ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ই-পেপার

শাহজালাল বিমানবন্দরে মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টের নির্দেশ

দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৯:১৩:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ এপ্রিল ২০২৩
  • / ১৪৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনকে যৌথভাবে এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে বৃষ্টির সময় মশার জন্মস্থানে গাম্বিং ও কেমিক্যাল প্রয়োগের জন্য বলেছেন আদালত। তবে কেমিক্যাল কতটুকু দিতে হবে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্যে ১৪ জুন দিন ঠিক করেছেন আদালত। ওইদিন পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করা হয়। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ। আজ সোমবার হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ। তিনি নিজেই রিটটি করেন। এ ছাড়া বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সাইফুর রশীদ। আর উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রিমি নাহরীন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। এর আগে ১৩ মার্চ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞের মতামত শুনেন হাইকোর্ট। এজন্য মশাবিশেষজ্ঞ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশারকে ২ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টায় আদালতে আসতে বলা হয়েছিল। একই সঙ্গে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের একই সময়ে আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় নির্ধারিত দিনে আদালতে উপস্থিত হয়ে মতামত তুলে ধরেন তারা। এরপর গতকাল সোমবার আদালত এই আদেশ দিলেন। এর আগে ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ‘শাহজালাল বিমানবন্দর: মশার পরান বধিবে কে?’ এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘ছেঁকে ধরে ঝাঁকে ঝাঁকে মশা’ এই শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয় প্রথম আলো পত্রিকায়। এরপর ওই বছরের ৩ মার্চ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ১২ মার্চ হাইকোর্ট রুল দেন। পরবর্তী সময়ে গত বছরের নভেম্বরে হাইকোর্ট বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও উত্তর সিটি করপোরেশনকে একসঙ্গে বসে বিমানবন্দরে মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। নির্দেশনা বাস্তবায়নের বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় মশার ধরন, উৎপত্তিস্থল ও লার্ভার উপস্থিতি বিষয়ে জরিপ এবং কার্যক্রম জানিয়ে পৃথক প্রতিবেদন দাখিল করেন বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের আইনজীবী। এ বিষয়ে শুনানির শুরুতে আইনজীবী তানভীর আহমেদ বলেন, বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের দাখিল করা জরিপ প্রতিবেদন স্পষ্টভাবে বোঝা যায় না। এ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেতে অধ্যাপক কবিরুল বাশারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি জানান, বিমানবন্দর এলাকায় মশার উপস্থিতি আছে। বিমানবন্দরের মধ্যে একটি জায়গায় ১০ হাজার লার্ভা আছে, যা উদ্বেগজনক। বিমানবন্দরসংলগ্ন সিটি করপোরেশনের এলাকার মধ্যেও লার্ভা আছে। আদালত বলেন, কবে জরিপ করা হয়েছে? তখন তানভীর আহমেদ বলেন, গত ডিসেম্বরে। অবস্থার উন্নতি হলো কি না, তা-ও প্রতিবেদনে উল্লেখ নেই। বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পক্ষে আইনজীবী সাইফুর রশীদ বলেন, উন্নতি আছে। সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আদালত বলেন, তাহলে প্রতিফলন দেখান। পরীক্ষায় আপনি শূন্য পেলেন, তাহলে কীভাবে বুঝবো আপনি খুব খেটে পড়াশোনা করেছেন? তখন সাইফুর রশীদ বলেন, দুই বছর ধরে জরিপ করা হচ্ছে, সুপারিশ অনুসারে কাজ করা হচ্ছে। একপর্যায়ে আদালত বলেন, কোনো ডেভেলপমেন্ট নেই। শুনানির একপর্যায়ে আইনজীবী তানভীর আহমেদ বলেন, বিশেষজ্ঞ হিসেবে অধ্যাপক কবিরুল বাশারের মতামত আদালত চাইলে শুনতে পারেন। আদালত বলেন, তাহলে কোথায় কী সমস্যা আছে, ওনাকে শুনি। তখন সাইফুর রশীদ বলেন, সামনে দুটি অবকাশ আছে। ঈদের (ঈদুল ফিতর) পর হলে ভালো হতো। আদালত বলেন, বৃষ্টির মৌসুম আসছে, তখন সমস্যা বেশি হবে। ঈদ ও রমজানে কি মানুষ বসে থাকে? বৃষ্টি শুরু হলে মশার উপদ্রব বাড়বে।’ পরে আদালত ওই আদেশ দেন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

শাহজালাল বিমানবন্দরে মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টের নির্দেশ

আপডেট সময়ঃ ০৯:১৩:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনকে যৌথভাবে এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে বৃষ্টির সময় মশার জন্মস্থানে গাম্বিং ও কেমিক্যাল প্রয়োগের জন্য বলেছেন আদালত। তবে কেমিক্যাল কতটুকু দিতে হবে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্যে ১৪ জুন দিন ঠিক করেছেন আদালত। ওইদিন পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করা হয়। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ। আজ সোমবার হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ। তিনি নিজেই রিটটি করেন। এ ছাড়া বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সাইফুর রশীদ। আর উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রিমি নাহরীন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। এর আগে ১৩ মার্চ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞের মতামত শুনেন হাইকোর্ট। এজন্য মশাবিশেষজ্ঞ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশারকে ২ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টায় আদালতে আসতে বলা হয়েছিল। একই সঙ্গে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের একই সময়ে আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় নির্ধারিত দিনে আদালতে উপস্থিত হয়ে মতামত তুলে ধরেন তারা। এরপর গতকাল সোমবার আদালত এই আদেশ দিলেন। এর আগে ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ‘শাহজালাল বিমানবন্দর: মশার পরান বধিবে কে?’ এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘ছেঁকে ধরে ঝাঁকে ঝাঁকে মশা’ এই শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয় প্রথম আলো পত্রিকায়। এরপর ওই বছরের ৩ মার্চ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ১২ মার্চ হাইকোর্ট রুল দেন। পরবর্তী সময়ে গত বছরের নভেম্বরে হাইকোর্ট বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও উত্তর সিটি করপোরেশনকে একসঙ্গে বসে বিমানবন্দরে মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। নির্দেশনা বাস্তবায়নের বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় মশার ধরন, উৎপত্তিস্থল ও লার্ভার উপস্থিতি বিষয়ে জরিপ এবং কার্যক্রম জানিয়ে পৃথক প্রতিবেদন দাখিল করেন বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের আইনজীবী। এ বিষয়ে শুনানির শুরুতে আইনজীবী তানভীর আহমেদ বলেন, বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের দাখিল করা জরিপ প্রতিবেদন স্পষ্টভাবে বোঝা যায় না। এ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেতে অধ্যাপক কবিরুল বাশারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি জানান, বিমানবন্দর এলাকায় মশার উপস্থিতি আছে। বিমানবন্দরের মধ্যে একটি জায়গায় ১০ হাজার লার্ভা আছে, যা উদ্বেগজনক। বিমানবন্দরসংলগ্ন সিটি করপোরেশনের এলাকার মধ্যেও লার্ভা আছে। আদালত বলেন, কবে জরিপ করা হয়েছে? তখন তানভীর আহমেদ বলেন, গত ডিসেম্বরে। অবস্থার উন্নতি হলো কি না, তা-ও প্রতিবেদনে উল্লেখ নেই। বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পক্ষে আইনজীবী সাইফুর রশীদ বলেন, উন্নতি আছে। সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আদালত বলেন, তাহলে প্রতিফলন দেখান। পরীক্ষায় আপনি শূন্য পেলেন, তাহলে কীভাবে বুঝবো আপনি খুব খেটে পড়াশোনা করেছেন? তখন সাইফুর রশীদ বলেন, দুই বছর ধরে জরিপ করা হচ্ছে, সুপারিশ অনুসারে কাজ করা হচ্ছে। একপর্যায়ে আদালত বলেন, কোনো ডেভেলপমেন্ট নেই। শুনানির একপর্যায়ে আইনজীবী তানভীর আহমেদ বলেন, বিশেষজ্ঞ হিসেবে অধ্যাপক কবিরুল বাশারের মতামত আদালত চাইলে শুনতে পারেন। আদালত বলেন, তাহলে কোথায় কী সমস্যা আছে, ওনাকে শুনি। তখন সাইফুর রশীদ বলেন, সামনে দুটি অবকাশ আছে। ঈদের (ঈদুল ফিতর) পর হলে ভালো হতো। আদালত বলেন, বৃষ্টির মৌসুম আসছে, তখন সমস্যা বেশি হবে। ঈদ ও রমজানে কি মানুষ বসে থাকে? বৃষ্টি শুরু হলে মশার উপদ্রব বাড়বে।’ পরে আদালত ওই আদেশ দেন।