১২:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫ | ই-পেপার

স্কুল-কলেজে ব্যবস্থাপনা কমিটি বিলুপ্তির দাবি শিক্ষকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক :
শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ, শিক্ষা সার্ভিস কমিশন ও ব্যবস্থাপনা কমিটি বিলুপ্তি করাসহ নয় দফা দাবি জানানো হয়েছে। গতকাল সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দু’টি সংগঠনের পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি (বাকশিস) ও বাংলাদেশ অধ্যক্ষ পরিষদ (বিপিসি) দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সমাজের পেশাগত অধিকারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্ব বিষয়েই পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। শিক্ষকদের জন্যও শুরু হয় নতুন করে ভাবনা। অতীতের যেকোনো সময়ের চাইতে করোনাকালীন শিক্ষাব্যবস্থা এক সংকটময় সময়ে অতিক্রম করছে। শিক্ষাব্যবস্থার বিপর্যস্ত তৈরি হয়েছে। বক্তব্যে আরও বলা হয়েছে, শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার ও মর্যাদার চরমভাবে উপেক্ষিত। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার ৯৫ শতাংশই পরিচালনা করেন বেসরকারি শিক্ষকরা। একটি স্বাধীন দেশের জন্য এ বেসরকারি শিক্ষকতার অবস্থা অত্যন্ত লজ্জাজনক। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পরেও চলমান ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি দু’টি ধারায় বৈষম্য সৃষ্টি করছে। দেশে কোনোক্রমেই এ ধরনের বৈষম্য থাকা উচিত নয়। এসব সমস্যা সমাধানে ৭টি দাবি তুলেছেন তারা। দাবিগুলো হলো-
১. সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের অনুরূপে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন, বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ও অন্যান্য ভাতা দেওয়া।
২. সরকারি কলেজের অনুরূপ পদ্ধতিতে সমযোগ্যতা ও সমঅভিজ্ঞতা সম্পন্ন বেসরকারি কলেজের শিক্ষকদের সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপকের পদে পদোন্নতি, উচ্চতর ডিগ্রির জন্য উচ্চতর বেতন স্কেল দেওয়া। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনুরূপ বেসরকারি শিক্ষাব্যবস্থায় বদলি প্রথা চালু করা।
৩. শিক্ষকদের ন্যায় আনুপাতিক হারে শিক্ষা প্রশাসনের (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে যোগ্যতাসম্পন্ন বেসরকারি শিক্ষকদের সুযোগ দেওয়া ও প্রশিক্ষণ/সেমিনার সিম্পোজিয়াম এবং ওয়ার্কশপে যোগদানের ব্যবস্থা করা।
৪. শিক্ষকদের মর্যাদা ও অধিকার এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কিত ইউনেস্কো ও আইএলও’র সনদ ১৯৬৬ বাস্তবায়ন। শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়নের লক্ষ্যে যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষক নিয়োগের জন্যে স্বতন্ত্র ‘শিক্ষা সার্ভিস কমিশন’ গঠন করা।
৫. মানসম্মত শিক্ষার লক্ষ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনুমোদন দানকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা বোর্ডে নিয়মিতভাবে একাডেমিক পরিদর্শন ব্যবস্থা করা।
৬. বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে গভর্নিংবডি/ম্যানেজিং কমিটি প্রথা বিলুপ্ত করে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার নিয়মনীতি বাতিল করা।
৭. সরকারি কলেজের মতো বেসরকারি কলেজের জনবল কাঠামো প্রবর্তন করে অনার্স-মাস্টার্স কলেজে পাঠদানরত শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করতে হবে। শিক্ষকদেরও পূর্ণাঙ্গ পেনশন চালুসহ নয় দফা দাবি তোলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাকশিস সভাপতি অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান, বাকশিসের মহা-সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) ড. এ কে এম আব্দুল্লাহ, বিপিসির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশে বৈশ্বিক বিনিয়োগের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

