ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ই-পেপার

রানা প্লাজা ধসের এক দশকে অস্থায়ী বেদিতে ফুল দিয়ে নিহতের স্মরণ

দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৭:২৭:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৩
  • / ১৩৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
সাভারের আলোচিত রানা প্লাজা ধসের এক দশক হয়েছে। ঘটনার দশক পূর্ণ হওয়ায় রোববার সন্ধ্যায় ও আজ সোমবার সকালে রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী বেদিতে ফুল দিয়ে নিহতের স্মরণ করেছে বিভিন্ন শ্রমিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন। এ ছাড়া আহত শ্রমিক ও হতাহতদের পরিবারের সদস্যরাও বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। এ সময় স্মৃতিচারণা করেন আহত শ্রমিক ও স্বজনরা। চোখের জল ধরে রাখতে না পারা আহত শ্রমিক আয়শা বেগম জানান, ভয়াবহ এ ধসে পড়া ভবনের ভিমের নিচে চাপা পড়েছিলেন তিনি। মেরুদ-ের হাড় ভেঙেছিল তার। এখন অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতে পারেন না। কষ্ট হলেও নিহতদের স্মরণে তিনি ফুল দিতে এসেছেন রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী বেদিতে। এর আগে রোববার সন্ধ্যায় রানা প্লাজার অস্থায়ী শহীদ বেদিতে মোমবাতি জালিয়ে নিহতদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানায় তাদের পরিবার, আহত শ্রমিক এবং বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। সংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন (টাফ), ইউনাইটেড ওয়ার্কার্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট, ল্যাম্পপোস্ট, গণমুক্তির গানের দল, রানা প্লাজা ভিকটিম এবং জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট, রানা প্লাজা সারভাইভারস অ্যাসোসিয়েশন, রানা প্লাজা গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি শ্রমিক সংগঠন। পরে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন রানা প্লাজার সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা অবিলম্বে রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার ফাঁসির দাবি জানান। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে শ্রমিকরা কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার পরপরই সাভার বাস স্ট্যান্ডের পাশে রানা প্লাজা নামের বহুতল ভবনটি ধসে পড়ে। এতে এক হাজার ১৭৫ জন শ্রমিক নিহত এবং দুই হাজারেরও বেশি আহত হন। যা বিশ্বের ইতিহাসে তৃতীয় বৃহত্তম শিল্প দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এ ঘটনায় সাধারণ মানুষ, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজ চালায়। ভবনটিতে পোশাক কারখানা, একটি ব্যাংক এবং একাধিক দোকান ছিল। ফাটল থাকায় ভবনটি ব্যবহারে সতর্কবার্তা থাকলেও তা উপেক্ষা করা হয়েছিল। গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, “১০ বছর আগে এই দিনে হাজারের বেশি শ্রমিক ভবনের নিচে চাপা পড়ে মারা যান। এখনও ওই শ্রমিকদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পায়নি। এমনকি তাদের পুনর্বাসনও হয়নি।” ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ও পুর্নবাসন ব্যবস্থা, ঘটনার জন্য দায়ী সবার বিচার, দেশের শ্রম আইন সংস্কার করে শ্রমিক বান্ধব আইন গড়ে তোলা, দেশের সব শিল্প খাতে আহত শ্রমিকদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও সরকারি ভাতার ব্যবস্থা দাবি জানান তিনি। বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, “রানা প্লাজা ধসের ১০ বছর অতিবাহিত হলেও দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করা হয়নি।” আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসার দাবি জানান এ নেতা।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

রানা প্লাজা ধসের এক দশকে অস্থায়ী বেদিতে ফুল দিয়ে নিহতের স্মরণ

আপডেট সময়ঃ ০৭:২৭:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :
সাভারের আলোচিত রানা প্লাজা ধসের এক দশক হয়েছে। ঘটনার দশক পূর্ণ হওয়ায় রোববার সন্ধ্যায় ও আজ সোমবার সকালে রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী বেদিতে ফুল দিয়ে নিহতের স্মরণ করেছে বিভিন্ন শ্রমিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন। এ ছাড়া আহত শ্রমিক ও হতাহতদের পরিবারের সদস্যরাও বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। এ সময় স্মৃতিচারণা করেন আহত শ্রমিক ও স্বজনরা। চোখের জল ধরে রাখতে না পারা আহত শ্রমিক আয়শা বেগম জানান, ভয়াবহ এ ধসে পড়া ভবনের ভিমের নিচে চাপা পড়েছিলেন তিনি। মেরুদ-ের হাড় ভেঙেছিল তার। এখন অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতে পারেন না। কষ্ট হলেও নিহতদের স্মরণে তিনি ফুল দিতে এসেছেন রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী বেদিতে। এর আগে রোববার সন্ধ্যায় রানা প্লাজার অস্থায়ী শহীদ বেদিতে মোমবাতি জালিয়ে নিহতদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানায় তাদের পরিবার, আহত শ্রমিক এবং বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। সংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন (টাফ), ইউনাইটেড ওয়ার্কার্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট, ল্যাম্পপোস্ট, গণমুক্তির গানের দল, রানা প্লাজা ভিকটিম এবং জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট, রানা প্লাজা সারভাইভারস অ্যাসোসিয়েশন, রানা প্লাজা গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি শ্রমিক সংগঠন। পরে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন রানা প্লাজার সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা অবিলম্বে রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার ফাঁসির দাবি জানান। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে শ্রমিকরা কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার পরপরই সাভার বাস স্ট্যান্ডের পাশে রানা প্লাজা নামের বহুতল ভবনটি ধসে পড়ে। এতে এক হাজার ১৭৫ জন শ্রমিক নিহত এবং দুই হাজারেরও বেশি আহত হন। যা বিশ্বের ইতিহাসে তৃতীয় বৃহত্তম শিল্প দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এ ঘটনায় সাধারণ মানুষ, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজ চালায়। ভবনটিতে পোশাক কারখানা, একটি ব্যাংক এবং একাধিক দোকান ছিল। ফাটল থাকায় ভবনটি ব্যবহারে সতর্কবার্তা থাকলেও তা উপেক্ষা করা হয়েছিল। গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, “১০ বছর আগে এই দিনে হাজারের বেশি শ্রমিক ভবনের নিচে চাপা পড়ে মারা যান। এখনও ওই শ্রমিকদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পায়নি। এমনকি তাদের পুনর্বাসনও হয়নি।” ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ও পুর্নবাসন ব্যবস্থা, ঘটনার জন্য দায়ী সবার বিচার, দেশের শ্রম আইন সংস্কার করে শ্রমিক বান্ধব আইন গড়ে তোলা, দেশের সব শিল্প খাতে আহত শ্রমিকদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও সরকারি ভাতার ব্যবস্থা দাবি জানান তিনি। বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, “রানা প্লাজা ধসের ১০ বছর অতিবাহিত হলেও দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করা হয়নি।” আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসার দাবি জানান এ নেতা।