জামিনে থাকা শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার: হাইকোর্টে ২ পুলিশ কর্মকর্তার ক্ষমা প্রার্থনা

- আপডেট সময়ঃ ০৮:০৪:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ জুন ২০২৩
- / ১৭৪ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক :
উচ্চ আদালত থেকে জামিনে থাকার পরও কলেজ শিক্ষার্থী মো. আশরাফুল হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় পটুয়াখালী সদর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান ও এএসআই মিজানুর রহমান হাইকোর্টের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। আজ রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে হাজির হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তারা। এর আগে পটুয়াখালী সদর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান ও এএসআই মিজানুর রহমান এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হাইকোর্টে হাজির হন। উচ্চ আদালত থেকে জামিনে থাকার পরও কলেজ শিক্ষার্থী মো. আশরাফুল হাওলাদারকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় পটুয়াখালী সদর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান ও এএসআই মিজানুর রহমানকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল রোববার সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে বলা হয়। একই সঙ্গে জামিনে থাকা সত্ত্বেও উদ্দেশ্যমূলক গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। আদালত আদেশে বলেছেন, মো. আশরাফুল হাওলাদারকে গ্রেপ্তারে পুলিশ সদস্যের আচরণ বা প্রক্রিয়া আইন পরিপন্থি। একই সঙ্গে তা আমাদের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনারও পরিপন্থি। আমাদের আইনের মীমাংসিত প্রস্তাব যে, প্রাসঙ্গিক আইন অনুসরণ না করে নাগরিক অধিকার বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। আদালত আরও বলেন, অভিযুক্ত কাউকে গ্রেপ্তার করার আগে প্রথমে আইনি বিষয় নিয়ে ভাবতে হয় একজন পুলিশ কর্মকর্তা। এখানে আসামি ফৌজদারি বিভিন্ন মামলায় উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিনে রয়েছেন। আইনজীবী উচ্চ আদালতের জামিনের বিষয়ে আসামিকে সার্টিফিকেট দিয়েছেন। ওই মামলায় মনে হচ্ছে এএসআই মিজানুর রহমান আমাদের সর্বোচ্চ আদালতের গাইডলাইন এবং আইনকে অবহেলা করেছেন। যার ফলে ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার কার্যকারিতা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। আমরা মনে করি পটুয়াখালী সদর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান ও এএসআই মিজানুর রহমান এ বিষয়ে কারণ ব্যাখ্যা করবেন। গত ২০ মে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘জামিন নেওয়া শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন ২১ মে আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী আলী আহসান মোল্লা। এরপর তাদের তলব করেন আদালত। প্রতিবেদনে বলা হয়, পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেওয়া কলেজ শিক্ষার্থী মো. আশরাফুল হাওলাদারকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। এ সময় পুলিশকে হাইকোর্টের জামিনের কপি দেখালে তা আমলে নেয়নি বলে দাবি আসামির পরিবারের। পরিবারের অভিযোগ, গ্রেপ্তারের পর পুলিশ মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। তা দিতে না পারায় পুলিশি ক্ষমতার বলে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। যদিও হাইকোর্টের জামিননামা দেখে শুক্রবার দুপুরে আসামিকে ছেড়ে দিয়েছেন পটুয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. জামাল হোসেন। আশরাফুল হাওলাদার পটুয়াখালী সদর উপজেলার মরিচবুনিয়া ইউনিয়নের বাজারঘোনা গ্রামের আবদুল লতিফ হাওলাদারে ছেলে। এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতি। আশরাফুলের চাচা রাজা মিয়া বলেন, সদর থানা পুলিশের এএসআই মিজানুর রহমান আশরাফুলকে গ্রেপ্তার করেন। আশরাফুলের পরিবার ওই রাতে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী আলী আহসান মোল্লার সই করা প্রত্যয়নপত্র ও জামিননামার অনলাইন কপি দেখায় পুলিশকে।