স্কুল-কলেজে ব্যবস্থাপনা কমিটি বিলুপ্তির দাবি শিক্ষকদের

আপডেট সময়ঃ ০৮:৫৩:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অক্টোবর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ, শিক্ষা সার্ভিস কমিশন ও ব্যবস্থাপনা কমিটি বিলুপ্তি করাসহ নয় দফা দাবি জানানো হয়েছে। গতকাল সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দু’টি সংগঠনের পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি (বাকশিস) ও বাংলাদেশ অধ্যক্ষ পরিষদ (বিপিসি) দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সমাজের পেশাগত অধিকারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্ব বিষয়েই পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। শিক্ষকদের জন্যও শুরু হয় নতুন করে ভাবনা। অতীতের যেকোনো সময়ের চাইতে করোনাকালীন শিক্ষাব্যবস্থা এক সংকটময় সময়ে অতিক্রম করছে। শিক্ষাব্যবস্থার বিপর্যস্ত তৈরি হয়েছে। বক্তব্যে আরও বলা হয়েছে, শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার ও মর্যাদার চরমভাবে উপেক্ষিত। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার ৯৫ শতাংশই পরিচালনা করেন বেসরকারি শিক্ষকরা। একটি স্বাধীন দেশের জন্য এ বেসরকারি শিক্ষকতার অবস্থা অত্যন্ত লজ্জাজনক। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পরেও চলমান ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি দু’টি ধারায় বৈষম্য সৃষ্টি করছে। দেশে কোনোক্রমেই এ ধরনের বৈষম্য থাকা উচিত নয়। এসব সমস্যা সমাধানে ৭টি দাবি তুলেছেন তারা। দাবিগুলো হলো-
১. সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের অনুরূপে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন, বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ও অন্যান্য ভাতা দেওয়া।
২. সরকারি কলেজের অনুরূপ পদ্ধতিতে সমযোগ্যতা ও সমঅভিজ্ঞতা সম্পন্ন বেসরকারি কলেজের শিক্ষকদের সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপকের পদে পদোন্নতি, উচ্চতর ডিগ্রির জন্য উচ্চতর বেতন স্কেল দেওয়া। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনুরূপ বেসরকারি শিক্ষাব্যবস্থায় বদলি প্রথা চালু করা।
৩. শিক্ষকদের ন্যায় আনুপাতিক হারে শিক্ষা প্রশাসনের (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে যোগ্যতাসম্পন্ন বেসরকারি শিক্ষকদের সুযোগ দেওয়া ও প্রশিক্ষণ/সেমিনার সিম্পোজিয়াম এবং ওয়ার্কশপে যোগদানের ব্যবস্থা করা।
৪. শিক্ষকদের মর্যাদা ও অধিকার এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কিত ইউনেস্কো ও আইএলও’র সনদ ১৯৬৬ বাস্তবায়ন। শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়নের লক্ষ্যে যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষক নিয়োগের জন্যে স্বতন্ত্র ‘শিক্ষা সার্ভিস কমিশন’ গঠন করা।
৫. মানসম্মত শিক্ষার লক্ষ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনুমোদন দানকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা বোর্ডে নিয়মিতভাবে একাডেমিক পরিদর্শন ব্যবস্থা করা।
৬. বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে গভর্নিংবডি/ম্যানেজিং কমিটি প্রথা বিলুপ্ত করে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার নিয়মনীতি বাতিল করা।
৭. সরকারি কলেজের মতো বেসরকারি কলেজের জনবল কাঠামো প্রবর্তন করে অনার্স-মাস্টার্স কলেজে পাঠদানরত শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করতে হবে। শিক্ষকদেরও পূর্ণাঙ্গ পেনশন চালুসহ নয় দফা দাবি তোলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাকশিস সভাপতি অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান, বাকশিসের মহা-সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) ড. এ কে এম আব্দুল্লাহ, বিপিসির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।