাগবে। এতে করে সর্বমোট খরচ হবে ১৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। তিনি বলেছেন, বিদেশি ও বাংলাদেশি মেট্রোরেলের অভিজ্ঞতাসম্পন্নদের সহযোগিতায় স্টেশনটি চালু করা সম্ভব হয়েছে। গত ১৯ জুলাই আন্দোলনের সময় মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন ভাঙচুর করা হয়। গত ১৪ অগাস্ট এই দুটি স্টেশন নিয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হয় বলে জানায় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত সোমবার ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এই স্টেশন ঠিক করতে কোন ঠিকাদার বা বিদেশি কাউকে লাগেনি। ডিএমটিসিএল নিজেই দুটি (কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০) স্টেশন ঠিক করেছে।” উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, আমরা মেট্রোরেলকে সহায়তার জন্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাফিউল হাসানের নেতৃত্বে একটি ‘ওভারসাইট কমিটি’ করেছিলাম। সেখানে বিদেশে মেট্রোরেলে কাজ করেন, এমন একজন দক্ষ লোককে যুক্ত করেছিলাম। ছাত্র আন্দোলনের একজন প্রতিনিধিও যুক্ত ছিলেন। এই কমিটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। মন্ত্রণালয় এবং মেট্রোরেলের সর্বস্তরের কর্মীদের নিয়েই স্টেশনটি চালু করা সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেন অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা। আন্দোলনের সময় ভাংচুরের পর মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন স্টেশন ঠিক করতে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ও ১ বছর সময় লাগবে বলে বলা হয়েছিল। ওই খরচ এবং সময়মীমা নিয়ে ফাওজুল কবির খান বলেন, “এমন নানান কিছু শোনা গিয়েছিল। আমরা সেটি স্বল্প ব্যয়ে কম সময়ে করতে পেরেছি। এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে স্বল্প ব্যয়ে কিভাবে উন্নয়ন প্রকল্প নেয়া যায়, তা আমরা করব। আমরা আশা করি, অপচয় রোধ করে সেই টাকা সাধারণ মানুষের কাজে ব্যবহার করতে পারব। মেট্রোরেলে টাকা অপচয় নাকি দুর্নীতি হয়েছে জানতে চাইলেতিনি বলেন, আমরা এখনো এটাকে এখন অপচয় বলছি। কারণ দুর্নীতি বললে, তার বিষয়ে সুস্পষ্ট থাকতে হবে। ভবিষ্যতে অপচয় কমানোসহ মেট্রোরেলে গতি আনতে দক্ষ-যোগ্য ব্যক্তিকে মেট্রোরেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদে দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমাদের প্রাথমিক কাজ একজন পেশাদার এমডিকে দায়িত্ব দেওয়া, যেন তিনি মেট্রো বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হন। মেট্রোরেলের বিভিন্ন স্তরে ‘প্রভাবমুক্ত হয়ে যোগ্যদের নিয়োগ দেওয়া হবে’ বলেও আশ্বাস দেন ফাওজুল কবির খান। মেট্রোরেলের ভাড়া কমবে কি না, সেই প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, “সরকারের ব্যয়ের সাথে সমন্বয় করে আমরা এটি বিবেচনায় নেব। তিনি বলেছেন শহরের যানজট এবং নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা সরকারের কাজের অগ্রাধিকারে আছে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) এর কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাফিউল হাসানসহ অনেকে এ সময় উপস্থিত ছিলেন। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলনকালে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১৮ জুলাই বিকালে বন্ধ হয়ে যায় মেট্রোরেল। পরদিন মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর ১০ স্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। হামলা চালানো হয় পল্লবী ও ১১ নম্বর স্টেশনে। এরপর থেকেই মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এক মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ২৫ অগাস্ট মেট্রোরেল চালু করা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর ১০ এবং কাজীপাড়া স্টেশন দুটি চালু করা যাচ্ছিল না। মেরামত শেষে প্রথমে যাত্রী চলাচলের জন্য গত ২০ সেপ্টেম্বর খুলে দেওয়া হয় কাজীপাড়া, এবার চালু হল মিরপুর ১০। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে এমআরটি-৬ লাইনের উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬টি স্টেশনের সবগুলোই খুলে দেওয়া হয়।
মেট্রো ‘ম্যাজিকের মত’
সকাল পৌনে ১০টায় কাওরানবাজার যাওয়ার জন্য মিরপুর ১০ স্টেশনে আসেন নাঈম হোসেন নামে এক ব্যক্তি। তিনি টিকেট মেশিনে টাকা দিয়ে কয়েক বার চেষ্টা করেও টিকেট সংগ্রহ করতে পারেননি। পরে কাউন্টারে গিয়ে স্টেশনকর্মীদের কাছ থেকে টিকেট সংগ্রহ করেন নাঈম। তার পেছনে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ফেরদৌস সারোয়ার নামে আরেকজনকে দেখা যায় মেশিনে টাকা দিয়েই নির্বিঘেœ নিজে নিজে টিকেট কাটতে পেরেছেন। নাঈম হোসেনের টিকেট কাটতে না পারার কারণ কী জানতে চাইলে স্টেশন কন্ট্রোলার খাইরুল ইসলাম বলেন, অনেক সময় পুরান টাকা বা ছেঁড়া টাকা হলে মেশিন নিতে চায় না। তবে আমাদের সবগুলো মেশিনই সচল আছে। যাত্রী ফেরদৌস সারোয়ার বলেন, “আমার অফিস ফার্মগেট হওয়ায় নিয়মিত মেট্রোতেই অফিসে যেতাম। মাঝে এই স্টেশনটা বন্ধ থাকায় বাসে যেতে হয়েছে। তখন অনেক ভোগান্তি হত। বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা। বাসও জায়গায় জায়গায় থেমে থাকে। ফলে সময়ও লাগত বেশি। মিরপুর ১০ স্টেশন চালু হওয়ায় ভোগান্তি কমেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই যানজটের ঢাকা শহরে তো মেট্রো ম্যাজিকের মতই গন্তব্যস্থলে নিয়ে যায়। তবে ৫ মিনিট পর পর মেট্রো পরিচালনা করার দাবি জানান তিনি। বিশেষ করে অফিস টাইমে প্রতি ৫ মিনিট পর পর মেট্রো চালু হওয়া দরকার বলে মনে করেন সারোয়ার। আগামী শুক্রবার থেকে অফপিক টাইমে মেট্রোরেলের হেডওয়ে (দুই ট্রেনের মধ্যবর্তী সময়) ১২ মিনিটের জায়গায় ১০ মিনিট করা হবে বলে জানিয়েছে ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল)। এতে ৬০টির বদলে দিনে ৭২টি ট্রেন চলাচল করবে।