মেট্রোরেলে ঢিল: আশপাশের বাড়িওয়ালাদের সতর্কবার্তা

- আপডেট সময়ঃ ১০:০৭:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ মে ২০২৩
- / ১১৬ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের নিরাপত্তার বিষয়ে আশপাশের বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের সচেতন করতে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বাড়িওয়ালা এবং ভাড়াটিয়াদের তথ্য নেওয়া হচ্ছে। মেট্রোরেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ঢিল ছোঁড়া বা কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে ওই এলাকার বাসিন্দাদের। এদিকে মেট্রোরেলে ঢিল ছুড়ে জানালার কাচ ভাঙার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এখনও কেউ শনাক্ত হননি বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, আশপাশের ভবন থেকে মেট্রোরেলে ঢিল কিংবা কোনো কিছু ছোঁড়া বা আশপাশ থেকে কেউ যেন ফানুস না ওড়াতে পারে, সেদিকে রাখার জন্য বাড়িওয়ালাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোনো ভবন থেকে কেউ কোনো ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটালে, সেই ব্যক্তিকে শনাক্ত এবং ভবন মালিকসহ উভয়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। কাফরুল থানা পুলিশ বলছে, শেওড়াপাড়া এবং কাজীপাড়ার মাঝামাঝি পূর্ব পাশের ভবন থেকে যে বা যারা ঢিল ছুড়েছে, তাদের শনাক্ত করতে তদন্ত চলমান রয়েছে। এরইমধ্যে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। কোন ভবন থেকে এবং কে, কোন উদ্দেশ্যে মেট্রোরেলে ঢিল ছুড়েছে, সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। তবে এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। মেট্রোরেলের আশপাশে যেসব ভবন রয়েছে, সেসব ভবনের ভাড়াটিয়াদের ছাদে ওঠার বিষয়ে বাড়িওয়ালাদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ বলছে, মেট্রোরেলে ঢিল ছোড়ার কারণে একটি গ্লাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মূল্য ১০ লাখ টাকা। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। তারা এরইমধ্যে এ বিষয়ে তদন্ত করছে। মেট্রোরেল জনগণের সম্পদ তা রক্ষার দায়িত্ব জনগণেরই। পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি পারভেজ ইসলামবলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একার পক্ষে মেট্রোরেলের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা সম্ভব নয়, যদি না জনগণ সচেতন হয়। কেউ কোনো ধরনের অপতৎপরতায় জড়িত হলে মেট্রোরেলের আইন অনুযায়ী শাস্তি হবে- এ বিষয়টি গণমাধ্যমে আরও বেশি তুলে ধরতে হবে।’ কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, ‘ভবিষ্যতে মেট্রোরেলের আশপাশে কেউ যেন ঘুড়ি কিংবা ফানুস ওড়াতে না পারে, সেইসঙ্গে মেট্রোরেলকে লক্ষ্য করে কেউ যেন ঢিল ছুড়তে না পারে, সে বিষয়ে আশপাশের ভবনগুলোর মালিকদের সঙ্গে আমরা কথা বলছি। এ ছাড়া ভবন মালিকসহ ভাড়াটিয়াদের তথ্য আবারও সংগ্রহ করছি। এরপর এ ধরনের ঘটনা ঘটলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
মেট্রোরেলের আইনে যেসব শাস্তি
১. মেট্রোরেল নির্মাণ, উন্নয়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণসহ অন্য কোনো কর্মকা- সম্পাদনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে, এক বছর কারাদ- বা অনধিক ৫ লাখ টাকা অর্থদ- বা উভয় দ-ে দ-নীয় হবেন। ২. মেট্রোরেলের সংরক্ষিত স্থানে অনুমোদন ছাড়া প্রবেশ করলে পাঁচ বছরের কারাদ- বা অনধিক ৫০ লাখ টাকা অর্থদ- বা উভয় দ-ে দ-িত হবেন। ৩. মেট্রোরেল বা তার যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘিœত হয়- এমন কোনো কাজ করলে পাঁচ বছরের কারাদ- বা অনধিক ৫০ লাখ টাকা অর্থদ- বা উভয় দ-ে দ-িত হওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। ৪. মেট্রোরেলের টিকিট বা পাস জাল করলে ১০ বছরের কারাদ- বা এক কোটি টাকা অর্থদ- বা উভয়দ-ে দন্ডিতের বিধান রাখা হয়েছে। ৫. পরিদর্শককে দায়িত্ব পালনে বাধা,বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দেওয়ার কারণে দুই বছরের কারাদ- অনধিক ১০ লাখ টাকা অর্থদ- বা উভয় দ-ে দ-িতের বিধান রাখা হয়েছে। ৬. টিকিট বা বৈঠক পাস ছাড়া মেট্রোরেলে ভ্রমণ করলে যাতায়াত ভাড়ার ১০ গুণ অর্থদ- করা হবে। অর্থদ- অনাদায় ৬ মাসের কারাদ-ের বিধান রাখা হয়েছে। ৭. অপরাধ সংগঠনের সহায়তা, প্ররোচনা এবং ষড়যন্ত্রের দ- হিসেবে সহায়তাকারী ষড়যন্ত্রকারী বা প্ররোচনাদানকারী এই অপরাধের জন্য নির্ধারিত দ-ে দ-নীয় হবেন। ৮. ফৌজদারি কার্যবিধিতে যা কিছুই থাকুক না কেন, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ বা অনুমোদিত ব্যক্তি লিখিত প্রতিবেদন ছাড়া কোনো আদালত- এই আইন বা বিধির অধীন কোনো মামলা গ্রহণ করবে না। ৯. মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এ আইনের ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৭, ৩৮ ও ৪০ এর অপরাধ হলে (২৯ সালের ৫৯ নং আইনের) তফসিল ভুক্ত করে বিচার করা যাবে।