পশুবাহী ট্রাক থামিয়ে চাঁদাবাজি করলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার

- আপডেট সময়ঃ ১১:৪২:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ জুন ২০২৩
- / ১৫৪ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক :
কোরবানির পশুবাহী কোনো ট্রাক থামিয়ে চাঁদাবাজি করা যাবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি। আজ বুধবার ডিএমপি সদরদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাটের নিরাপত্তা, মানি এসকর্ট, জালনোট শনাক্তকরণ, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিশেষ এ সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ডিএমপি কমিশনার বলেন, জনদুর্ভোগ এড়াতে হাটের চৌহদ্দির বাইরে কোনো গরু রাখা যাবে না। রাস্তায় গরু রাখা যাবে না। আগামী ২৫ জুনের আগে কোনো গরু হাটে তোলা যাবে না। ইজারাদারদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পশুবাহী কোনো ট্রাক থেকে কোথাও গরু নামাতে বাধ্য করা যাবে না। হাটে নেওয়ার জন্য গরু নিয়ে টানাটানি করা যাবে না। ব্যবসায়ীকে তার পছন্দমতো হাটে গরু নিয়ে যেতে দিতে হবে। পুলিশি সহায়তা পেতে কোন হাটে গরু নিয়ে যাবে সেটা লিখে ট্রাকের সামনে ব্যানার টানিয়ে দেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের পরামর্শ প্রদান করেন কমিশনার। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের পশু বিক্রির টাকা পরিবহনে ডিএমপির এসকর্ট ব্যবস্থা থাকবে। টাকা পরিবহনে পুলিশ সর্বাত্মক নিরাপত্তা দেবে। পুরো পশুর হাট ও গরু ব্যবসায়ীদের খাবার হোটেলগুলো সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনার জন্য ডিএমপির পক্ষ থেকে ইজাদারদের পরামর্শ প্রদান করা হয়। এবার ঢাকা মহানগরীতে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে মোট ২১টি পশুর হাট বসবে। সভায় পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সড়ক, রেল ও নৌ-যান চলাচল এবং যাত্রীদের সুবিধা-অসুবিধা মনিটরিংসহ সার্বিক নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়েও আলোচনা করা হয়। ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থা, বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, র্যাব, নৌ-পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, এপিবিএন, ফায়ার সার্ভিস, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সেবাদানকারী সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও মহানগর এলাকার পশুরহাটের ইজারাদাররা সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে গতকাল বুধবার ডিবি কম্পাউন্ডে আয়োজিত ডিবি-সিটিটিসির গ্র্যান্ড রোলকলে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, গত ১০-১২ বছর ধরে বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ অবস্থায় আছে, বড় ধরনের কোনো সংকট হয়নি। তবে সামনে অনেক বড় সংকট আসতে পারে। আর তেমন কোনো সংকট এলে তা মোকাবিলা করতে পোশাকধারী পুলিশের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। ডিএমপি কমিশনার বলেন, দেশের স্বাধীনতার জন্য রাজারবাগের পবিত্র মাটি থেকে প্রথম বুলেট নিক্ষেপ করেছিল বাংলাদেশ পুলিশ। এদেশে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ কখনো মাথাচাড়া দিতে পারেনি। ভবিষ্যতেও দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় যে কোনো অপশক্তিকে অতীতের মতোই কঠোর হস্তে দমন করবে পুলিশ। তিনি বলেন, তবে আইনের বাইরে গিয়ে কোনো কাজ করা যাবে না। কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে এ ধরনের কোনো অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডিবি আর সিটিটিসি ডিএমপি কমিশনারের দুটি শক্ত হাত উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনবল, দক্ষতা ও সক্ষমতার দিক দিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পুলিশ ইউনিট। যা কোনো পুলিশ ইউনিট করতে পারে না ডিএমপির ডিবি ও সিটিটিসি তা করে মানুষের আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকার কোনো নাগরিক সমস্যায় পড়লে তা ডিবি পুলিশকে দিয়ে তদন্ত করাতে চায়। কারণ, তারা জানে যে কোনো চাঞ্চল্যকর ঘটনা, খুন বা অন্য কোনো ঘটনা ঘটলেও অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে আসামি দেশে বা বিদেশে যেখানেই থাক তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে ডিবি পুলিশ। খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, সারাদেশে যখন জঙ্গি হামলার একটা ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল তখন ডিএমপির সিটিটিসি শুধু ঢাকা মহানগর নয়, সারাদেশে যেখানেই জঙ্গি তৎপরতার তথ্য পেয়েছে সেখানেই ছুটে গিয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিশ্ববাসীর প্রশংসা কুড়িয়েছে। এখনো আমেরিকা, জার্মানি বা ফ্রান্সের মতো উন্নত দেশগুলোতে শপিংমল বা স্কুল-কলেজে জঙ্গি হামলা হয়। কিন্তু বাংলাদেশ পুলিশ এগুলো নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। এসময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান, ডিবি-সিটির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার, উপ-পুলিশ কমিশনারসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।