সাড়ে ৪২ কোটি টাকা লুটপাট: প্রিমিয়ার ব্যাংকের ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

- আপডেট সময়ঃ ০৮:১১:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর ২০২২
- / ১৪১ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের গুলশান শাখা থেকে এফডিআর ও বিভিন্ন সঞ্চয় হিসাবের প্রায় সাড়ে ৪২ কোটি টাকা লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ব্যাংকটির সিস্টেম লেনদেনের আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে অর্ধশতাধিক গ্রাহকের ওই টাকা ৬৩৫টি চেক ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা আত্মসাৎ করেছেন। অনুসন্ধানে ঘটনার যাবতীয় প্রমাণ পাওয়ায় প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের শুলশান শাখার ৬ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক সূত্র। গত সোমবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থার সহকারী পরিচালক আজিজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। মামলার আসামিরা হলেন- প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের শুলশান শাখার বরখাস্ত হওয়া এসভিপি অ্যান্ড অপারেশন ম্যানেজার এ এম ওমর খসরু, সাবেক এসইও অ্যান্ড জেনারেল ব্যাংকিং অফিসিয়াল আকবর হোসেন, সাবেক জেএভিপি অ্যান্ড জিবি ইনচার্জ কাজী কাওসার হোসেন, সাবেক জেএভিপি অ্যান্ড ইমপোর্ট ইনচার্জ মো. সাহেদ হোসেন, সাবেক জেএডিপি অ্যান্ড রিলেশনশিপ ম্যানেজার মো. মঞ্জুর হাসান ও সাবেক জুনিয়র অফিসার (বৈদেশিক বাণিজ্য) রুহুল আমিন। আসামিদের বিরুদ্ধে দ-বিধি ৪২০/৪০৯/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার এজাহার বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে সিস্টেম লেনদেনের আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সালের জুন মাস পর্যন্ত সময়ে এফডিআর, এসডিএস ও এসএনডিসহ বিভিন্ন সঞ্চয়ী খাতের মুনাফাসহ প্রায় ৪৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে- প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের গুলশান শাখার বিভিন্ন গ্রাহকের নামে থাকা ৪টি এফডিআরে জমা ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৫ হাজার ১২২ টাকা, ২২টি পে-অর্ডারের ২ কোটি ৭৩ লাখ ৬৭ হাজার ৩১২ টাকা এবং ৫৯ জন গ্রাহকের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব থেকে ৬১৩টি চেক ও একটি ক্রেডিট ভাউচারের ৩৮ কোটি ৩৮ লাখ ৮৩ হাজার ৪৩৫ টাকা। এভাবে মোট ৪২ কোটি ৩৭ লাখ ৮৫ হাজার ৮৬৯ টাকা আত্মসাৎ করেছেন আসামিরা। এতে আরও বলা হয়, ব্যাংকের বিভিন্ন হিসাবের খাত থেকে টাকা বিভিন্ন নামের হিসাবের খাতে স্থানান্তর করে এফডিআর হিসাবে এনে নগদায়ন করা হয়েছে। হিসাব খোলার সময়ে আবেদন ফরম ছাড়াই টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। একটি এফডিআরের বিপরীতে আবেদন ফরম পাওয়া গেলেও কোনো মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ চারটি এফডিআরের হিসাব যাদের নামে খোলা হয়েছে, তাদের কোনো অস্তিত্ব নেই। হিসাব খোলার পরপরই তা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। ৫৯ জন গ্রাহকের হিসাব থেকে ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সময়ে মোট ৬১৩টি চেক ও একটি ক্রেডিট ভাউচারের মোট ৩৮ কোটি ৩৮ লাখ ৮৩ হাজার ৪৩৫ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আসামিরা সিস্টেম লেনদেনের আইডি ও একে অন্যের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেছেন।