০৪:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫ | ই-পেপার

‘মৃত্যুপথযাত্রী কিডনি রোগীর ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অমানবিক’

  • দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৮:২০:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৩
  • ১৭৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে হঠাৎ করে কিডনি ডায়ালাইসিসের ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করা ব্যক্তিদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম। এ ঘটনার প্রতিবাদ বরে ক্যাব জানিয়েছে, বিপুল সংখ্যক মৃত্যুপথযাত্রী কিডনি রোগীর ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অমানবিক এবং প্রতিবাদকারীদের ওপর আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হামলাকে ন্যক্কারজনক। এ ধরনের ঘৃণিত ও জঘন্য সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার এবং হামলার মদতদাতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। আজ রোববার সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘মৃত্যুপথযাত্রী কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস একটি অত্যন্ত মানবিক এবং জীবনরক্ষাকারী মানবিক স্বাস্থ্যসেবা। কিডনি মানবদেহের জন্য একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। কিডনি বিকল হলে শরীর ফোলা, বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, খিঁচুনি, দুর্বলতা, রক্তশূন্যতাসহ নানা উপসর্গ দেখা দেওয়ার পাশাপাশি দ্রুত মৃত্যু হয়। কিন্তু কিডনি রোগীরা নিয়মিত ডায়ালাইসিস করতে না পারলে দ্রুত মারা যান। অনেক দরিদ্র রোগীর পক্ষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিসের মূল্য পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় কিডনি ডায়ালাইসিসের মূল্য এক লাফে ৫-৭ গুণ বৃদ্ধি করা কোনো সুস্থ ও শুভ বৃদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাজ হতে পারে না। বর্তমান সরকার, বিশেষ করে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একজন মানবিক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিশ্বে সমাদৃত হয়েছেন, সেখানে অমানবিকভাবে দরিদ্র কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস ফি এভাবে এক লাফে ৫-৭ গুণ বাড়ানো তার প্রতি অবজ্ঞার শামিল। সরকার অনেক অপ্রয়োজনীয় খাতে ভর্তূকি প্রদান করছে, দরিদ্র কিডনি রোগীদের এই জীবনরক্ষাকারী মানবিক সেবাটি অব্যাহত রাখতে প্রয়োজনে ভর্তূকি অব্যাহত রাখতে বাধা কোথায়?’ নেতৃবৃন্দ ডায়ালাইসিসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদকারীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলাকে ন্যক্কারজনক বলে মন্তব্য করে বলেন, ‘জনগণের করের টাকায় তাদের বেতন-ভাতা হয়। একটি মানবিক দাবি জানানোর কারণে যদি জনতার ওপর আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন চড়াও হয়, তাহলে এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কিছু হতে পারে না। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষ নিঃস্ব হয়ে আছে। সেই অবস্থায় অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার চিকিৎসাসহ ডায়ালিসিসের খরচ জোগাতে গিয়ে একেবারে ফতুর হয়ে গেছে। তাই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস সেবার পরিধি বৃদ্ধির জন্য সরকারকে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানাই।’ একই সঙ্গে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনকে মানবাধিকার ও মানবিক বিষয়ের ওপর সহনশীলতা প্রদর্শনের দাবি জানান। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এ অঞ্চলের পাঁচ কোটি মানুষের উচ্চতর চিকিৎসার ক্ষেত্রে একমাত্র নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এখানে প্রতি পদে পদে অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মকর্তা, তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপেশাদার আচরণ, নার্স ও চিকিৎসকদের দায়িত্ব পালনে অবহেলা, সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতার কথা নানা সময়ে ফলাও করে প্রচারিত হলেও প্রতিকারের দৃষ্ঠান্ত কম। ইতোপূর্বে দুদক কয়েক বার গণশুনানি করেও পরিস্থিতির উন্নতি করতে পারেনি। একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ কাক্সিক্ষত নয়। কম খরচে ডায়ালাইসিসের সুবিধা নিশ্চিতসহ রোগীদের প্রতি মানবিক আচরণ ও সত্যিকারের মানবিক সেবা নিশ্চিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানাচ্ছি আমরা।’ বিবৃতিদাতারা হলেন- ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, সহ-সভাপতি সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ আবদুল মান্নান প্রমুখ।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ভাগাড়সহ কোনো স্থানেই ময়লা পোড়ানো যাবে না: পরিবেশ উপদেষ্টা

