১০:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫ | ই-পেপার

রাতের আঁধারে রেস্তোরাঁয় বিক্রি হতো মরা ছাগলের মাংস!

  • দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৮:৪৭:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২১
  • ৪৯৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী মহানগরীতে মরা ছাগলের মাংস, মরা জবাই করা ছাগল ও অসুস্থ ছাগলের মাংস সরবরাহ করতো একটি অসাধু চক্র। ওই চক্রের চার সদস্যকে অবশেষে হাতেনাতে আটক করেছে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ। আটকের সময় তাদের কাছ থেকে ১৫০ কেজি মরা ছাগলের মাংস, চারটি মরা জবাই করা ছাগল ও ২৭টি অসুস্থ ছাগল উদ্ধার করা হয়েছে। গত শনিবার গভীর রাতে তারা ধরা পড়ে। পরে গতকাল রোববার সকালে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে- দীর্ঘদিন ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ এলাকা থেকে মরা ছাগলের মাংস ও মরা জবাই করা ছাগল এবং রুগ্ন-অসুস্থ ছাগল কম দামে কিনে নেন তারা। পরে সেগুলো নিয়ে এসে রাজশাহী মহানগরের বিভিন্ন খাবার হোটেল, রেস্তোরাঁ, চাইনিজ রেস্তোরাঁ, বিরিয়ানী হাউজ, কারাগার, হাসপাতাল ও বাজারে সরবরাহ করতো। আটকরা হলেন রাজশাহী মহানগরীর দরগাপাড়া এলাকার মশিউর রহমান আপেল ও ফয়সাল হোসেন এবং তাদের সহযোগী কায়েস ও ফাইসাল। এরমধ্যে আপেল ও ফয়সাল হোসেনকে ভোক্তা অধিদফতরের মাধ্যমে ৮০ হাজার টাকা করে দু’জনকে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা অর্থদ- দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মাংসগুলো মাটিতে পুঁতে ফেলার পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। রাজশাহী ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক হাসান মারুফ জানান, মহানগর ডিবি পুলিশের অভিযানের পর তাদেরকে জানানো হয়। এরপর তিনি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন। এর আগে মরা ছাগলের মাংস এবং মরা জবাই করা ছাগলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর শহিদুল ইসলাম। এ সময় রাজশাহী মহানগর মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমানও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সবার উপস্থিতিতে মরা ছাগলের মাংসগুলো এবং মরা ছাগলগুলো যাচাই-বাছাই শেষে আপেল ও ফায়াসালের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার আরেফিন জুয়েল জানান, গত শনিবার রাতে ডিবি পুলিশের একটি টিম মহানগর এলাকায় বিশেষ অভিযানে ছিল। এ সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের বালিয়ার মোড়ে একটি পিকআপ ভ্যান (ঢাকা মেট্রো-ন-১৬-৫২০৫) থামায়। এ সময় চারজনকে হাতেনাতে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা মাংস সরবরাহ করা সংক্রান্তে কোনো বৈধ কাগজ-পত্র বা কোনো পশু ডাক্তারের উপস্থিতিতে পরীক্ষা করে জবাই করা হয়েছে কিনা এ সংক্রান্তে তারা কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি। পরে ডিবি পুলিশ বস্তা ভর্তি মাংস ও জবাই করা ছাগলগুলো পরীক্ষার জন্য রাজশাহী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের নিয়ে যায়। সেখানে জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ছাগলগুলো মৃত অবস্থায় জবাই করা হয়েছে ও মাংসগুলোও মৃত ছাগলের মাংস এবং জীবিত ছাগলগুলো রুগ্ন-অসুস্থ ও স্বাস্থ্যসম্মত নয় বলে জানান। বিষয়টি জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে অবহিত করা হয়। পরে ভোক্তা অধিদফতরের কর্মকর্তারা গিয়ে আটকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ভাগাড়সহ কোনো স্থানেই ময়লা পোড়ানো যাবে না: পরিবেশ উপদেষ্টা

রাতের আঁধারে রেস্তোরাঁয় বিক্রি হতো মরা ছাগলের মাংস!

