সচিবালয়ে জনপ্রশাসন সচিবের কক্ষের সামনে পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ

- আপডেট সময়ঃ ০৭:৩২:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ অগাস্ট ২০২৪
- / ১৫১ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সচিবালয়ে পদবঞ্চিত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর কার্যালয় ঘেরাও করেন। আজ বুধবার সকালে সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের লাইব্রেরিতে পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সভা করে পরে সচিবের রুম ঘেরাও করেন। এদিকে সকাল থেকেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের লাইব্রেরিতে একত্র হন পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মচারীরা। এ মন্ত্রণালয়ের পদোন্নতি বঞ্চিত প্রায় ১০০ কর্মচারী একত্র হয়ে জরুরি সভা করেন। তৈরি করেন পদোন্নতি বঞ্চিতদের তালিকা। পরে এ তালিকা নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) রিপন চাকমার দপ্তরে যান তারা। রিপন চাকমাকে না পেয়ে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দেন তারা। পরবর্তীতে আবারও তারা আলোচনায় বসেন। তারপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কক্ষের সামনে স্লোগান দিতে থাকেন। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সচিব এখন পর্যন্ত সচিবালয় প্রবেশ করেননি। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন সচিবের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি সচিবালায়ে আসছি। এরপর বিষয়টি দেখবো। প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগ করার পর থেকে বঞ্চিত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ দাবি জানিয়ে আসছেন। এদিকে, শিক্ষার্থীদের অসহযোগ আন্দোলনের ডাকে সরকার পতনের পর দ্বিতীয় কার্যদিবসে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে যথারীতি অফিস করেন সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গত মঙ্গলবার তাদের মধ্যে আতঙ্ক থাকলেও গতকাল বুধবার সেটি স্বাভাবিক হয়। তবে রাষ্ট্রের সার্বিক পরিস্থিতি এবং দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ কমেনি। দেখা গেছে, গত মঙ্গলবার আতঙ্ক নিয়ে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সচিবালয় ছাড়লেও গতকাল বুধবার যথানিয়মে সচিবালয়ে আসেন। তবে কর্মকর্তাদের একাংশকে (এতদিন পদোন্নতি বঞ্চিত) বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় খ- খ- বৈঠক করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া বেড়েছে গাড়ির সংখ্যাও। তবে দাপ্তরিক কাজে এখনও গতি আসেনি। তবে গতকাল বুধবার সচিবালয়ের নিরাপত্তায় ছিল সেনাবাহিনীর সদস্যরা। প্রবেশের পাঁচটি গেটের মধ্যে তিনটি গেট বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রবেশপথে কোনো পোশাকধারী পুলিশ দেখা যায়নি, তবে সিভিল বেশে কিছু পুলিশ দেখা গেছে। সচিবালয়ে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি দেখা যায়নি। এজন্য এক ও দুই নম্বর গেটের মাঝামাঝি থাকা অপেক্ষা কক্ষ দর্শনার্থী শূন্য দেখা গেছে। সচিবালয়ের লিফটগুলোর সামনেও ভিড় দেখা যায়নি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন শাখা-১ এর কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আজ (গতকাল বুধবার) সবাই যথা সময়েই সচিবালয়ে আসেন। গত মঙ্গলবার গুজবের কারণে সচিবালয় ছেড়ে চলে গেলেও আজ তেমন কোনো বিষয় ছিল না। তবে নতুন কোনো ফাইল না থাকায় কাজ নেই বললেই চলে। সবাই গল্প করে সময় কাটাচ্ছি। আশা করছি আগামী সপ্তাহ থেকে সব কিছু স্বাভাবিক হবে। এছাড়া খাদ্য, বাণিজ্য, অর্থ, স্বাস্থ্য, শ্রম মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সবাই সচিবালয়ে এসেছি। যথারীতি কাজ চলছে। আতঙ্ক কিছুটা কমেছে। তবে দাপ্তরিক কাজে এখনও তেমন গতি আসেনি। আমরা সরকারের জন্য না, রাষ্ট্রের জন্য কাজ করি। তাই ক্ষমতার রদ বদল হলেও আমাদের কিছু যায় আসে না। এখন নতুন করে কোনো মতাদর্শী সরকার আসবে, তাদের ভাবাদর্শ কি হবে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা কি হবে সে সব বিষয় নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় আছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচির বিপরীতে সোমবার সারা দেশে কারফিউ জারি করে সরকার। কিন্তু ছাত্র-জনতা কারফিউ ভঙ্গ করে রাস্তায় নেমে এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দুপুর আড়াইটার দিকে দেশ ছেড়ে চেলে যান।