‘মৃত্যুপথযাত্রী কিডনি রোগীর ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অমানবিক’

আপডেট সময়ঃ ০৮:২০:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে হঠাৎ করে কিডনি ডায়ালাইসিসের ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করা ব্যক্তিদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম। এ ঘটনার প্রতিবাদ বরে ক্যাব জানিয়েছে, বিপুল সংখ্যক মৃত্যুপথযাত্রী কিডনি রোগীর ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অমানবিক এবং প্রতিবাদকারীদের ওপর আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হামলাকে ন্যক্কারজনক। এ ধরনের ঘৃণিত ও জঘন্য সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার এবং হামলার মদতদাতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। আজ রোববার সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘মৃত্যুপথযাত্রী কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস একটি অত্যন্ত মানবিক এবং জীবনরক্ষাকারী মানবিক স্বাস্থ্যসেবা। কিডনি মানবদেহের জন্য একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। কিডনি বিকল হলে শরীর ফোলা, বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, খিঁচুনি, দুর্বলতা, রক্তশূন্যতাসহ নানা উপসর্গ দেখা দেওয়ার পাশাপাশি দ্রুত মৃত্যু হয়। কিন্তু কিডনি রোগীরা নিয়মিত ডায়ালাইসিস করতে না পারলে দ্রুত মারা যান। অনেক দরিদ্র রোগীর পক্ষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিসের মূল্য পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় কিডনি ডায়ালাইসিসের মূল্য এক লাফে ৫-৭ গুণ বৃদ্ধি করা কোনো সুস্থ ও শুভ বৃদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাজ হতে পারে না। বর্তমান সরকার, বিশেষ করে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একজন মানবিক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিশ্বে সমাদৃত হয়েছেন, সেখানে অমানবিকভাবে দরিদ্র কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস ফি এভাবে এক লাফে ৫-৭ গুণ বাড়ানো তার প্রতি অবজ্ঞার শামিল। সরকার অনেক অপ্রয়োজনীয় খাতে ভর্তূকি প্রদান করছে, দরিদ্র কিডনি রোগীদের এই জীবনরক্ষাকারী মানবিক সেবাটি অব্যাহত রাখতে প্রয়োজনে ভর্তূকি অব্যাহত রাখতে বাধা কোথায়?’ নেতৃবৃন্দ ডায়ালাইসিসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদকারীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলাকে ন্যক্কারজনক বলে মন্তব্য করে বলেন, ‘জনগণের করের টাকায় তাদের বেতন-ভাতা হয়। একটি মানবিক দাবি জানানোর কারণে যদি জনতার ওপর আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন চড়াও হয়, তাহলে এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কিছু হতে পারে না। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষ নিঃস্ব হয়ে আছে। সেই অবস্থায় অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার চিকিৎসাসহ ডায়ালিসিসের খরচ জোগাতে গিয়ে একেবারে ফতুর হয়ে গেছে। তাই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস সেবার পরিধি বৃদ্ধির জন্য সরকারকে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানাই।’ একই সঙ্গে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনকে মানবাধিকার ও মানবিক বিষয়ের ওপর সহনশীলতা প্রদর্শনের দাবি জানান। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এ অঞ্চলের পাঁচ কোটি মানুষের উচ্চতর চিকিৎসার ক্ষেত্রে একমাত্র নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এখানে প্রতি পদে পদে অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মকর্তা, তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপেশাদার আচরণ, নার্স ও চিকিৎসকদের দায়িত্ব পালনে অবহেলা, সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতার কথা নানা সময়ে ফলাও করে প্রচারিত হলেও প্রতিকারের দৃষ্ঠান্ত কম। ইতোপূর্বে দুদক কয়েক বার গণশুনানি করেও পরিস্থিতির উন্নতি করতে পারেনি। একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ কাক্সিক্ষত নয়। কম খরচে ডায়ালাইসিসের সুবিধা নিশ্চিতসহ রোগীদের প্রতি মানবিক আচরণ ও সত্যিকারের মানবিক সেবা নিশ্চিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানাচ্ছি আমরা।’ বিবৃতিদাতারা হলেন- ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, সহ-সভাপতি সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ আবদুল মান্নান প্রমুখ।