সুনামগঞ্জে বন্যায় সড়কের ক্ষতি ১৮শ কোটি টাকা

- আপডেট সময়ঃ ০৬:২৬:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জুন ২০২২
- / ৩৩৮ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক :
সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির বেশ উন্নতি হয়েছে। সুরমা নদীর পানি গত কয়েক দিন ধরে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এখনও অনেক সড়ক পানির নিচে ডুবে রয়েছে। বানের পানিতে জেলার প্রধান সড়কগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে অনেক সড়ক। বন্যার পানিতে সড়ক ভেঙে জেলা সদরের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে দোয়ারা বাজার, জামালগঞ্জ, জগন্নাথপুর ও ছাতক উপজেলা। অনেক সড়কের ভাঙা স্থানে সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। ফলে দেখা দিয়েছে চরম দুর্ভোগ। সড়ক ও জনপথ এবং এলজিইডির দাবি অনুযায়ী জেলার প্রায় ৫ হাজার কিলোমিটার সড়কের পুরোটাই বন্যার পানিতে তলিয়ে প্রায় ১৮শ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও অনেক সড়ক এখনও পানির নিচে রয়েছে। সড়ক থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর সড়ক মেরামত করা হবে বলে জানানো হয়েছে। জানা যায়, দ্বিতীয় দফা ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত হয় সুনামগঞ্জ জেলার সকল রাস্তাঘাটসহ ঘরবাড়ি। সারা দেশের সঙ্গে সুনামগঞ্জ জেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল ৫ দিন। একইসঙ্গে জেলা সদরের সঙ্গে সকল উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। শান্তিগঞ্জ ও তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ চালু হলেও এখনও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে জামালগঞ্জ, দোয়ারাবাজার, ছাতক ও জগন্নাথপুর উপজেলার। অনেক সড়ক ভেঙে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তিন লক্ষাধিকেরও বেশি মানুষের। শুধু তাই নয়, অনেক সড়কে হেঁটে চলাচলই কষ্টকর হচ্ছে। লালপুর এলাকার বাসিন্দা মনির মিয়াবলেন, বন্যার পানিতে রাস্তা ঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মানুষের হেঁটে চলাচল করাও কষ্টদায়ক হয়ে পড়েছে। রাধানগর এলাকার বাসিন্দা আমির উদ্দিনবলেন, আমাদের ঘরবাড়ি বন্যা ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এখন যে রাস্তা দিয়ে চলাচল করবো সেটারও সুযোগ নেই। একজন রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতেই সে মরে যাবে। পলাশ এলাকার বাসিন্দা লিলু মিয়াবলেন, ঘর বাড়ি সব কিছু বানের জলে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এখন রাস্তা থেকে পানি কমেছে। পানি কমলে কী হবে, রাস্তা-ঘাটে গাড়ি চালাতে পারছি না। সব রাস্তা ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বাসিন্দা ইমরান মিয়াবলেন, অটোরিকশা চালিয়ে ছেলে-মেয়ের মুখে খাবার তুলে দেই। কিন্তু বন্যার পানি রাস্তাঘাটগুলো এতটা ভেঙেছে যে মানুষ হেঁটেও যেতে পারছে না, যানবাহন কিভাবে চালাব। এলজিইডির সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলমবলেন, বন্যায় সড়কের নজিরবিহীন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ৪৫৭১ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ অন্তত ১৫০০ কোটি টাকা। এখনও অনেক সড়ক পানির নিচে রয়েছে। সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলামবলেন, ৩৫৬ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ১৮৪ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্তত ৩০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।