গোপন কক্ষে ক্যামেরা লাগালে সেটা গোপন থাকে না: তথ্যমন্ত্রী

- আপডেট সময়ঃ ০৭:০৬:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ অক্টোবর ২০২২
- / ১২২ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক :
ভোটের সময় ভোট কক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগালে সেটা গোপন থাকে না বলে মনে করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। হাছান মাহমুদ বলেন, গোপন কক্ষ, গোপন কক্ষই। সেখানে মানুষ গোপনে ভোট দেবে। কিন্তু সেখানে যদি ক্যামেরা লাগানো হয় তাহলে তো সেটা গোপন থাকে না। এটা সাধারণ মানুষ ও আইনজ্ঞদের অভিমত। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি এটা দেখে ও অন্যান্যের দেখায় তাহলে সেটা ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন। সিসি ক্যামেরা লাগানো যেতে পারে। কিন্তু সেটা গোপন কক্ষে সিসিটিভি নিয়ে অনেক সমালোচনা হচ্ছে। এতে ভোটারের ভোটার হিসেবে অধিকার লঙ্ঘন হয় বলে আইনজ্ঞরা বলছেন। আমি বলছি না আইনজ্ঞরা বলছেন। এটি সবার অভিমত। তিনি আরও বলেন, সিসি ক্যামেরা থাকতে পারে তবে কে কোথায় ভোট দিচ্ছে, সেটা দেখলে কি সেটা গোপন থাকলো? এদিকে, চাকরির মেয়াদ শেষ হাওয়ার আগেই অবসরে পাঠানো সচিবের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ-অনুযোগ নেই বলে জানান ড. হাছান মাহমুদ। চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর আগেই তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেনকে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। রোববার তাকে অবসর দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। স্বাভাবিকভাবে আগামী বছরের (২০২৩ সাল) ২৫ অক্টোবর চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার কথা ছিল মকবুল হোসেনের। সরকারের শেষ সময়ে একজন সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হলো। তিনজন পুলিশ কর্মকর্তাকে অবসর দেওয়া হলো। সরকারবিরোধী কোনো ষড়যন্ত্র হচ্ছে কি না- এ বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে তিনজন পুলিশ কর্মকর্তাকে অবসরে পাঠিয়েছে, সেই বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যাখ্যা করেছেন। উনি (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) বলেছেন তারা কাজ করতেন না। অনেকগুলো কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। আমরা মনে হয় না, সেটা নিয়ে আর ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন আছে। তিনি বলেন, কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যখন এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তখন নিশ্চয়ই কোনো কারণ থাকে। সেই কারণ অবশ্য আমার জানা নেই। আপনার মন্ত্রণালয়ের সচিবকেও অবসরে পাঠানো হয়েছে। সে বিষয়ে তো আপনি জানেন? এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, অন্তর্নিহিত কারণ আমি জানি না। কারণ ছাড়া তো এ ধরনের সিদ্ধান্ত হয় না। কারণ নিশ্চয়ই আছে। সচিব আপনার সিদ্ধান্তের বাইরে কাজ করেছিলেন। এমন অভিযোগের কথা শোনা যাচ্ছে- এ বিষয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এখন কারও ব্যাপারে আমরা অভিযোগ-অনুযোগ নেই। আমি সবার সঙ্গে কাজ করতে পারি। নির্বাচন কমিশন ভোট দেওয়ার গোপন কক্ষে ক্যামেরা লাগিয়ে দূর থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সেই কক্ষের কার্যক্রম দেখছেন। এটা কতটা যুক্তিযুক্ত, এটা আইনের লঙ্ঘন কি না?- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক সমালোচনা দেখেছি। বেশকিছু অনলাইন নিউজ পোর্টালেও নিবন্ধ এবং এটির সমালোচনা করে নিউজ দেখেছি। আজকেও দেখেছি। আপনাদের জন্য একটি প্রিন্ট করেও এনেছি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবাই অভিমত ব্যক্ত করেছেন এবং অনলাইন সংবাদ মাধ্যমসহ অন্যান্য জায়গায় নিউজ হয়েছে। সেখানে তাদের বক্তব্য হচ্ছে, গোপন কক্ষ এবং মানুষ গোপনে ভোট দেবে এটা তার অধিকার। সেখানে যদি ক্যামেরা লাগিয়ে কে কোথায় ভোট দিচ্ছে সেটি দেখা হয়, তাহলে গোপন কক্ষ তো গোপন থাকলো না। সেটি আবার অন্যান্যের দেখানো হয়। আইনজ্ঞরা বলছেন, প্রতেক্যের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা আছে, সেটি ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ। এটি সাধারণ জনগণ ও আইনজ্ঞতাদের অভিমত। তথ্যমন্ত্রী বলেন, (নারায়ণগঞ্জে) এ মেয়র নির্বাচনের আগের নির্বাচনে সম্ভবত শামীম ওসমান কাকে ভোট দিয়েছেন সেটি গণমাধ্যমের সামনে দেখিয়েছিলেন। এরপর নির্বাচন কমিশন তাকে নোটিশ করেছিল যে, আপনি কাকে ভোট দিয়েছেন সেটি গণমাধ্যমে দেখাতে পারেন না। জনসম্মুখে দেখাতে পারেন না। যে নির্বাচন কমিশন নোটিশ দিয়েছিল সেই নির্বাচন কমিশন যদি ক্যামেরা লাগিয়ে নিজে দেখে ও অন্যান্যের দেখায়, সেটি ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন। ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা লাগানো যেতে পারে, গোপন কক্ষে নয়- এটি অন্যান্যের অভিমত। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী- জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেখুন, আমার চেয়ে ভালো বলতে পারেন আইনজ্ঞরা। আমি আইনজীবী নই। আইনজ্ঞদের অভিমত- সেটি ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন। এর সঙ্গে কী আপনি একমত? এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সেটা যদি আইনগতভাবে শুদ্ধ হয়, (তারপরও) সেটা ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন। কারণ গোপন কক্ষে যদি ক্যামেরা লাগিয়ে আপনি দেখেন বা দেখান তাহলে সেটা গোপন কক্ষ থাকে কীভাবে! এটিই সবার অভিমত।