• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ

বুয়েটে ভর্তিতে পদার্থ-রসায়নে ৯৩ নম্বরের শর্ত বাতিলে হাইকোর্টের রুল

Reporter Name / ১২৯ Time View
Update : মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তির জন্য এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় পদার্থবিদ্যা ও রসায়নের প্রতিটিতে অন্তত ৯৩ শতাংশ নম্বর পেতে হবে মর্মে যে শর্ত দেওয়া হয়েছে, তা কেন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য (ভিসি), রেজিস্ট্রার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, ২০২১-২২ সেশনের ভর্তি কমিটির চেয়ারম্যানকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রুল জারি করেন। রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ইউনুস আলী আকন্দ নিজে শুনানি করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল প্রতিকার চাকমা। বিষয়টি নিশ্চিত করেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ইউনুস আলী আকন্দ। এর আগে গত ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তির জন্য এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় পদার্থবিদ্যা ও রসায়নের প্রতিটিতে অন্তত ৯৩ শতাংশ নম্বর পেতে হবে মর্মে যে শর্ত দেওয়া হয়েছে, তার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করা হয়েছিল হাইকোর্টে। রিটে বুয়েটের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ইউনুস আলী আকন্দ এই রিটটি করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন আদালত। আইনজীবী ইউনুছ আলী বলেন, আগের বছরের বিজ্ঞপ্তিতে নম্বর উল্লেখ করে কোনো শর্ত যুক্ত ছিল না। কিন্তু শর্ত দিয়ে এবারই প্রথম শিক্ষার্থীদের ওপর এটি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে এটি বাতিল চেয়ে রিট করা হয়েছে। রিট আবেদনে তিনি গত ১৬ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত বুয়েটের বিজ্ঞাপন স্থগিত করতে হাইকোর্টকে অনুরোধ করেন। সেই সঙ্গে বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় এ বছর মাত্র ২০ হাজার আবেদনকারীকে সুযোগ দেওয়ার বিষয়টিও রিটে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। রিট আবেদনে বলা হয়, বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞাপন অনুযায়ী একজন শিক্ষার্থীকে এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় পদার্থবিদ্যা ও রসায়নে মোট ৪০০ নম্বরের মধ্যে ৩৭২ নম্বর পেতে হবে। এর অর্থ ওই দুই বিষয়ে ৯৩ শতাংশ নম্বর পেতে হবে, যা অযৌক্তিক এবং গ্রেড পয়েন্ট এভারেজের (জিপিএ) সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাই অপ্রীতিকর এ বিজ্ঞাপনটি অবৈধ ঘোষণা করা উচিত। এতে আরও বলা হয়, বুয়েট সাধারণত ভর্তির বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে এই শর্তে যে শিক্ষার্থীদের গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও ইংরেজিতে জিপিএ-৫ পেতে হবে। তবে পদার্থবিদ্যা ও রসায়নে ৯৩ শতাংশ নম্বর পেতে হবে, এমন শর্ত কখনো অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বুয়েটে ভর্তিচ্ছুদের ৯৩ শতাংশ নম্বর পাওয়ার শর্ত সংবিধানের ২৮(৩) ও ৩১ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ২৮(৩) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদে বা জন্মস্থানের কারণে জনসাধারণের কোনো বিনোদন বা বিশ্রামের স্থানে প্রবেশের কিংবা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির বিষয়ে কোনো নাগরিককে কোনোরূপ অক্ষমতা, বাধ্যবাধকতা, বাধা বা শর্তের অধীন করা যাইবে না।’ ৩১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘আইনের আশ্রয়লাভ এবং আইনানুযায়ী ও কেবল আইনানুযায়ী ব্যবহারলাভ যে কোনো স্থানে অবস্থানরত প্রত্যেক নাগরিকের এবং সাময়িকভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং বিশেষত আইনানুযায়ী ব্যতীত এমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না, যাহাতে কোনো ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে।’ অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী বলেন, মাত্র ২০ হাজার পরীক্ষার্থীকে ভর্তি পরীক্ষার অনুমতি দিলে অন্যরাও ভর্তি হতে বঞ্চিত হবে, যা অসাংবিধানিকও বটে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category