সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন রিমান্ডে

- আপডেট সময়ঃ ০৭:১১:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / ৭৭ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর আদাবর থানার গার্মেন্টসকর্মী রুবেল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন মো. সানাউল্যাহর আদালত এই আদেশ দেন। এদিন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার ইন্সপেক্টর মো. আবদুল মালেক আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। ফরহাদ হোসেনের পক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর ইস্কাটন এলাকা থেকে ফরহাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৫ আগস্ট রুবেলসহ কয়েকশ ছাত্র-জনতা সকাল ১১টার দিকে আদাবর থানাধীন রিং রোড এলাকায় প্রতিবাদী মিছিল বের করে। এ সময় পুলিশ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, তাঁতীলীগ, কৃষকলীগ, মৎসজীবী লীগের নেতাকর্মীরা গুলি চালায়। এতে রুবেল গুলিবিদ্ধ হয়। নিকটস্থ একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ২২ আগস্ট আদাবর থানায় মামলাটি করেন রুবেলের বাবা রফিকুল ইসলাম। এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ সদস্য ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, নায়ক ফেরদৌস, ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন প্রমুখ। এদিকে সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ক্ষমতায় থেকে ডিসি ও ইউএনওদের নির্দেশ দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীদের ঠিকানা খুঁজে বের করতে। আন্দোলন দমাতে, হত্যা ও গণহত্যারও নির্দেশ দেন তিনি। শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচার বানানোর পেছনে এদের ভূমিকা রয়েছে বলে আদালতকে জানিয়েছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী। শুনানিতে আইনজীবী ওমর ফারুক বলেন, ফরহাদ হোসেনকে আগে রাজনীতিতে দেখিনি, নামও শুনিনি। হাসিনা সরকারের অবৈধ এমপি, পরে মন্ত্রী হন। জেনেছি টাকা দিয়ে মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন, জনপ্রশাসনমন্ত্রী। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তিনি জঘন্য কাজ করেছেন। এক দিন, দুই দিন, তিন দিন এভাবে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। কারণ স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস, প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে আন্দোলনকারীরা বাসায় থাকবে। বাসা থেকে ধরে এনে গুম, হত্যা করতে পারে। ক্ষমতা, মন্ত্রিত্বের লোভ, হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করতে হাসিনাকে তারা স্বৈরাচার বানিয়েছে। আর যেন স্বৈরাচার ফিরে না আসে। গণতান্ত্রিক আবহাওয়ায় মানুষ যেন বাস করতে পারে। তিনি আরও বলেন, তাদের ঘরে কি সন্তান নাই? গুলি করতে বুক, হাত কাঁপলো না। এদের উসকানি ও নির্দেশ ছিল গুলি করার। এদের জনগণের আদালতে, জনগণের সামনে বিচার করা উচিত। এত অপকর্ম করেও এরা হাসে। ৭০০ জনকে গুলি করে হত্যা করেছে। আন্দোলনকারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেয়। তারা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে বিকিয়ে দিয়েছে। উল্লেখযোগ্য যেসব আসামি শাস্তির আওতায় আসবে, তাদের মধ্যে ফরহাদ হোসেন একজন। আরও আছেন- আনিসুল হক, সালমান এফ রহমান, আসাদুজ্জামান খান কামাল, জুনায়েদ আহমেদ পলক। ফরহাদ হোসেনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থণা করছি। অপরদিকে ফরহাদ হোসেনের পক্ষে জসীম উদ্দিন সরকার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। তিনি বলেন, ফরহাদ হোসেন স্বনামধন্য সিটি কলেজের প্রফেসর। সুনামের সঙ্গে, দক্ষতার সঙ্গে মন্ত্রণালয় চালিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। ঘটনাস্থল থেকেও গ্রেপ্তার করা হয়নি। ঘটনার অনেকদিন পরে মামলা হয়েছে। তিনি প্রতিহিংসার শিকার। রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের প্রার্থণা করছি। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।