হাসিনার মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আজ আপিল করবে প্রসিকিউশন
- আপডেট সময়ঃ ১২:১০:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ২১ বার পড়া হয়েছে
জুলাই গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় একটি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আজ আপিল করবে প্রসিকিউশন।
প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার আমৃত্যু কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আজ আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করবে প্রসিকিউশন। এরপর ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
গত ২৭ নভেম্বর সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর সাজা বাড়াতে আপিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছে প্রসিকিউশন।
ওই দিন তামিম বলেছেন, গত ১৭ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন ট্রাইব্যুনাল-১। এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি পেয়েছি আমরা। এতে একটি অভিযোগে শেখ হাসিনা ও কামালকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরেকটি অভিযোগে দেওয়া হয়েছে মৃত্যুদণ্ড। আমরা রায় পর্যবেক্ষণ করছি। তবে আমৃত্যু কারাদণ্ডের শাস্তি বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড করানোর জন্য আপিল করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যেই এ আপিল করতে যাচ্ছে প্রসিকিউশন।
এর আগে, ১৭ নভেম্বর শেখ হাসিনা ও কামালকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের পাশাপাশি ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে দেশে থাকা তাদের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ রায় ঘোষণা করেন। এর ঠিক ৯ দিন পর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে ট্রাইব্যুনাল। ফলে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে হাসিনা-কামাল ও মামুনকে আপিল করতে হবে।
এ মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। কিন্তু রায়ে দুটি অভিযোগে ছয়টি ঘটনা আনেন ট্রাইব্যুনাল-১। এর মধ্যে অভিযোগ-১ এ তিনটি ঘটনা আনা হয়। এর প্রথমটি ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া। দ্বিতীয়ত ওই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মাকসুদ কামালের সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনে আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলে ফাঁসি দেবেন বলে উসকানি ও আদেশ। এছাড়া অপরাধ সংঘটনে আসামিরা নিজেদের অধীনস্তদের কোনো বাধা দেননি। তৃতীয়ত, এরই ফলশ্রুতিতে রংপুরে আবু সাঈদকে গুলি ছুড়ে হত্যা করে পুলিশ। এসব অপরাধে শেখ হাসিনা ও কামালের আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
দুই নম্বর অভিযোগেও তিনটি ঘটনা আনেন ট্রাইব্যুনাল। এক নম্বর ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপস ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর ফোনালাপ পাওয়া যায়। এসব কথপোকথনে ড্রোনের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের অবস্থান নির্ণয়, ছাত্র-জনতাকে হেলিকপ্টার ও মারণাস্ত্র ব্যবহার করে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। এ অপরাধ সংঘটনে অধীনস্তদের কোনো বাধা দেননি আসামিরা।
যার ফলশ্রুতিতে একই বছরের ৫ আগস্ট চানখারপুলে ছয়জন আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। যা এ অভিযোগে ঘটনা নম্বর দুই। তিন নম্বর ঘটনা ওই দিন তথা ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এসব অপরাধে হাসিনা-কামালের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাদের সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয় । যা জুলাইয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করবে সরকার। এছাড়া উভয় অভিযোগে পাঁচ বছরের সাজা পান মামুন।























