• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪৮ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ
থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কৃত্রিম বৃষ্টিতে শিশু-কিশোরদের সঙ্গে ভিজলেন মেয়র আতিক বিএনপির ইতিহাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই: কাদের পুঁজিবাজারে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার ৩ বিদেশি ঋণের বেশিরভাগই সুদাসল পরিশোধে ব্যয় হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে সুসংহত করতে হবে: ধর্মমন্ত্রী ঢাকার ১০ থানায় কিশোর গ্যাং বেশি: ডিএমপি কমিশনার দিনে ১০-১২ বার লোডশেডিং, গরমে অতিষ্ঠ নীলফামারীর মানুষ মালয়েশিয়া উচ্চশিক্ষার জন্য ভালো গন্তব্য: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

বড় জয়ে সিরিজ বাংলাদেশের

Reporter Name / ১০৪ Time View
Update : বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক :
কী নাম দেওয়া যায়, সাইক্লোন, টর্নেডো নাকি টাইফুন আইরিশ বোলাররা বলতে পারেন, ‘নাম যেটাই হোক, তা-ব তো একই!’ চট্টলার ২২ গজে লিটন কুমার দাস ও রনি তালুকদার ব্যাট হাতে যা করলেন, সেটিকে আসলে বলা যায় তা-বলীলা। সেই বিধ্বস্ত জনপদে পরে দাপটে ছড়ি ঘোরালেন সাকিব আল হাসানও। প্রথমে ব্যাটিংয়ে, এরপর বোলিংয়ে। সব মিলিয়ে পর্যদুস্ত আয়ারল্যান্ড, একগাদা রেকর্ডের ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বুধবার আয়ারল্যান্ডকে ৭৭ রানে হারিয়ে প্রত্যাশিতভাবেই এক ম্যাচ বাকি রেখে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে বুধবার টসের পরই নামে বৃষ্টি। খেলা নেমে আসে ১৭ ওভারে। খেলা শুরু হতেই শুরু হয় লিটন ও রনির ঝড়। চার-ছক্কার মালা সাজিয়ে উদ্বোধনী জুটির রেকর্ড গড়েন দুজন। বাংলাদেশ তোলে ৩ উইকেটে ২০২ রান। রান তাড়ায় লড়াই জমাতেই পারেনি আইরিশরা। ১৭ ওভারে করতে পারে তারা ১২৫। লিটন-রনির জুটিতে ১২৪ রান আসে ¯্রফে ৫৬ বলে। বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে যা সেরা উদ্বোধনী জুটি। দেশের হয়ে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়ে লিটন শেষ পর্যন্ত আউট হন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে ৪১ বলে ৮৩ রানে। আগের ম্যাচে দারুণ ফিফটিতে ম্যাচের সেরা হওয়া রনি এবার ২৩ বলে করেন ৪৪। সেই ধারা ধরে রেখে তিনে নেমে ২৪ বলে ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন সাকিব। ব্যাটিং সাফল্যের রেশ নিয়ে জ¦লে ওঠেন তিনি বল হাতেও। নিজের প্রথম বলে উইকেট নিয়ে শুরু, ৪ ওভারে ২২ রানে নেন ৫ উইকেট। এই পরিক্রমায় টিম সাউদিকে ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে উইকেট শিকারের শীর্ষে উঠে যান তিনি। আরও বেশ কিছু অর্জনে নিজেকে রাঙিয়ে তোলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ম্যাচের সেরাও তিনিই। গ্যারেথ ডেল্যানির লেগ স্পিন দিয়ে ম্যাচ শুরু করে আয়ারল্যান্ড। প্রথম ওভারে আসেনি কোনো বাউন্ডারি। পরের ওভারে মার্ক অ্যাডায়ারকে বাউন্ডারিতে পাঠান রনি-লিটন দুজনই। সেখান থেকে যে রান উৎসব শুরু হলো, আর থামাথামি নেই। চতুর্থ ওভারে অবশ্য বড় একটি সুযোগ পেয়েছিল আয়ারল্যান্ড। অ্যাডারের বলে পুল শটে ক্যাচ দিয়েছিলেন লিটন। কিন্তু সীমানায় জর্জ ডকরেলের হাত ফসকে উল্টো হয়ে যায় ছক্কা। ১৬ রানে জীবন পেয়ে লিটন পরের দুই বলে বাউন্ডারিতে দলকে পৌঁছে দেন পঞ্চাশে। টি-টোয়েন্টিতে যা বাংলাদেশের দ্রুততম দলীয় ফিফটি (২১ বলে)। এরপর লিটনের নিজের রেকর্ডের পালা। ফিফটি ছুঁতে তার লাগে ¯্রফে ১৮ বল। অতীত হয়ে যায় ২০০৭ বিশ্বকাপে মোহাম্মদ আশরাফুলের ২০ বলে ফিফটির রেকর্ড। আরেকপ্রান্তে রনির ব্যাটও ছিল উত্তাল। নবম ওভার শেষে তার রান ছিল ২২ বলে ৪৪, মানে স্ট্রাইক রেট ২০০। তারপরও তাকে সেভাবে নজরে পড়ছিল না, লিটনের স্ট্রাইক রেট যে তখন প্রায় আড়াইশ! ৪৩ বলে আসে দলের শতরান, এই সংস্করণে এটিও বাংলাদেশের