ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ই-পেপার

৭৫ ঘণ্টা পর সম্পূর্ণভাবে নিভল বঙ্গবাজারের আগুন

দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৯:১১:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০২৩
  • / ১২০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
৭৫ ঘণ্টা পর সম্পূর্ণভাবে নির্বাপণ হয়েছে রাজধানীর বঙ্গবাজারের আগুন। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদস্যরা আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় এ মার্কেটের আগুন সম্পূর্ণভাবে নির্বাপণ করে। এ তথ্য নিশ্চিত করেন সংস্থার মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার। সরেজমিনে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের আগুন নির্বাপণের কাজ শেষ করতে দেখা যায়। পরে তারা নিজেদের মালামাল গুছিয়ে চলে যায়। ফায়ার সদস্যরা চলে গেলেও ঘটনাস্থলের কিছুকিছু জায়গা থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। বিষয়টি নিয়ে কথা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা বলেন, এখন আর কোথাও আগুন নেই। তাই আমরা আমাদের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মালামাল গুছিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ধোঁয়া উঠছে ঠিকই, কিন্তু নতুন করে আগুন ধরার সম্ভাবনা নেই। যদি কোথাও আগুন লাগেও আমরা এসে নিভিয়ে যাব। ধোঁয়া ওঠার কারণ জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, পোড়া জায়গাগুলোর উপরে টিন, নিচের দিকে সব কাপড়। টিনের কারণে পানি নিচের দিকে যাচ্ছে না। এসব সরিয়ে না ফেলা পর্যন্ত ধোঁয়া উঠবে। তবে আগুন লাগবে না। গত মঙ্গলবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনা ঘটে। সকাল ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ৪১ ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। পরে আরও সাতটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। সাড়ে ছয় ঘণ্টা চেষ্টায় বেলা ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নেভে। কিন্তু গত তিনদিন পুরোপুরি আগুন নির্বাপণ হয়নি। আগুনে বঙ্গবাজার এলাকার মোট সাতটি মার্কেট পুড়েছে। এর মধ্যে চারটি পুরোপুরি ও তিনটি আংশিক। মার্কেটগুলো হলো- বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেট, বঙ্গ হোমিও কমপ্লেক্স, বঙ্গবাজার মার্কেট, এনেক্সকো টাওয়ার, মহানগর শপিং কমপ্লেক্স, আদর্শ মার্কেট, গুলিস্তান মার্কেট। সেদিন আগুন নেভানোর সময় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ অভিযোগে করা মামলায় বঙ্গবাজারের তিন ব্যবসায়ীর একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডকৃতরা হলেন- শওকত হোসেন (৫৫), ইদ্রিস (৩০) ও খলিল (৩৬)। এর আগে আগুন নেভানোর সময় ‘পুলিশের ওপর হামলা ও কাজে বাধা দেওয়া’র অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গত বৃহস্পতিবার তিন জনের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। তারা হলেন- মো. রাজু, শাওন ও শাহাদাৎ হোসেন। গতকাল শুক্রবার তিন ব্যবসায়ীকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা বংশাল থানার এসআই সমীরন ম-ল। অপর দিকে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাইনুল ইসলাম তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে প্রত্যেকের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বঙ্গবাজারে অগ্নিনির্বাপণের সময় হামলা ও ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে বংশাল থানায় অজ্ঞাতনামা ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহিন আলম। মামলার এজাহারে বলা হয়, ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরে হামলায় সরকারি সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়। অতর্কিত এ হামলায় ভাঙচুর করা হয় ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন মডেলের ১৪টি গাড়ি, মেইন গেটের সেন্ট্রি পোস্ট, প্রশাসনিক ভবন ও সিনিয়র স্টেশন অফিসারের অফিস। হামলায় আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ৩৯ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ টাকা। শুধু তাই নয়, হামলায় সিনিয়র কর্মকর্তাসহ আহত হন ফায়ার সার্ভিসের চার সদস্য। মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করে বলেন, গত ৪ এপ্রিল সকাল ৬টা ১০ মিনিটে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে অগ্নিকা-ের সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে অফিসার ও ফায়ার ফাইটারদের সঙ্গে নিয়ে গাড়ি, পাম্প ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদিসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করি। আগুনের ভয়াবহতা দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী বিভিন্ন স্টেশনের ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট, পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবক টিমের সহায়তায় আগুন নেভানোর কাজ চলছিল। সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে সিদ্দিক বাজারে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে হামলার ঘটনা ঘটে। অজ্ঞাতনামা ২৫০-৩০০ জন হাতে লোহার রড, লাঠিসোঁটা ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। উশৃঙ্খল জনতা একযোগে অফিসে প্রবেশ করে সরকারি কাজে বাধা দেয়। সেসময় তারা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের বিভিন্ন সদস্যকে মারধর শুরু করে। ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম ও পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী জনতাকে থামাতে গেলে তারা তাদেরও হত্যার উদ্দেশ্যে ধাওয়া করে। তারা জীবন রক্ষার্থে দৌড়ে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কার্যালয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেন। এজাহারে আরও বলা হয়, অজ্ঞাতনামা আসামিরা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভেতরে প্রবেশ করে লোহার রড, লাঠি ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে মোট ১৪টি বিভিন্ন মডেলের গাড়ি ব্যাপক ভাঙচুর করে। তারা কইকা ভবন, মেইন গেটের সেন্ট্রি পোস্ট, প্রশাসনিক ভবন ও সিনিয়র স্টেশন অফিসারের অফিস ব্যাপকভাবে ভাঙচুর চালায়। এসময় বাধা দিলে তারা ফায়ার ফাইটার ইসলাম অন্তরকে লোহার রড দিয়ে ডান পায়ে আঘাত করে জখম করে। উপ-পরিচালক বাবুল চক্রবর্তীকে হত্যার উদ্দেশ্যে লাঠি দিয়ে তার মাথায় ও ডান হাতে সজোরে আঘাত করে গুরুতর জখম করেন দুর্বৃত্তরা। চালক ইমন হোসেনকেও লাঠি দিয়ে পিঠে আঘাত করে জখম করা হয়। তারা সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। হামলার পুরো ঘটনা সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে রয়েছে উল্লেখ করে এজাহারে বলা হয়, অজ্ঞাতনামা ২৫০-৩০০ জন আসামি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের তথা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে হামলা ও সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বংশাল থানার এসআই সমীরণ মন্ডল বলেন, যাদের রিমান্ড নেওয়া হয়েছে তারা হকার্স মার্কেটের কোনো ব্যবসায়ী নন। তবে আশপাশের মার্কেটের ব্যবসায়ী।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

৭৫ ঘণ্টা পর সম্পূর্ণভাবে নিভল বঙ্গবাজারের আগুন

আপডেট সময়ঃ ০৯:১১:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :
৭৫ ঘণ্টা পর সম্পূর্ণভাবে নির্বাপণ হয়েছে রাজধানীর বঙ্গবাজারের আগুন। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদস্যরা আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় এ মার্কেটের আগুন সম্পূর্ণভাবে নির্বাপণ করে। এ তথ্য নিশ্চিত করেন সংস্থার মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার। সরেজমিনে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের আগুন নির্বাপণের কাজ শেষ করতে দেখা যায়। পরে তারা নিজেদের মালামাল গুছিয়ে চলে যায়। ফায়ার সদস্যরা চলে গেলেও ঘটনাস্থলের কিছুকিছু জায়গা থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। বিষয়টি নিয়ে কথা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা বলেন, এখন আর কোথাও আগুন নেই। তাই আমরা আমাদের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মালামাল গুছিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ধোঁয়া উঠছে ঠিকই, কিন্তু নতুন করে আগুন ধরার সম্ভাবনা নেই। যদি কোথাও আগুন লাগেও আমরা এসে নিভিয়ে যাব। ধোঁয়া ওঠার কারণ জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, পোড়া জায়গাগুলোর উপরে টিন, নিচের দিকে সব কাপড়। টিনের কারণে পানি নিচের দিকে যাচ্ছে না। এসব সরিয়ে না ফেলা পর্যন্ত ধোঁয়া উঠবে। তবে আগুন লাগবে না। গত মঙ্গলবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনা ঘটে। সকাল ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ৪১ ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। পরে আরও সাতটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। সাড়ে ছয় ঘণ্টা চেষ্টায় বেলা ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নেভে। কিন্তু গত তিনদিন পুরোপুরি আগুন নির্বাপণ হয়নি। আগুনে বঙ্গবাজার এলাকার মোট সাতটি মার্কেট পুড়েছে। এর মধ্যে চারটি পুরোপুরি ও তিনটি আংশিক। মার্কেটগুলো হলো- বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেট, বঙ্গ হোমিও কমপ্লেক্স, বঙ্গবাজার মার্কেট, এনেক্সকো টাওয়ার, মহানগর শপিং কমপ্লেক্স, আদর্শ মার্কেট, গুলিস্তান মার্কেট। সেদিন আগুন নেভানোর সময় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ অভিযোগে করা মামলায় বঙ্গবাজারের তিন ব্যবসায়ীর একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডকৃতরা হলেন- শওকত হোসেন (৫৫), ইদ্রিস (৩০) ও খলিল (৩৬)। এর আগে আগুন নেভানোর সময় ‘পুলিশের ওপর হামলা ও কাজে বাধা দেওয়া’র অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গত বৃহস্পতিবার তিন জনের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। তারা হলেন- মো. রাজু, শাওন ও শাহাদাৎ হোসেন। গতকাল শুক্রবার তিন ব্যবসায়ীকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা বংশাল থানার এসআই সমীরন ম-ল। অপর দিকে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাইনুল ইসলাম তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে প্রত্যেকের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বঙ্গবাজারে অগ্নিনির্বাপণের সময় হামলা ও ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে বংশাল থানায় অজ্ঞাতনামা ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহিন আলম। মামলার এজাহারে বলা হয়, ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরে হামলায় সরকারি সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়। অতর্কিত এ হামলায় ভাঙচুর করা হয় ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন মডেলের ১৪টি গাড়ি, মেইন গেটের সেন্ট্রি পোস্ট, প্রশাসনিক ভবন ও সিনিয়র স্টেশন অফিসারের অফিস। হামলায় আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ৩৯ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ টাকা। শুধু তাই নয়, হামলায় সিনিয়র কর্মকর্তাসহ আহত হন ফায়ার সার্ভিসের চার সদস্য। মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করে বলেন, গত ৪ এপ্রিল সকাল ৬টা ১০ মিনিটে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে অগ্নিকা-ের সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে অফিসার ও ফায়ার ফাইটারদের সঙ্গে নিয়ে গাড়ি, পাম্প ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদিসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করি। আগুনের ভয়াবহতা দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী বিভিন্ন স্টেশনের ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট, পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবক টিমের সহায়তায় আগুন নেভানোর কাজ চলছিল। সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে সিদ্দিক বাজারে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে হামলার ঘটনা ঘটে। অজ্ঞাতনামা ২৫০-৩০০ জন হাতে লোহার রড, লাঠিসোঁটা ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। উশৃঙ্খল জনতা একযোগে অফিসে প্রবেশ করে সরকারি কাজে বাধা দেয়। সেসময় তারা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের বিভিন্ন সদস্যকে মারধর শুরু করে। ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম ও পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী জনতাকে থামাতে গেলে তারা তাদেরও হত্যার উদ্দেশ্যে ধাওয়া করে। তারা জীবন রক্ষার্থে দৌড়ে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কার্যালয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেন। এজাহারে আরও বলা হয়, অজ্ঞাতনামা আসামিরা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভেতরে প্রবেশ করে লোহার রড, লাঠি ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে মোট ১৪টি বিভিন্ন মডেলের গাড়ি ব্যাপক ভাঙচুর করে। তারা কইকা ভবন, মেইন গেটের সেন্ট্রি পোস্ট, প্রশাসনিক ভবন ও সিনিয়র স্টেশন অফিসারের অফিস ব্যাপকভাবে ভাঙচুর চালায়। এসময় বাধা দিলে তারা ফায়ার ফাইটার ইসলাম অন্তরকে লোহার রড দিয়ে ডান পায়ে আঘাত করে জখম করে। উপ-পরিচালক বাবুল চক্রবর্তীকে হত্যার উদ্দেশ্যে লাঠি দিয়ে তার মাথায় ও ডান হাতে সজোরে আঘাত করে গুরুতর জখম করেন দুর্বৃত্তরা। চালক ইমন হোসেনকেও লাঠি দিয়ে পিঠে আঘাত করে জখম করা হয়। তারা সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। হামলার পুরো ঘটনা সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে রয়েছে উল্লেখ করে এজাহারে বলা হয়, অজ্ঞাতনামা ২৫০-৩০০ জন আসামি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের তথা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে হামলা ও সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বংশাল থানার এসআই সমীরণ মন্ডল বলেন, যাদের রিমান্ড নেওয়া হয়েছে তারা হকার্স মার্কেটের কোনো ব্যবসায়ী নন। তবে আশপাশের মার্কেটের ব্যবসায়ী।