নিজস্ব প্রতিবেদক :
গ্রামীণ টেলিকমের চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পক্ষে মামলা করতে এসে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের থেকে সমঝোতা বাবদ ১২ কোটি টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউসুফ আলীর ৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (জব্দ) করা হয়েছে। গতকাল রোববার অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী নিজে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ (গতকাল) সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে দেখেছি আমার ৬টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি গুজব বলে মন্তব্য করেন তিনি। এর আগে, গত ৩০ জুন নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় রিটকারীদের আইনজীবীকে ১২ কোটি টাকার বিনিময়ে সমঝোতার প্রসঙ্গ তোলেন হাইকোর্ট। সেদিন বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেন, আমরা শুনেছি শ্রমিকদের আইনজীবীকে অর্থের বিনিময়ে হাত করে তাদের মামলায় আপোশ করতে বাধ্য করা হয়েছে। আদালতকে ব্যবহার করে অনিয়ম যেন না হয়ে থাকে, যদি সবকিছু আইন অনুযায়ী না হয় তবে বিষয়টি সিরিয়াসলি দেখা হবে। আমি চাই না কোর্ট এবং আইনজীবীর সততা নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠুক। আদালত বিস্ময় প্রকাশ করে আরও বলেন, বাংলাদেশ কেন, উপমহাদেশে এমন কোনও আইনজীবী জন্ম নেয়নি যার ফিস ১২ কোটি টাকা হবে। এ পর্যায়ে আদালত ড. ইউনূসের আইনজীবীকে বলেন, আপনি কত টাকা ফিস নিয়েছেন? তখন আইনজীবী বলেন, আমি ২০ লাখ টাকা নিয়েছি। আদালত বলেন, আপনি তো ২০ লাখ নিয়েছেন, কিন্তু চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের আইনজীবী কীভাবে ১২ কোটি টাকা নেন। এসময় আইনজীবীরা আদালতকে জানান, চাকরিচ্যুত শ্রমিকরা এখন পর্যন্ত ৩৮০ কোটি টাকা পেয়েছেন। বাকি ৮ শ্রমিকের মধ্যে ৪ জন দেশের বাইরে থাকায় তাদের টাকা পরিশোধ করা হয়নি। আর ৪ জন শ্রমিক মারা যাওয়ায় তাদের ওয়ারিশ জটিলতা নিরসন না হওয়ায় অর্থ পরিশোধ সম্ভব হয়নি। পরে হাইকোর্ট চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের মধ্যে কে কত টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন, তার তালিকা দাখিলের নির্দেশ দেন। আদালতে গ্রামীণ টেলিকমের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান। শ্রমিকদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী। প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে গ্রামীণ টেলিকমে শ্রমিক ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে অসন্তোষ চলে আসছিলো। শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (বি-২১৯৪) সিবিএর সঙ্গে আলোচনা না করেই এক নোটিশে ৯৯ কর্মীকে ছাঁটাই করে গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষ। গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আশরাফুল হাসান স্বাক্ষরিত এক নোটিশের মাধ্যমে এ ছাঁটাই করা হয়। পরে ওই নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ৭ ফেব্রুয়ারি নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ টেলিকমের অবসায়ন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষে মোট ১৭৬ জন শ্রমিক রিটে পক্ষভুক্ত হন।
সর্বশেষঃ
-
দৈনিক আইন বার্তা
- আপডেট সময়ঃ ০৭:৪৯:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ জুলাই ২০২২
- ১৪৩ বার পড়া হয়েছে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