রেকর্ড। শেষ পর্যন্ত রনির বিদায়ে থামে রেকর্ড গড়া জুটি। লেগ স্পিনার বেন হোয়াইটকে ছক্কার চেষ্টায় সীমানায় ধরা পড়েন তিনি। সাকিব তিনে নেমে শুরু করেন প্রথম বলেই বাউন্ডারিতে। লিটনের সেঞ্চুরিকে তখন মনে হচ্ছিল ¯্রফে সময়ের ব্যাপার। কিন্তু সেই মাইলফলক তার ধরা দেয়নি। দশম ওভারে আঁটসাঁট বোলিংয়ে বাউন্ডারি দেননি হ্যারি টেক্টর। পরের ওভারে হোয়াইটও প্রথম ৫ বলে দেননি কোনো বাউন্ডারি। লিটনের মনোভাব বুঝেই হয়তো ওভারের শেষ বলটি অনেক বাইরে করেন হোয়াইট, টার্ন করে যা যাচ্ছিল আরও বাইরে। অস্থির হয়ে ওঠা লিটন সেই বলকে তাড়া করতে গিয়ে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। থামে তার ১০ চার ও ৩ ছক্কার ইনিংস। লিটন বিদায় নিলেও ঝড় থামেনি। তৃতীয় উইকেটে লিটন ও তাওহিদ হৃদয় গড়েন ২৯ বলে ৬১ রানের জুটি। ১৩ বলে ২৪ রান করে হৃদয় বিদায় নেয় ইনিংস শেষের একটু আগে। অপরাজিত রয়ে যান সাকিব। প্রথমবারের মতো টানা দুই টি-টোয়েন্টিতে দুইশ স্পর্শ করে বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে তারা করেছিল ২০৭। ওই রান তাড়া করা কঠিন হলেও এমন ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে অসম্ভব ছিল না। আইরিশরা নানা সময়েই বড় রান তোলার সামর্থ্য আগে দেখিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। কিন্তু ইনিংসের শুরুতেই টালমাটাল তাদের আশা। প্রথম বলেই আউট অধিনায়ক পল স্টার্লিং! তাসকিন আহমেদের আউট সুইঙ্গারে উইকেটের পেছনে দুর্দান্ত ডাইভিং ক্যাচ নেন লিটন। পরের ওভারেই আরেকটি ধাক্কা। এবার সাকিবের বলে সুইপ করতে গিয়ে আউট লর্ক্যান টাকার। তৃতীয় ওভারে নাসুম আহমেদকে টানা দুই ছক্কায় পাল্টা আক্রমণের ইঙ্গিত দেন টেক্টর। কিন্তু সাকিবের কোনো জবাব তাদের জানা ছিল না। রস অ্যাডায়ারকে বোল্ড করে দেন তিনি আর্ম ডেলিভারিতে। ডেল্যানি ক্রিজে গিয়ে একটি ছক্কার পর আউট হয়ে যান ওই ওভারেই। শেষ নয় ওখানেই। পরের ওভারেও সাকিব ধরেন জোড়া শিকার। ডকরেল ও টেক্টরকে ফিরিয়ে পূর্ণ করেন ৫ উইকেট। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যা তার দ্বিতীয়। একাধিক ৫ উইকেট আছে এই সংস্করণে আরও ১১ জনের। তবে অধিনায়ক হিসেবে সাকিবই প্রথম। ম্যাচে ৪ বা ততোধিক উইকেট পেলেন সাকিব সপ্তমবার। এখানে তিনিই সবার ওপরে। ৪৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে আয়ারল্যান্ডের ইনিংস তখন একরকম ধ্বংসস্তুপ। সেখানে দাঁড়িয়ে লড়াই করেন কার্টিস ক্যাম্পার। ¯্রােতের বিপরীতে খেলে ৩টি করে চার-ছক্কায় ফিফটি করেন তিনি ২৯ বলে। পরের বলেই দারুণ ইয়র্কারে তার বেলস উড়িয়ে দেন তাসকিন। ক্যাম্পারের সঙ্গে শেষ দিকে গ্রাহাম হিউমের ১৭ বলে ২০ রানের ইনিংস বাংলাদেশকে পেতে দেয়নি রেকর্ড ব্যবধানের জয়। তবে তাতে আপত্তি খুব একটা থাকার কথা নয় সাকিবদের। টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার টানা পাঁচ ম্যাচ জিতল বাংলাদেশ। আগের সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় এসেছি ৩-০তে। এবার একই ব্যবধানে আয়ারল্যান্ডকে হারানোর অপেক্ষা। সিরিজের শেষ ম্যাচটি শুক্রবার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ১৭ ওভারে ২০২/৩ (লিটন ৮৩, রনি ৪৪, সাকিব ৩৮*, হৃদয় ২৪, শান্ত ২*; ডেল্যানি ২-০-২৪-০, মার্ক অ্যাডায়ার ৪-০-৫২-১, হিউম ৩-০-৪৯-০, হ্যান্ড ১-০-১৯-০, হোয়াইট ৪-০-২৮-২, টেক্টর ২-০-১৭-০, ক্যাম্পার ১-০-১০-০)
আয়ারল্যান্ড: ১৭ ওভারে ১২৫/৯ (স্টার্লিং ০, অ্যাডায়ার ৬, টাকার ৫, টেক্টর ২২, ডেল্যানি ৬, ডকরেল ২, ক্যাম্পার ৫০, অ্যাডায়ার ৬, হ্যান্ড ২, হিউম ২০*, হোয়াইট ২*; তাসকিন ৪-০-২৭-৩, সাকিব ৪-০-২২-৫, নাসুম ৩-০-৩৭-০, মিরাজ ১-০-৯-০, হাসান ২-০-৬-১, মুস্তাফিজ ৩-০-২১-০)
ফল: বাংলাদেশ ৭৭ রানে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ২-০তে এগিয়ে
ম্যান অব দা ম্যাচ: সাকিব আল হাসান


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category