আপডেট সময়ঃ ০৮:৪৭:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী মহানগরীতে মরা ছাগলের মাংস, মরা জবাই করা ছাগল ও অসুস্থ ছাগলের মাংস সরবরাহ করতো একটি অসাধু চক্র। ওই চক্রের চার সদস্যকে অবশেষে হাতেনাতে আটক করেছে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ। আটকের সময় তাদের কাছ থেকে ১৫০ কেজি মরা ছাগলের মাংস, চারটি মরা জবাই করা ছাগল ও ২৭টি অসুস্থ ছাগল উদ্ধার করা হয়েছে। গত শনিবার গভীর রাতে তারা ধরা পড়ে। পরে গতকাল রোববার সকালে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে- দীর্ঘদিন ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ এলাকা থেকে মরা ছাগলের মাংস ও মরা জবাই করা ছাগল এবং রুগ্ন-অসুস্থ ছাগল কম দামে কিনে নেন তারা। পরে সেগুলো নিয়ে এসে রাজশাহী মহানগরের বিভিন্ন খাবার হোটেল, রেস্তোরাঁ, চাইনিজ রেস্তোরাঁ, বিরিয়ানী হাউজ, কারাগার, হাসপাতাল ও বাজারে সরবরাহ করতো। আটকরা হলেন রাজশাহী মহানগরীর দরগাপাড়া এলাকার মশিউর রহমান আপেল ও ফয়সাল হোসেন এবং তাদের সহযোগী কায়েস ও ফাইসাল। এরমধ্যে আপেল ও ফয়সাল হোসেনকে ভোক্তা অধিদফতরের মাধ্যমে ৮০ হাজার টাকা করে দু’জনকে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা অর্থদ- দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মাংসগুলো মাটিতে পুঁতে ফেলার পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। রাজশাহী ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক হাসান মারুফ জানান, মহানগর ডিবি পুলিশের অভিযানের পর তাদেরকে জানানো হয়। এরপর তিনি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন। এর আগে মরা ছাগলের মাংস এবং মরা জবাই করা ছাগলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর শহিদুল ইসলাম। এ সময় রাজশাহী মহানগর মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমানও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সবার উপস্থিতিতে মরা ছাগলের মাংসগুলো এবং মরা ছাগলগুলো যাচাই-বাছাই শেষে আপেল ও ফায়াসালের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার আরেফিন জুয়েল জানান, গত শনিবার রাতে ডিবি পুলিশের একটি টিম মহানগর এলাকায় বিশেষ অভিযানে ছিল। এ সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের বালিয়ার মোড়ে একটি পিকআপ ভ্যান (ঢাকা মেট্রো-ন-১৬-৫২০৫) থামায়। এ সময় চারজনকে হাতেনাতে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা মাংস সরবরাহ করা সংক্রান্তে কোনো বৈধ কাগজ-পত্র বা কোনো পশু ডাক্তারের উপস্থিতিতে পরীক্ষা করে জবাই করা হয়েছে কিনা এ সংক্রান্তে তারা কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি। পরে ডিবি পুলিশ বস্তা ভর্তি মাংস ও জবাই করা ছাগলগুলো পরীক্ষার জন্য রাজশাহী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের নিয়ে যায়। সেখানে জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ছাগলগুলো মৃত অবস্থায় জবাই করা হয়েছে ও মাংসগুলোও মৃত ছাগলের মাংস এবং জীবিত ছাগলগুলো রুগ্ন-অসুস্থ ও স্বাস্থ্যসম্মত নয় বলে জানান। বিষয়টি জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে অবহিত করা হয়। পরে ভোক্তা অধিদফতরের কর্মকর্তারা গিয়ে আটকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন।